ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

উত্তরপত্র যাচাইয়ের নতুন পদ্ধতি সময়োচিত

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৫ মে ২০১৭

উত্তরপত্র যাচাইয়ের নতুন পদ্ধতি সময়োচিত

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষার উত্তরপত্র যাচাইয়ের নতুন সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত সময়োচিত এবং গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন করার জন্যই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা দেখার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। উত্তরপত্র মূল্যায়নে যে পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে তা সময়োপযোগী এবং এটির প্রয়োজনও রয়েছে। এতে পাসের হার কিছুটা কমে গেলেও পরীক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ে এটি যথার্থ কার্যকরী হবে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে উত্তরপত্র মূল্যায়নে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তাতে সচেতন হবে শিক্ষার্থীরা। শেখ হাসিনা পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে নতুন পদ্ধতি সংযুক্ত করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষক দ্বারা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে পরীক্ষার ফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর একে একে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের প্রধানরা প্রধানমন্ত্রীর হাতে নিজ নিজ বোর্ডের ফল হস্তান্তর করেন। আটটি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন এ বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (এসএসসি) এবং সমমানের মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে সার্বিক পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ বছর ১৭,৮১,৯৬২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে ১৪,৩১,৭২২ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ শিক্ষার্থী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে প্রতিটি শিশুরই শিক্ষায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে চায়। একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ে তুলতে সকলের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করাটা জরুরী। আধুনিক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া কোন দেশই এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে পারবে না। কৃতকার্য শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। কাজেই তারা তাদের পড়াশোনায় একটু মনোযোগী হলেই আর ফেল করবে না। প্রধানমন্ত্রী এ বছর এসএসসি পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের মাধ্যমে পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশে সমর্থ্য হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তা এবং শিক্ষাবোর্ডগুলোকেও ধন্যবাদ জানান। শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে তার সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বছরের প্রথম দিনই সরকারের উদ্যোগে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত নানারকম বৃত্তি প্রদানের ফলে অভিভাবকদের এক্ষেত্রে বোঝাটা অনেকাংশেই লাঘব হয়েছে। তিনি বলেন, তার সরকার হাওড়, দুর্গম চর এলাকা, পার্বত্য অঞ্চল এবং দ্বীপাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আবাসিক স্কুল করে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সরকার প্রদেয় শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগসমূহ কাজে লাগিয়ে শিক্ষা খাতের উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সঠিক মনোযোগ প্রদানের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারে নানারকম উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের সংস্কার এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি-উপবৃত্তিসহ বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদানের জন্য সরকার ট্রাস্ট ফান্ডও গঠন করেছে। তিনি এ সময় বিদ্যালয়গুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানে সরকারের উদ্যোগের বিষয়টিও তুলে ধরেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাতক্ষীরা এবং শেরপুর জেলার ভাল ফল করা শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।
×