ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির কর্মিসভায় হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ॥ আহত ৩৩

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৭ মে ২০১৭

বিএনপির কর্মিসভায় হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ॥ আহত ৩৩

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মাদারীপুর, বরিশাল ও টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপির কর্মিসভায় হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও তুমুল হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। শনিবারের এসব ঘটনায় অন্তত বিএনপির ৩৩ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ২২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের পাঠানো। জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা বিএনপির যৌথ কর্মিসভা পুলিশ লাঠিচার্জে প- হয়ে গেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৫ রাউন্ড ফাঁকি গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। আহতরা হলেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কাজী রাসেল খান (৪০), সদর উপজেলার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গাউছ-উর-রহমান (৪৩), সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজের সাবেক ভিপি মাসুদ পারভেজ (৪৫), এনামুল মজুমদার (২৯), কামাল হোসেন খান (৩০), টিপু মুন্সী (৩০)। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার বিএনপির সকল অঙ্গ-সংগঠন নিয়ে এক যৌথ কর্মিসভার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সে অনুযায়ী গত মঙ্গলবার জেলা পুলিশের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে অনুমতি চাওয়া হলে তা নাকচ করা হয়। সকালে কর্মিসভার জন্য দলীয় লোকজন চরমুগয়িরা এলাকায় একত্রে জড়ো হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তা প- করে দেয়। এ সময় দলের ২০ কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, নির্বাহী কমিটির সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকনসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কুমার দেব বলেন, চরমুগরিয়া এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপ পুলিশের কোন অনুমতি ছাড়াই মিটিং-মিছিল করছিল। ফলে রাস্তা বন্ধ করে জনগণের ভোগান্তি হয়। তাই তাদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। মাদারীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহান্দার আলী জাহান বলেন, পরিকল্পিতভাবে পুলিশ আমাদের যৌথ কর্মিসভা লাঠিচার্জ করে প- করে দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এমন ঘটনা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট ছাড়া আরা কিছু নয়। আমাদের যে সকল নেতাকর্মীদের পুলিশ আটক করেছে তাদের মুক্তির দাবি জানাই। বরিশাল কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দুই গ্রুপের মধ্যে তুমুল হট্টগোল, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও হাতাহাতির মধ্য দিয়ে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির তৃণমূল কর্মিসভা শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই গ্রুপের ছোড়া চেয়ারে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১০ জন তৃণমূল কর্মী আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ১০টায় নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলে কর্মিসভার পূর্ব নির্ধারিত সময় থাকলেও উত্তর জেলা বিএনপির তৃণমূল কর্মিসভা শুরু হয় বেলা ১২টায়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বেলা এগারোটায় সভা শুরুর প্রাক্কালে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান এবং জয়নুল আবেদীনের সমর্থকদের মধ্যে তুমুল হট্টগোল বাধে। একেক নেতার সমর্থকরা অপরজনের বিরুদ্ধে বিষোধাগার করে নানা আপত্তিকর সেøাগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে উভয়ের সমর্থকদের মধ্যে সভাস্থলের চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একঘণ্টা সভা স্থগিত হয়ে যায়। পরে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর বেলা ১২টায় উত্তর জেলা বিএনপির তৃণমূল কর্মিসভা শুরু হয়। উত্তর জেলা বিএনপির তৃণমূল কর্মিসভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক সাংসদ ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন ফরাদ। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সেলিমা রহমান, এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুর হক চাঁন প্রমুখ। টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি আয়োজিত শনিবারের কর্মিসভার বাইরে ও ভেতরে কর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কর্মিসভায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, আন্দোলন সংগ্রাম করেই আগামীতে শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় আনতে হবে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার কাছে দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। একমাত্র দেশের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রহরী বিএনপি ও খালেদা জিয়া। সরকারের সকল প্রকার জুলুম অত্যাচারের জবাব দিয়েই তারেক জিয়া দেশের মাটিতে ফিরে আসবেন। তাই তৃণমূল পর্যায়ে সকল প্রকার গ্রুপিং ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।
×