ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-পাকিস্তান লড়াই দেখতে উন্মুখ আফ্রিদি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ৬ মে ২০১৭

ভারত-পাকিস্তান লড়াই দেখতে উন্মুখ আফ্রিদি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক যে শীতলতা, যে কোন পর্যায়ে সেটার মধ্যে বিন্দুমাত্র শিথিলতা নেই। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বৈরী সম্পর্কের কারণে এমনকি ক্রিকেটীয় লড়াইটাও বিরল। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) টুর্নামেন্টগুলোতেই ময়দানী সাক্ষাত হয় দু’দলের। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বন্ধ একেবারেই। দীর্ঘদিন পর আরেকটি পাক-ভারত ক্রিকেট লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছে পুরো বিশ্ব। আর উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন সাবেক পাক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। আগামী মাসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হবে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ। সেটা দেখতে তর সইছে না আফ্রিদির। তিনি দাবি করেছেন, ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে পাকিস্তানের সব ক্রিকেটারের সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ। তবে ব্যতিক্রম শুধু গৌতম গাম্ভীর। এ বাঁহাতি ওপেনার মোটেও বন্ধুবৎসল নয় বলে অভিযোগ করেছেন আফ্রিদি। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসরে শিরোপা জিতেছিল ভারত। এবার তাদের শিরোপা ধরে রাখার মিশন। যদিও সময় পেরিয়ে গেছে দল ঘোষণার, কিন্তু আইসিসির সঙ্গে আর্থিক দ্বন্দ্বে এখন পর্যন্ত দল দেয়নি ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। সূচী অনুসারে ভারতের লড়াই শুরু হবে ৪ জুন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুইবার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। ২০০৪ সালে এজবাস্টনে এবং ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নের লড়াইয়ে জিতেছে পাকরা। আবার সেই এজবাস্টনে ১৩ বছর পর মুখোমুখি হবে দু’দল। এ লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছেন আফ্রিদি। ফুটছেন উত্তেজনায় টগবগ করে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এজবাস্টনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত-পাকিস্তানের লোভনীয় ম্যাচÑ বছরের অন্যতম বড় ক্রিকেট ম্যাচ থেকে আমরা আর ঠিক এক মাস দূরে। বিশ্বের লাখ লাখ ভক্তদের মতো আমিও ম্যাচটি নিয়ে উত্তেজিত। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ দেখতে আমি মুখিয়ে আছি। এটিই আইসিসির একমাত্র ইভেন্ট যেখানে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের সফলতা আছে। ২০০৪ সালে এজবাস্টনে আমরা জিতেছিলাম এবং পরে ২০০৯ সালে সেঞ্চুরিয়নে। আমি আশাকরি সবুজ জার্সিধারীরা এজবাস্টনে আবার জ্বলে উঠবে এবং ভারতের বিপক্ষে উন্নত রেকর্ড অক্ষুণœ রাখবে।’ কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পারফর্মেন্সের দিক থেকে ভারত অনেক বেশি এগিয়ে গেছে। পিছিয়ে পড়েছে পাকরা। এ বিষয়ে আফ্রিদি বলেন, ‘আমি মনেপ্রাণে আশা করছি এজবাস্টনে আমরা ভারত-পাকিস্তানের একটি ক্লাসিক ম্যাচ দেখতে পারব। ভারত শক্তিশালী এবং আমাদের বিপক্ষে সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সের বিচারে মানসিকভাবে এগিয়ে। এছাড়া তাদের ব্যাটিংয়ে প্রতিভার ছড়াছড়ি, তাদের সমর্থন দেয়ার জন্য আছে আগ্রাসী ও আক্রমণাত্মক একটি বোলিং লাইনআপ।’ ময়দানী লড়াই কিংবা রাজনীতির মাঠে দু’দেশের মধ্যে রেষারেষি থাকলেও খেলোয়াড়দের মধ্যে সেটা নেই। আফ্রিদি দাবি করেছেন উভয় দেশের ক্রিকেটাররা পরস্পরের প্রতি দারুণ বন্ধুবৎসল। এ বিষয়ে আফ্রিদি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা পরস্পরের প্রতি দারুণ বন্ধুপ্রতিম। কিন্তু সবাই মনে করে উভয় দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যেও সম্পর্কটা তেমন ভাল নয়। এটা তখনই সত্য হতে পারে যদি গৌতম গাম্ভীরের সঙ্গে বিষয়টি মেলানো হয়। সে সবসসময় দূরে দূরে সরিয়ে রাখে নিজেকে। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে সে আমার কিংবা অন্য কারও বন্ধু তালিকায় নেই।’ গাম্ভীর সবসময় গোমড়ামুখে থাকেন। মাঠে তো অবশ্যই মাঠের বাইরেও তার সঙ্গে কোন পাক ক্রিকেটারের ভাল সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে আফ্রিদি বলেন, ‘আমাদের কারও সঙ্গে এমনকি কফিশপেও তার দেখা হয়নি। উল্টো কয়েক বছর আগে তার সঙ্গে মাঠের মধ্যে আমার বাক-বিত-া হয়েছিল। সেটা সারাবিশ্বে খবরের শিরোনামও হয়ে যায়। যদিও আমি এসব ঘটনাকে খেলার অংশ হিসেবেই মনে করি, কিন্তু গৌতম গাম্ভীর তা কোনসময় কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তারজন্য আমার শুভ কামনা। পরিষ্কারভাবেই সে ব্যতিক্রম।’ আফ্রিদি জানান, গত বছর ভারত-পাকিস্তানের টি২০ বিশ্বকাপ ম্যাচ শেষে বিরাট কোহলি ও তার দলের সবাই সাক্ষর করা ভারতীয় জার্সি উপহার দিয়েছিলেন তাকে।
×