ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জমা দেয়া প্রসপেক্টাসে অসঙ্গতি

বিবিএস কেবলের আইপিও আবেদন শুরু ২৩ মে

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ৮ মে ২০১৭

বিবিএস কেবলের আইপিও আবেদন শুরু ২৩ মে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ২৩ মে থেকে শুরু হচ্ছে বিবিএস কেবলের আইপিও’র চাঁদা গ্রহণ। বাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে যাওয়া কোম্পানিটির আর্থিক হিসাবে বেশকিছু অসঙ্গতি দেখা গেছে। বিশেষ করে কোম্পানিটির ক্যাশ ফ্লো (নগদ প্রবাহ) ও শেয়ারপ্রতি মুনাফার (ইপিএস) হিসাবে কিছুটা গরমিল রয়েছে। কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া তথ্যকণিকা বা প্রসপেক্টাসেও এসব বিষয়ে পৃষ্ঠাভেদে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গেছে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) অনুমোদন পাওয়ার জন্য বিবিএস কেবলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যে সংশোধিত প্রসপেক্টাস জমা দেয়া হয়েছে তা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে বেনকো ফিন্যান্স এ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, যারা এ প্রসপেক্টাস প্রস্তুত করেছে। সংশোধিত প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, ৫৯ পৃষ্ঠায় বিগত পাঁচ বছরের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইনকাম স্টেটমেন্টে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) গণনায় বিএএস-৩৩ অনুযায়ী শেয়ার ওয়েটেড করে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ইপিএস হিসাব করা হয়েছে। কিন্তু ২০১২ সালে ওয়েটেড না করে হিসাবমান লঙ্ঘন করা হয়েছে। ফলে ভুল ইপিএস দেখানো হয়েছে। এ বছর কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২৯.১৬ টাকার পরিবর্তে ১৪.৩৫ টাকা ইপিএস দেখিয়েছে। এছাড়া ২০১৪ সালে ভুলভাবে ২৪.৩৩ টাকার ইপিএস ২৬.১৭ টাকা দেখিয়েছে। নগদ প্রবাহ (ক্যাশ ফ্লো) হিসাবেও মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। হিসাবমান অনুযায়ী, প্রতি বছর ওয়েটেড শেয়ার দিয়ে শেয়ারপ্রতি পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হিসাব করা হলেও ২০১২ সালে করা হয়নি। ফলে এ বছর এনওসিএফপিএস ঋণাত্মক ২০৬.৬৯ টাকা হলেও কমিয়ে ১০১.৮০ টাকা দেখানো হয়েছে। বিএএস-১ অনুয়ায়ী, তুলনা করার জন্য চলতি বছরের পাশাপাশি আগের বছরের একই সময়ের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ‘স্টেটমেন্ট অব চেঞ্জেস ইন ইক্যুইটি’ হিসাবের তথ্য প্রকাশ করলেও আগের বছরেরটি করেনি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কমন শেয়ারে কোন পরিবর্তন না আসায় ওয়েটেড করা লাগেনি বলে প্রসপেক্টাসের ১৬৯ পৃষ্ঠায় তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর ৯০ কোটি টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে বলে ১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বছর শেয়ার ওয়েটেড করেও ইপিএস দেখিয়েছে। এ হিসাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে। ৬০ পৃষ্ঠা অনুযায়ী, ২০১৪ সালে নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ হয়েছে ৮১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। এ হিসাবে এ বছর শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ দাঁড়ায় ১.৬৪ টাকা। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিট পরিচালন নগদ প্রবাহে তিন কোটি ৯৩ লাখ টাকা হিসাবে নিয়ে শেয়ারপ্রতি ৭.৮৭ টাকা দেখিয়েছে। কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেছেন, সংশোধন করে প্রসপেক্টাস প্রকাশ করা হবে। এ লক্ষ্যে কোম্পানি ও ইস্যু ম্যানেজার কাজ করছে। ২০০৯ সালে প্রাইভেট হিসাবে গঠিত বিবিএস কেবল ২০১১ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। এর পরে ২০১৫ সালে প্রাইভেট কোম্পানি থেকে পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তর হয়। কোম্পানিটি শেয়ারবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে প্লান্ট ও মেশিনারিজ ক্রয়, ভবন নির্মাণ, ঋণ পরিশোধ ও আইপিও খাতে ব্যবহার করবে।
×