ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দাপুটে জয়ে ফাইনালে এক পা জুভেন্টাসের

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ৫ মে ২০১৭

দাপুটে জয়ে ফাইনালে এক পা জুভেন্টাসের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এক মৌসুম পর আবারও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের ফাইনালে খেলার পথে জুভেন্টাস। বুধবার রাতে সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিক ফরাসী ক্লাব মোনাকোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। জুভদের হয়ে দু’টি গোলই করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড গঞ্জালো হিগুয়াইন। এই জয়ে ২০১৪-১৫ মৌসুমের পর আবারও ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে জুভেন্টাস। ৯ মে ঘরের মাঠ তুরিনে বড় কোন অঘটন না ঘটলে ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত বুফন, হিগুয়াইনদের। সঙ্গত কারণেই সেমি থেকে বিদায়ের পথে মোনাকো। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট পর্বে টানা সাতটি ম্যাচ গোলের দেখা পাননি হিগুয়াইন। তবে মোনাকোর বিরুদ্ধে দারুণ খেলে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা। তার দুটি গোলেরই নেপথ্য কারিগর ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দানিয়েল আলভেজ। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোন ম্যাচে এবারই প্রথমবার দুই গোলে সহায়তা করেছেন বার্সিলোনার সাবেক এই তারকা। এর আগে বুধবার আরেক সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ ৩-০ গোলে হারিয়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে। প্রথম লেগের এই জয়ে গ্যালাক্টিকোরাও ফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলেছে। যে কারণে ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমের পর আবারও চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দেখা যেতে পারে রিয়াল মাদ্রিদ-জুভেন্টাস ফাইনাল মহারণ। ইতিহাস উজ্জীবিত করে রেখেছিল জুভেন্টাসকে। কারণ চ্যাম্পিয়ন্স লীগে আগের দু’দেখাতে মোনাকোর বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিল তারা। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। এরপরও ফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে জুভেন্টাসের মুখোমুখি হয় মোনাকো। প্রায় ১৭ হাজার দর্শকের সামনে ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের চেপে ধরে জুভেন্টাস। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টায় ছিল সফরকারীরা। তাই ২৯ মিনিটে দুর্দান্ত লড়াইয়ের ফসল পেয়ে যায় জুভেন্টাস। আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার পাওলো দিবালার সহায়তা নিয়ে বল পেয়ে যান ব্রাজিলের রাইট ব্যাক আলভেস। সামনে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে দেখে হিগুয়াইনের উদ্দেশে ব্যাকপাস করেন তিনি। সেখান থেকে দারুণ এক শটে গোল করে জুভেন্টাসকে এগিয়ে নেন সাবেক রিয়াল তারকা। এরপর ম্যাচে ফিরতে মরিয়া আক্রমণ শাণাতে থাকে মোনাকো। কিন্তু সফল হয়নি তারা। বিরতির পরও লড়াকু মনোভাব নিয়ে খেলা শুরু করে স্বাগতিকরা। ফলে কিছুটা ছন্দহীন হয়ে পড়ে জুভেন্টাস। এই সুযোগে ৪৭ মিনিটে গোলের সবচেয়ে বড় সুযোগ পেয়ে যায় মোনাকো। পর্তুগালের মিডফিল্ডার বার্নাডো সিলভার যোগান দেয়া বলে জুভেন্টাসের জালে শট নেন কলাম্বিয়ার স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও। কিন্তু সেটি দারুণভাবে প্রতিহত করেন জুভ গোলরক্ষক ও অধিনায়ক বুফন। শুধু এটিই নয়, এরপর মোনাকোর আরও অনেকগুলো নিশ্চিত গোল প্রতিহত করেছেন বুফন। ৫১ মিনিটে আবারও আক্রমণ করে মোনাকো। মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে জুভেন্টাসের গোলমুখে জোরালো শট নেন সিলভা। এবারও প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান বুফন। ৫৫ মিনিটে আরও একটি আক্রমণ থেকে গোলের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল মোনাকো। ফ্রান্সের ডিফেন্ডার ডিব্রিল সিডিবের পাস থেকে স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে দারুণ শট নিলেও বাধা হয়ে দাঁড়ান বুফন। মোনাকোর মুহুর্মুহু আক্রমণের মাঝে পাল্টা আক্রমণ চালায় জুভেন্টাস। ৫৯ মিনিটে করা সেই আক্রমণটি শেষ পর্যন্ত গোলে পরিণত হয়। দিবালা-আলভেসের জুটি বল দেন হিগুয়াইনকে। সেখান থেকে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত হিগুয়াইন বলেন, এ ম্যাচ জয়ের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। দলের সকলের মনের মধ্যে ছিল শুধুই জয়। জয় ছাড়া কিছুই ভাবছিল না কেউই। মোনাকো দারুণ খেলেছে। তবে আমরা তাদের চেয়ে ভাল ফুটবল খেলেছি। আগামী সপ্তাহেও আরও ভাল ফুটবল উপহার দিব আমরা। ভক্তদের জয় উপহার দিয়ে তাদের সামনেই ফাইনালের টিকেট কেটে ফেলব। অথচ এই ম্যাচের আগে নকআউট পর্বে হিগুয়াইন সর্বশেষ গোল করেছিলেন ২০১৩ সালে। সেটা ছিল ওই বছরের ৩ এপ্রিল। তারপর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট পর্বে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পরবর্তী গোল করলেন ২০১৭ সালের ৩ মে। হিগুয়াইন ও বুফনই মূলত ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন। সেটা মানছেন মোনাকো কোচ লিওনার্ডো জারডিমও। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন হিগুয়াইন ও বুফন। হিগুয়াইন গোল করেছে। আর আমাদের একের পর এক গোলের সুযোগগুলো নষ্ট করেছে বুফন। আসলে বুফনই আমাদের ম্যাচে ফিরতে দেয়নি এবং শেষ পর্যন্ত হারিয়ে দিয়েছে।
×