ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির মুক্তির অপেক্ষায় আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৬ মে ২০১৭

মেসির মুক্তির অপেক্ষায় আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এমনিতেই শঙ্কার কালো মেঘ। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা খেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে শুরু থেকেই আছে সংশয়। এই দোলাচলের মধ্যে ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। চিলির বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে সহকারী রেফারির সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য জাতীয় দলের হয়ে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। যে কারণে বলিভিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি মেসি। খেলতে পারবেন না আরও তিন ম্যাচ। বাছাইপর্বে বাকি আছে আর মাত্র চারটি ম্যাচ। এখন আপীল করার পর যদি নিষেধাজ্ঞা না কমে তাহলে আর্জেন্টিনার কি হবে তা নিয়ে চিন্তিত বিশ্বব্যাপী তাদের কোটি কোটি ভক্ত-সমর্থকরা। কেননা এখন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে পঞ্চম স্থানে আছে আর্জেন্টিনা। এই অঞ্চল থেকে সরাসরি চারটি দল টিকেট পাবে রাশিয়ার। পঞ্চম হওয়া দলটিকে খেলতে হবে প্লেঅফ। কিন্তু মেসি খেলতে না পারলে শেষ পর্যন্ত প্লেঅফ খেলার সুযোগও হবে কিনা তা নিয়ে ঘোরতর শঙ্কা আছে। মার্চের শেষদিকে অনাকাক্সিক্ষত এই ঘটনা ঘটে। এরপর পেরিয়ে গেছে দুই মাস। অবশেষে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আপীল করেছেন মেসি। যার শুনানিও হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। জোর গুঞ্জন, সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার সদর দফতরে হওয়া শুনানিতে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি শুনানিতে অংশ নেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের উদ্ধৃতিতে জানা গেছে, শুনানির ফল আসতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, মেসির পক্ষেই আসবে রেজাল্ট। বার্সা জাদুকরের আইনজীবীদের এমনটাই আশা। আর এ কারণেই মেসির মুক্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছে আর্জেন্টিনা। নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে উরুগুয়ে, ভেনিজুয়েলা ও পেরুর বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না মেসি। ফিরবেন বাছাইয়ে দলের শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরের বিরুদ্ধে। তবে জুরিখে শুনানির পর মেসির আইনজীবী জুয়ান দ্য ডিওস ক্রেসপো শুনিয়েছেন আশার বাণী। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা খুবই ভাল একটা কাজ করেছি। ফিফা আমাদের এ বিষয় নিয়ে খুব বেশি মন্তব্য না করতে মানা করেছে। ফিফা তাদের সিদ্ধান্ত জানালে আমি বিস্তারিত বলব। ক্রেসপো বলেন, ফিফা এখন অবশ্যই কেসটা পর্যালোচনা করবে। আগামী সপ্তাহে ফিফার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সম্ভাবনা আছে। শুনানিতে আমাদের কাজটা ভালভাবে হওয়াতে আমরা আশাবাদী। শুনানিতে ছিলেন না মেসি। শুনানির সময় বার্সিলোনায় থাকা মেসির সঙ্গে কোন ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে কিনা এ বিষয়ে অবশ্য কথা বলতে রাজি হননি তার আইনজীবী। এ বিষয়ে তার ভাষ্য, অপেক্ষা করুন কি হয় তা দেখার জন্য। আমরা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আবেদন করেছি। এটা সম্পূর্ণভাবে তুলে নেয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী। চিলির বিরুদ্ধে ম্যাচে সহকারী রেফারির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের দায়ে মেসি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হন। ওই ম্যাচের শেষদিকে একটি ফাউল করেন মেসি। মাঠে থাকা অবস্থায় সহকারী রেফারি মার্সেলো ভান গাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ম্যাচশেষে এই অফিসিয়ালের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকৃতি জানান মেসি। মেসিকে ছাড়া আট ম্যাচে আর্জেন্টিনা পেয়েছে মাত্র ৭ পয়েন্ট। আর মেসি খেলেছেন এমন ৬ ম্যাচে আর্জেন্টিনার অর্জন ১৫ পয়েন্ট। বলিভিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই মোট চার ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় মেসিকে। পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ী তারকাকে ছাড়া বলিভিয়ার কাছে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। সহকারী রেফারির সঙ্গে বাজে আচরণ করলেও চিলি ম্যাচের পর প্রধান রেফারি সান্ড্রো রিচ্চির প্রতিবেদনে মেসির এই ক্ষোভ প্রকাশের কথা লেখা ছিল না। রিচ্চি লিখেছিলেন, মেসি বা অন্য কারও কাছ থেকে আক্রমণাত্মক কিছু আমি শুনিনি। যদি তেমন কিছু শুনতাম তাহলে অবশ্যই খেলাটির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতাম। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর মেসি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমার কথাগুলো কখনই সহকারী রেফারিকে উদ্দেশ করে বলিনি, সেগুলো বলেছিলাম উদ্দেশ্যহীনভাবে। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত মেসির ভাগ্যে কি হয়।
×