ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

কালিকাপ্রসাদের প্রতি সংস্কৃতিকর্মীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৬ মে ২০১৭

কালিকাপ্রসাদের প্রতি সংস্কৃতিকর্মীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি এক সড়ক দুর্ঘটনায় না-ফেরার দেশে পাড়ি জমান কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য। বাংলাদেশের প্রতি অপার অনুরাগের কারণে সহজেই এদেশের সংস্কৃতিপ্রেমীদের আপনজন হয়ে উঠেছিলেন এই লোকসঙ্গীত শিল্পী ও লোকসঙ্গীত গবেষক। বাংলার লোকগানের মণি-মাণিক্য খুঁজতে ঘুরে বেড়িয়েছেন এদেশের পথে-প্রান্তরে। তাই তো ভালবাসার বন্ধনে এই শিল্পীকে শুক্রবার স্মরণ করলেন ঢাকার সংস্কৃতিকর্মীরা। অনুষ্ঠানস্থলে চোখে পড়ে তাঁর করা ভুবন মাঝি ছবিতে সুর দেয়া গানের বাণী ‘আমি তোমারই নাম গাই’। স্মরণের আয়োজনটিতে গানের সুরে তাঁকে জানানো হলো ভালবাসা, বক্তাদের আলোচনায় জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। বক্তারা বার বার বললেন, কালিকা আমাদেরই লোক, আমাদেরই মানুষ। বৈশাখী সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দেশের সকল সংস্কৃতিকর্মীর পক্ষ থেকে আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কালিকাপ্রসাদকে স্মরণ করে নাট্যশালার লবিতে বেজে ওঠে বাঁশির করুণ সুর। সেই সুরের আলিঙ্গনে কালিকাপ্রসাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন অতিথি ও কালিকাপ্রসাদের অনুরাগীরা। এরপর নীরবতা পালন শেষে ধীরে ধীরে সকলে প্রবেশ করে মিলনায়তনে। মিলনায়তনে প্রবেশের পর স্বল্প কথনে কালিকার প্রতি ভালবাসা ব্যক্ত করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, কালিকাপ্রসাদের স্ত্রী ঋতুচেতা ভট্টাচার্য ও তাঁর বন্ধু সঙ্গীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সভাপতি শামসুল আরেফিন, শুভজিৎ, গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর, কণ্ঠশিল্পী বুলবুল ইসলাম, লোকসঙ্গীতশিল্পী কিরণ চন্দ্র রায়, ‘ভুবন মাঝি’ চলচ্চিত্রের পরিচালক ফকরুল আলম খান প্রমুখ। মিলনায়তনে এ সময়ে আবহসঙ্গীতে বাজছিল কালিকাপ্রসাদের কণ্ঠে গাওয়া ‘গান গাই আমার মনরে বোঝাই’ গানটি। আয়োজনের প্রথম পর্বে সবাই মিলে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন। এ সময় অতিথিদের পরণে ছিল শুভ্র বসন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আজ আমরা সাদা পোশাকে এসেছি। এমনই শুভ্র মনের নিষ্পাপ শিশুর মতো মানুষ ছিল কালিকা। আপাদমস্তক শিল্পী, আপাদমস্তক বাঙালী, আপাদমস্তক মানুষ ছিলেন কালিকা। আমাদের অনেক প্রিয় এই মানুষটি সব সময় ভাবতেন বাঙালীর জন্য। ঋতুচেতা ভট্টাচার্য বলেন, ছোটবেলা থেকেই মঞ্চে উঠে আমি অভ্যস্ত, তবে বক্তা হিসেবে নয়। আজকে বক্তা হিসেবে মঞ্চে ওঠার অভিজ্ঞতা বোধহয় না হলেই ভাল হতো। কালিকার চলে যাওয়ার পরে আশপাশে অনেক আয়োজন হয়েছে, যায়নি। কিন্তু, আজকের এ আয়োজনে না এসে পারিনি। কারণ, এখানে যারা আছেন তাদের কথা আমি সব সময়ই কালিকার মুখে শুনেছি, সেই টানেই আমি চলে এসেছি। লোপামুদ্রা মিত্র বলেন, আমি লোকগানের শিল্পী না। যতটুকু গাই, তার শিক্ষাগুরু কালিকা। আমি এমন এক বন্ধুকে হারিয়েছি, যার জন্য শুধু শোকই করা যায়। এ সময় তিনি গেয়ে শোনার তাঁর গাওয়া কালিকাপ্রসাদের প্রিয় গান ‘আমার কাছে দেশ মানে এক লোকের পাশে অন্য লোক’। আলোকচিত্রে সময়ের গল্প উঁচু-নিচুর ভেদাভেদ নেই, নেই দাঙ্গা-ফ্যাসাদ। রঙের উৎসব দিকে দিকে; অন্ধকারের বিপরীতে তারুণ্যের জয়গানে মুখরিত গোটা বিশ্ব। বিশ্বের নানা প্রান্তের আলোকচিত্রীদের ফ্রেমে উঠে এসেছে সমাজবাস্তবতা আর ভবিষ্যতের স্বপ্নগাথা। বাংলাদেশের আলোকচিত্রীদের ফ্রেমে ধরা দিয়েছে আবহমান গ্রামবাংলার দৃশ্যকল্প। উঠে এসেছে ধর্মবিশ্বাস আর সামাজিক নানা আচার- আচরণের গল্প। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় চিত্রশালায় এই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড ট্রফি জিতেছেন চীনের আলোকচিত্রী অং জু। গোল্ড মেডেল জিতেছেন ইংল্যান্ডের ব্যারি মেড, অরুণ মহানরাজ, হংকংয়ের ড্যানি প্যাট্রিক চো, ভিয়েতনামের ডাক তুয়াই লি, যুক্তরাষ্ট্রের রোজালি অং। বিপিএস ন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ডের গোল্ড ট্রফি জিতেছেন জাকিরুল মাজেদ, সিলভার ট্রফি জিতেছেন মাশফিকুর সোহান, ব্রোঞ্জ ট্রফি জিতেছেন লক্ষ্মণ মিন্টু। এছাড়াও ১৫৪ টি পুরস্কার ছিল এই প্রতিযোগিতায়। ‘পাবে সামান্যে কি তার দেখা’ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে শুরু হলো ‘পাবে সামান্যে কি তার দেখা’ শীর্ষক দলীয় চিত্র প্রদর্শনী। আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার ক্যাফে-লা-ভেরান্দায় শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় অধ্যাপক আবুল বারক্ আলভী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার অধ্যাপক মুস্তাফা খালিদ পলাশ এবং ড. রাশিদ আমিন, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার পরিচালক ব্রুনো প্লাস। আল আঁখির ক্যানভাসে আঁকেন কল্পনার বিস্তীর্ণ জগত, যেন খুঁজে ফেরেন আপনার অস্তিত্ব। সতত সঞ্চরণশীল জীবন ও এর রূপান্তরকে তিনি নানা দৃশ্যকল্পে ফুটিয়ে তুলেন তার ক্যানভাসে। আঁখির ক্যানভাসে উঠে এসেছে বাঙালী মুসলমান জনপদের ঐতিহ্য, অনুভব, রীতি-রেওয়াজ, ধর্মচেতনা। নারীর ক্ষমতায়নের দাবিকে এবার ক্যানভাসে তুলে এনেছেন শিল্পী ফারজানা হক। নারীর প্রেম, বিশ্বাস, প্রতিজ্ঞা, প্রতিশ্রুতি ও আত্মবলিদানের গল্পগুলো উঠে আসে তার ক্যানভাসে। সুফী ঐতিহ্য আর ইসলামী ক্যালিগ্রাফি সাদি আহমেদ মুকাদ্দাসের শিল্পকর্মে বেশ প্রভাব রেখেছে। পরমাত্মার সঙ্গে মিলনের অতিন্দ্রীয় জ্ঞানকে নানা উপমায় ক্যানভাসে চিত্রায়িত করেন অধ্যাত্মবাদ দ্বারা উৎসাহিত এই শিল্পী। তিন শিল্পীর এই প্রদর্শনীটি চলবে ১৭ মে পর্যন্ত। নাসের রহমানের গল্পগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব চন্দ্রাবতী একাডেমি থেকে প্রকাশিত কথাসাহিত্যিক নাসের রহমানের ‘নির্বাচিত গল্পগ্রন্থে’র প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো শুক্রবার। বাংলা একাডেমির শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অধ্যাপক হায়াৎ মামুদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া ও সুহন বড়ুয়া। নাশিদ কামালের একক সঙ্গীতসন্ধ্যা জাতীয় জাদুঘরের নিয়মিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে শুক্রবার জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে একক সংগীতসন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল।
×