ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খুদে বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ৭ মে ২০১৭

খুদে বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন

সভ্যতার অগ্রযাত্রা বিজ্ঞানের হাত ধরে। আজ আমরা এই যে বিমানে আকাশে উড়ছি, ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারছি, মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে যখন-তখন যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছি, এসবই বিজ্ঞানের ফল। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সুফল যে কেউ যে কোন স্থানে বসেই উপভোগ করতে পারেন যদি তার এ বিষয়ে আগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও উপকরণ থাকে। এই যে বিজ্ঞান সভ্যতায় আমরা এত সুফল পাচ্ছি, দূরকে নিকট করছে, অজানাকে জানিয়ে দিচ্ছে আর আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ সাবলীল করে দিচ্ছে এর উপকারিতা। আমরা কি লিখে শেষ করতে পারব? কতভাবে কত আঙ্গিকে বিজ্ঞান আমাদের সাহায্য-সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তারা যে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করছে আজ সহজে এত সম্ভবপর হয়েছে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে। তাই যখন আমরা কাউকে এই বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করতে দেখি কিংবা দেখি বিজ্ঞানচর্চা করতে, তখন প্রাণীত হই, উদ্দীপ্ত হই। আমাদের আশা জীবন্ত হয়ে ওঠে। রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ধানম-ি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সায়েন্স ক্লাব সম্প্রতি তাদের স্কুলে তিন দিনব্যাপী যে আন্তঃবিদ্যালয় বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করে তাতে ৬১টি স্কুল থেকে ১০৮টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। নানা বয়সের কিশোর-কিশোরীরা অর্থাৎ যাদেরকে আমরা খুদে বিজ্ঞানী বলে অভিহিত করতে পারি তাদের যে স্বপ্ন-পরিকল্পনার প্রকাশ আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখতে ও জানতে পারলাম কিভাবে তারা নতুন নতুন নানা বৈজ্ঞানিক প্রকল্প উদ্ভাবন করছেÑ অটোমেটিক স্ট্রিট লাইট প্রজেক্ট, রেলওয়ে সিকিউরিটি সিস্টেমের আধুনিক প্রজেক্ট, ক্যানেল ব্রিজ প্রজেক্ট, স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট তাদের চিন্তা-জ্ঞান-বুদ্ধিরই অনন্য উদাহরণ। কিশোর মনের যে স্বপ্ন রাজধানীকে একটি সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন যানজটমুক্ত নগরী হিসেবে দেখার তারই কল্পিত রূপ দিয়েছেন ‘স্মার্ট’ সিটি প্রকল্প উপস্থাপন করে। এখন এসব খুদে বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন দেখার জন্য পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। যাতে তারা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা ও সহযোগিতা পায়। আমরা কি এসব মেধাবী বুদ্ধিদীপ্ত তরুণ-তরুণীদের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতাদানে এগিয়ে আসব না? আমাদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার ক্ষেত্রে এদের মেধা-স্বপ্নকে কাজে লাগাব না? বিজ্ঞান চর্চার মধ্য দিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে পারি সামনের দিকে আর সে জন্য সরকারী দৃষ্টিভঙ্গি, মনোভাব এবং সার্বিক সহায়তা আরও উদার ও ব্যাপক হতে হবে। সভ্যতা বিজ্ঞানের আশীর্বাদ। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মানব সভ্যতাও এগিয়ে যাবে। দেশের তরুণদের বিজ্ঞানমুখী করার জন্য, তাদের বিজ্ঞান চর্চাকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারকে যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনি সমাজের বিত্তবান এবং শিক্ষিত মানুষদেরও এক্ষেত্রে করণীয় রয়েছে। দেশের ভবিষ্যত কা-ারি হবে আজকের তরুণরা। এদের যত বেশি করে বিজ্ঞানমুখী করা যাবে, বিজ্ঞান চর্চায় যত বেশি করে এদের সংশ্লিষ্ট করা যাবে, দেশের ভবিষ্যতের জন্য ততই মঙ্গল।
×