ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইরাক সিরিয়া ছেড়ে পালাচ্ছে ওরা

আইএস জঙ্গীরা যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্কতার নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৬ মে ২০১৭

আইএস জঙ্গীরা যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য সতর্কতার নির্দেশ

শংকর কুমার দে ॥ ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) চূড়ান্ত পরাজয়ের মুখে পলায়নপর জঙ্গীরা যাতে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যৌথবাহিনীর অভিযানের মুখে কোণঠাসা হয়ে পড়া আইএস জঙ্গীরা নিজ নিজ দেশে ফিরে আসতে পারে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে ঢুকে পড়া আইএস জঙ্গীরা সীমান্ত পেরিয়ে চোরাইপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে বলেও গোয়েন্দা সংস্থার আশঙ্কা। গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে চূড়ান্ত পরাজয়ের মুখে রয়েছে জঙ্গীগোষ্ঠী আইএস। যে কোন দিন ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত আইএসের মূল ঘাঁটিগুলোর পতন ঘটতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যৌথবাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে আইএসের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী যেই মসুলে আছেন সেই শহরটি ঘিরে ফেলেছে। আইএসপ্রধানের ধরা পড়া অথবা মারা পড়া দুটির একটি খবর শোনার অপেক্ষায় আছেন বিশ্বের সুপার পাওয়ার দেশ আমেরিকা-রাশিয়াসহ অন্য দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ। তবে সর্বোচ্চ দু’-এক মাসের মধ্যেই আইএস ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে আইএস নির্মূল করার বিষয়টি এখন প্রায় চূড়ান্ত বলে মনে করছেন ঢাকার গোয়েন্দারা। ইরাকে পরাজয় স্বীকার করে বিদেশী যোদ্ধাদের হয় আত্মঘাতী হওয়া, নয়ত পালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গী সংগঠনের প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী। এমন পরিস্থিতিতে আইএসের হয়ে যুদ্ধ করা বাংলাদেশের জঙ্গীদের দেশে ফেরার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের হয়ে বাংলাদেশের কেউ যুদ্ধ করছেন কি-না বা যুদ্ধ করতে থাকলে কতজন যুদ্ধ করছেন সে সম্পর্কে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সঠিক পরিসংখ্যান নেই। শুধু মাঝেমধ্যে দু’-একজনের আইএস পোশাক পরে হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল হাতে ছবি ভার্চুয়াল বা আইএসের দাবিড় ম্যাগাজিন, আমাক নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাইট ইন্টেলিজেন্সের পোস্ট করা ছবির খবর ছাড়া তেমন কোন তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায় না। এ পর্যন্ত জঙ্গীবিরোধী অভিযানে যারা নিহত, আহত, গ্রেফতার হয়েছে তারা সবাই হোমগ্রোন জঙ্গী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি। ২০১৪ সালে ইরাকের মসুল থেকেই কথিত খিলাফতের ঘোষণা দিয়েছিলেন আইএসপ্রধান আবু বকর আল-বাগদাদী। তিন বছরের ব্যবধানে সেই শহর হাতছাড়া হওয়ার ঘটনাটি এখন সময়ের বিষয় মাত্র। ইরাকের মসুল ঘিরে ফেলে গত অক্টোবর থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে ইরাকী যৌথবাহিনী। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ইরাকে পরাজয় মেনে নিয়ে বিদেশী জঙ্গীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অথবা আত্মঘাতী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাগদাদী। অন্যদিকে সিরিয়াতেও চরম বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে আইএস। বাগদাদীর এ নির্দেশের পর ইরাক-সিরিয়ায় আইএসের পক্ষে লড়াই করা বাংলাদেশী যদি কোন জঙ্গী থেকে থাকে, তারা দেশে ফিরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। আইএস জঙ্গীরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে ঢুকে পড়ে নাশকতা চালাতে পারে- এমন খবর পেয়ে ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতা জারি করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরার সীমান্তঘেঁষা বাংলাদেশে যাতে চোরাইপথে কোন আইএস জঙ্গী কিংবা অন্যান্য জঙ্গী প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
×