ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে অর্থমন্ত্রী

জুলাই থেকে কার্যকর অনলাইনভিত্তিক নতুন ভ্যাট আইন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৫ মে ২০১৭

জুলাই থেকে কার্যকর অনলাইনভিত্তিক নতুন ভ্যাট আইন

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, আগামী পহেলা জুলাই হতে সরকার অনলাইনভিত্তিক নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। সরকার এ আইনটি ২০১২ সালে জাতীয় সংসদে পাস করেছে। এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য হলো কর আদায় পদ্ধতি সহজতর করা। এর ফলে ভ্যাটের আওতা ও কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং ফলস্বরূপ রাজস্ব আদায় বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি পাবে। পহেলা জুলাই থেকে পর্যায়ক্রমে অনলাইনে ভ্যাট পেমেন্ট এবং রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুরু হবে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ন্যাপের সংসদ সদস্য মিসেস আমিনা আহমেদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী আরও জানান, সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় উন্নীত করার জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। মন্ত্রী জানান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন সংস্থা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ জন্যে বেসরকারী খাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা ও সমন্বয় সাধন করছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনবল দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। ২০০৯ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনবল ছিল ১৩ হাজার ২৯৮ জন। ২০১৩ সালে তা দাঁড়ায় ২২ হাজার ৫৭ জনে। অর্থমন্ত্রী আয়কর প্রসঙ্গে জানান, আয়কর হলো সর্বোত্তম কর ব্যবস্থা। এতে আয়ের অনুপাতে কর হার বৃদ্ধি পায়, যা সম্পদের সুষম বণ্টনে মূল্যমান অবদান রাখে। সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, বর্তমান সরকারের আমলে বিগত আটবছরে করদাতাদের মধ্যে করনেটে আবদ্ধ হওয়াকে যে হয়রানি মনে করা হতো সেই পরিস্থিতি এখন পরিবর্তিত বলে প্রতিভাত হয়। দেশের উন্নয়নের জন্য কর প্রদান তরুণ প্রজন্মের কাছে আর ভয়ভীতি বা হয়রানি বলে এখন আর মনে হয় না। তিনি জানান, বর্তমানে করদাতারা মানসিকভাবে কর দিতে যেমন প্রস্তুত, তেমনি কর আদায়কারীরা কর আদায়ে হয়রানি পরিহার করে করদাতাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করা ও আস্থা রাখায় আগ্রহী। বর্তমানে এ উৎস হতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক মোট রাজস্বের ৩৭ শতাংশ। এ হারকে ২০২০-২১ সালে মোট রাজস্বের ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কর বৃদ্ধি না করে করনেট সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, উৎসে কর ফাঁকি রোধকল্পে উৎসে কর রিটার্ন অডিট করার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া কর ফাঁকি রোধে অনলাইনভিত্তিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিমুখী কর তথ্য ইউনিট গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তঃসীমানা কর ফাঁকি রোধকল্পে ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল গঠনসহ আন্তর্জাতিক কর কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
×