ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিটিং লোকালের প্যাঁচে নগরবাসী

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ৬ মে ২০১৭

সিটিং লোকালের প্যাঁচে নগরবাসী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিটিং নাকি লোকাল -এ দুয়ের প্যাঁচে পড়ে এখনও ভুগেই চলেছেন নগরবাসী। শেষ পর্যন্ত নগরীতে কোন নিয়মে বাস চলবে আর ভাড়াইবা কেমন হবে তা নিয়েও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরীর বাইরে থেকে আসা দূরপাল্লার পরিবহনে সিটিং সিস্টেম মানানসই হলেও নগরীর ভেতরে বিশেষত অফিস আওয়ারে সিটিং সিস্টেম ভোগান্তি আরও বাড়াবে। তবে বিআরটিএ বলছে, সব দেখেশুনেই সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। রাজধানীতে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন রুটে চালু হয়েছে বেশ কিছু নতুন পরিবহন। তবে চালু হওয়া এসব বাস গেটলক কিংবা সিটিং সিস্টেমে চলায় মোটাদাগে যাত্রীদের একটা বড় অংশেরই কোন উপকারে আসেনি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন ৭ নম্বর, ৮ নম্বর, ভিআইপি ২৭ বা ৩ নম্বরের মতো লোকাল বাসগুলোও একে একে হয়ে যেতে থাকে গেটলক সার্ভিসের নামে প্রতারণার হাতিয়ার। এমন পরিস্থিতিতে খোদ পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বানে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করতে গিয়ে উল্টো চাপে পড়ে পিছিয়ে আসতে হয় বিআরটিএকে। সংস্থাটি এখন সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় নিলেও যাত্রীদের উদ্বেগ কাটছে না। এক যাত্রী বলেন, সিটিং হওয়াতে আমরা যারা অল্প দূরত্বে যাব, এই যেমন ফার্মগেট থেকে শাহবাগ যেতে চাইলে বাসে উঠতে পারি না। আরেক যাত্রী বলেন, আমরা যা চাই তার তো কিছুই পাই না। সিটিংয়ের ভাড়া বেশি দেই কিন্তু সেখানে আসলে সে সুবিধা পাই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের কোথাও নগরীর ভেতরে সিটিং সার্ভিস নেই। সেখানে ঢাকার মতো জনবহুল মেগাসিটিতে তো প্রশ্নই ওঠে না। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সামছুল হক বলেন, দূরপাল্লার জন্য সিটিংটা থাকতে পারে কিন্তু শহরের মধ্যে এটা পিক আওয়ারে কোনভাবেই অনুমোদন দেয়া উচিত না। যদি আমরা গেটলক করে দেই তাহলে বাস কিন্তু বেশি নামাতে হবে। বাস বেশি নামালে আবার যানজট হয়ে যাবে। তারা বলছেন, সিটিং সার্ভিসে না গিয়ে পরিবহন কোম্পানিগুলো এসি, নন-এসি বা মহিলাদের জন্য স্পেশাল সার্ভিস চালু করতে পারে। ডিএনসিসির পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক ড. এস এম সালেহউদ্দিন বলেন, পৃথিবীর সব দেশে যেটা আছে সেটা হলো, বৃদ্ধ, শিশু বা নারীদের জন্য কেবল একটা সিটের বন্দোবস্ত থাকে। তবে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিআরটিএ বলছে, মালিক-শ্রমিক-যাত্রী সবার স্বার্থ ঠিক রেখেই নগরীতে বাস সার্ভিসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। বিআরটিএর ডিরেক্টর (এনফোর্সমেন্ট) নাজমুল আহসান মজুমদার বলেন, আমরা চেষ্টা করব সব যাত্রীর সুবিধা এবং স্বার্থ সামনে রেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট্ট এ নগরীতে জনসংখ্যার বাড়তি চাপ সামলাতে গণপরিবহনের যেমন ব্যবস্থাপনা দরকার ছিল তা নেই। ফলে বাড়ছে ভোগান্তি। তারা বলছেন, যদি গণপরিবহনকে সুষ্ঠু নিয়ম-শৃঙ্খলার আওতায় আনা যায় তাহলে অল্প বাসেই বেশিসংখ্যক যাত্রীকে পরিবহন সুবিধা দেয়া সম্ভব।
×