ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তালিকাভুক্ত ১৭ কোম্পানির মধ্যে ৬টির অবস্থা নাজুক

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৫ মে ২০১৭

তালিকাভুক্ত ১৭ কোম্পানির মধ্যে ৬টির অবস্থা নাজুক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১৭টি কোম্পানির মধ্যে ৬টির অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। ৬টি কোম্পানিরই শেয়ার প্রতি মুনাফা কমে এসেছে। এছাড়া কয়েকটি কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ, ব্যবসায় লোকসান, বিনিয়োগের তুলনায় মুনাফার পরিমাণ কমে গেছে। কোম্পানিগুলো হলো - হামিদ ফেব্রিকস, ওয়েস্টার্ন মেরিন, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, এমারেল্ড অয়েল ও মোজাফ্ফর হোসাইন স্পিনিং মিলস। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে খুলনা প্রিন্টিং ও এমারেল্ড অয়েলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আর সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩ শিফটের উৎপাদন কমে এখন এক শিফটে হয়। সরেজমিনে কোম্পানিগুলোর এ অবস্থা দেখা গেছে। তবে মূল্য সংবেদনশীল তথ্য হওয়া সত্ত্বেও এমারেল্ড অয়েল ও সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়গুলো গোপন রেখেছে। লভ্যাংশ দেয়া বন্ধ হয়ে গেছে ওয়েস্টার্ন মেরিন, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের। ফলে এই ৩ কোম্পানির ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবনমন হয়েছে। এদিকে ৬ কোম্পানিরই ইপিএস কমে এসেছে। এর মধ্যে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লোকসান গুনছে। আর ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাব প্রকাশ করে না। ফলে কোম্পানির ব্যবসায়িক অবস্থা আড়ালে রয়েছে। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এই ৬ কোম্পানির মধ্যে হামিদ ফেব্রিকস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার দর ইস্যু মূল্যের নিচে রয়েছে। এর মধ্যে আবার সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নিচে রয়েছে। হামিদ ফেব্রিকস ॥ কোম্পানিটি ৫.৫৮ টাকা ইপিএস দেখিয়ে শেয়ারবাজার প্রতিটি শেয়ার ৩৫ টাকা করে ইস্যু করে। তবে শেয়ারবাজারে আসার পরে সর্বশেষ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হয়েছে ১.০১ টাকা। এই হিসাবে কোম্পানির ইপিএস কমেছে ৪.৫৭ টাকা বা ৮১.৯০ শতাংশ। যে কোম্পানি শেষ বছরে ১৫ শতাংশ হারে প্রতিটি শেয়ারে ১.৫ টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে। যা ৩৫ টাকা হিসাবে বিনিয়োগকারীরা রিটার্ন পেয়েছে ৪.২৯ শতাংশ। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ॥ প্রতিষ্ঠানটির ২০১৪-১৫ হিসাব বছরের জন্য নির্ধারিত সময়ে পরিচালনা পর্ষদের সভায় কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে না পারায় লভ্যাংশ ও এজিএম সম্পন্ন করা হয়নি। এজিএম আয়োজনে স্বাভাবিক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কোম্পানি নিবন্ধকের এখতিয়ারভুক্ত সময়ও পেরিয়ে যায়। এখন এজিএম করতে আদালতের নির্দেশনা লাগবে। যা এখনও নিতে না পারায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরের এজিএম এবং লভ্যাংশ আটকে রয়েছে। সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ॥ ১.০৯ টাকা ইপিএস নিয়ে শেয়ারবাজারে আসা কোম্পানিটি এখন লোকসান গুনছে। শেষ ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ০.০৮ টাকা। যাতে কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারছে না। খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং ॥ বিক্রয় বেশি ও নির্ধারিত অফিস না থাকার বিষয়টি নিয়ে শেয়ারবাজারে আসার আগের আলোচনায় উঠে আসে কোম্পানিটি। এরপরে ভ্যাট ফাঁকি দেয়া নিয়ে পড়ে আইনী জটিলতায়। চিটাগাং পোর্টে কোম্পানিটির কাঁচামাল আটকে দেয় এনবিআর কর্তৃপক্ষ। যার আলোকে উৎপাদন বন্ধ করার ঘোষণা দেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। এমারেল্ড অয়েল ॥ বেসিক ব্যাংকের ঋণ জটিলতায় কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। সরেজমিনে এমারেল্ড অয়েলের শেরপুরে কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যেখানে শুধু ১ জন নিরাপত্তারক্ষী ১ জন তত্ত্বাবধায়ক উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে রাজধানীর বিজয়নগরে অবস্থিত কোম্পানির করপোরেট অফিস প্রায় সময় বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক হিসাব প্রকাশেও মিথ্যার আশ্রয় নেয় বলে নিরীক্ষকের নিরীক্ষায় বেরিয়ে এসেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এসব বিষয় গোপন রেখেছে। আর প্রতিবছর বিক্রয় ও মুনাফা দেখাচ্ছে এবং বোনাস শেয়ার দিচ্ছে। মোজাফ্ফর হোসাইন স্পিনিং মিলস ॥ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির চার বছরের মধ্যে কোম্পানি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে। ইপিএস কমে এসেছে ১.০৬ টাকা বা ৩৮ শতাংশ। আগের বছরের ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ ২০১৬ সালে মাত্র ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
×