ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন সাড়ে ৬ কোটি

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৬ মে ২০১৭

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন সাড়ে ৬ কোটি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে সাড়ে ৬ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ৬ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক সৃষ্টি হওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। চলতি বছর শেষে এ সংখ্যা ৭ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশ খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চেয়ে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক বাড়ছে বেশি। দেশে বর্তমানে মোবাইল গ্রাহক সাড়ে ১২ কোটি। এর মধ্যে সাড়ে ৪ কোটি মোবাইল গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। বাকি দুই কোটি গ্রাহক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। বিটিআরসি জানিয়েছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গত বছরের মার্চ মাসে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ১২ লাখ ৮৮ হাজার। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৮৩ লাখ ও জানুয়ারিতে ছিল ৫ কোটি ৬১ লাখ। তবে ইন্টারনেট গ্রাহক যে হারে বাড়ছে, মোবাইল গ্রাহক সে হারে বাড়ছে না। বরং মোবাইল গ্রাহক কমছে। বেশিরভাগ ইন্টারনেট গ্রাহক ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সেবা নিচ্ছেন। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক তুলনামূলকভাবে বাড়েনি। গ্রাহকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি বিভিন্ন ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রপ্রাইটর) ও পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্কের (পিএসটিএন) ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়লেও ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেটে আগ্রহ হারাচ্ছেন গ্রাহকরা। ইন্টারনেট এখন গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিটিআরসি। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ডেটা ব্যবহারের দিকে আগ্রহ বাড়ছে। গ্রাহক সংখ্যা এ বছরের শেষ নাগাদ ৭ কোটিতে দাঁড়াবে। ২০১৫ সালে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৬২ হাজার। এই হিসেবে এক বছরে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ। তবে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক বাড়লেও মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা কমার পেছনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন। কারণ, অনেক সিম অনিবন্ধিত ছিল। ফলে সিমগুলো কেউ আর নিবন্ধন করে সচল রাখেনি। সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে এই সংখ্যা কমছে। বিটিআরসির তথ্যমতে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৯৫ শতাংশ এ সেবা নিচ্ছেন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। ইন্টারনেটের গ্রাহক যত বাড়বে পরিকল্পিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কাজ আরও বেগবান হবে। তবে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ইন্টারনেটের দাম রাখতে না পারলে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে। সম্প্রতি ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণের জন্য বিটিআরসি কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ইন্টারনেটের দাম ঠিক করা হবে। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা সবার হাতে পৌঁছে দিতে গত মাসের মধ্যে ইন্টারনেটের দাম ঠিক করার কথা ছিল। কিন্ত এ মাসেও ইন্টারনেটের দাম পুনর্নির্ধারণের কাজটি শেষ হবে না। বাজারে বর্তমানে ইন্টারনেটের যে দাম রয়েছে তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিষয়টি মাথায় রেখে ইন্টারনেটের নতুন দাম নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছে বিটিআরসি; যাতে গ্রাহক এবং ব্যবসায়ী কোন পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট একটি মূল্য থাকবে; যার মধ্যে থেকেই গ্রাহক এবং ব্যবসায়ীদের চলতে হবে। দেশের সব প্রান্তে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ চলছে। ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর জন্যও কাজ করা হচ্ছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা না হলে কাজেরও কোন গতি আসবে না। তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর তরুণ প্রজন্ম যাতে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পায় সেটা নিশ্চিত করা হবে। তরুণ প্রজন্ম ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে গড়ে উঠবে।
×