ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

নাট্যচর্চা বিস্তৃতির অঙ্গীকার ॥ এশিয়ান থিয়েটার সামিট শেষ

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৭ মে ২০১৭

নাট্যচর্চা বিস্তৃতির অঙ্গীকার ॥ এশিয়ান থিয়েটার সামিট শেষ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক আয়োজনে সম্মিলন ঘটল বাংলাদেশসহ এশিয়ার দশ দেশের নাট্যকর্মীদের। এসব নিবেদিত নাট্যপ্রাণ মানুষদের পারস্পরিক ভাব বিনিময়ে উঠে এল এশীয় অঞ্চলের নাট্যচর্চা বিস্তৃতি ঘটানোর অঙ্গীকার। নাটকবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারের পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হলো যাত্রাপালা, বাউল গান, নৃত্য পরিবেশনাসহ অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এশিয়ান থিয়েটার সামিটের শেষ দিন ছিল শনিবার। এশীয় অঞ্চলের মঞ্চদল, শিল্পী ও গবেষকদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল এ্যামেচার থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) এশিয়ান রিজিওনাল সেন্টারের উদ্যোগে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশন। সামিটের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। শনিবার সমাপনী দিনে প্রথম অধিবেশনে উপস্থাপিত হয় কান্ট্রি প্রেজেন্ট্রেশন। এ পর্বে ইন্দোনেশিয়ার আলিকা চন্দ্র, ভারতের ডোংরে ইয়োৎসোনা সোহাস, নেপালের প্রেম পাওডেল, লাওসের পাংনা ফ্রানখোনে, সিঙ্গাপুরের চুয়া সু পং, ভিয়েতনামের ফাম থি হং, কম্বোডিয়ার ভ্যান সোপিয়াভোয়েথ ও বাংলাদেশের কৃষ্টি হেফাজ স্ব স্ব দেশের মঞ্চনাটক ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আলোচনা করেন। সংস্কৃতিবিষয়ক এক তুলনামূলক আলোচনার এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন আইএটিএ’র এশিয়ান রিজিওনাল সেন্টারের সভাপতি ও শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। মধ্যাহ্নভোজের পর দ্বিতীয় সেশনে ‘ইন্ডিজেনাস থিয়েটার অব দ্য সার্ক রিজিওন : নিউ ডিরেকশনস’ শিরোনামে আলোচনায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব অংশুমান ভৌমিক। এশিয়ার নৃত্য নিয়ে মুক্ত আলোচনা সঞ্চালনা করেন লুবনা মরিয়ম। মার্গ নাট্যের প্রায়োগিক কলাকৌশল আলোকপাত করেন ভারত থেকে আগত পিয়াল ভট্টাচার্য। এ পর্বের সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ। সবশেষে ছিল আইএটিএ’র এশিয়ান রিজিওনাল সেন্টারের কোর মিটিং। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হলে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরীক্ষণ থিয়েটারের হলে ছিল যাত্রাপালা ‘গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা’, বরিশালের রামযাত্রা, দিলু বয়াতীর কিচ্ছাপালা ও কুষ্টিয়ার পদ্মার নাচন। স্টুডিও থিয়েটার হলে ছিল পিপলস্্ থিয়েটারের পরিবেশনায় শিশুনাট্য ‘ডাকঘর’ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’। প-িত রামকানাই দাশের জন্মজয়ন্তী উদ্্যাপন প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী ও সংগ্রাহক প-িত রামকানাই দাশ। বাবা রসিকলাল দাশ এবং মা দিব্যময়ী দাশও ছিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী। লোকসঙ্গীতের ধারা রক্তে থাকলেও রামকানাই সেই গ-ি পেরিয়ে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিলেন ধ্রুপদী সঙ্গীতে। সঙ্গীত জীবনের শুরুর দিকে তবলা বাদক হিসেবে সুনাম অর্জন করা এই বরেণ্য শিল্পী গান গাওয়ার পাশাপাশি গান লিখছেন এবং সুরও করেছেন। এই সঙ্গীত সাধকের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার দিনব্যাপী রামকানাইগীতি প্রশিক্ষণ, সনদপত্র বিতরণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘প-িত রামকানাই দাশ স্মৃতি পরিষদ’। ধানম-ির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের ৬ষ্ঠ তলার বক্তৃতা কক্ষে সকাল থেকে ছিল রামকানাই গীতি প্রশিক্ষণ। উদ্বোধন করেন সঙ্গীতজ্ঞ ড. করুণাময় গোস্বামী। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন অনিমা মুক্তি গোমেজ, অনিন্দিতা চৌধুরী, নেভী তালুকদার ও অংকন চৌধুরী। বিকেলে ছায়ানট মিলনায়তনে ছিল আলোচনা সভা ও সনদপত্র বিতরণ। প-িত রামকানাই দাশ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন ড. করুণাময় গোস্বামী, ড. তপন বাগচী ও ড. নিমাই মণ্ডল।
×