ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাইওনিয়ার ফুটবল লীগ শুরু শনিবার

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ৫ মে ২০১৭

পাইওনিয়ার ফুটবল লীগ শুরু শনিবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অঙ্কুর থেকে হবে মহীরুহ। আজকের কিশোর ফুটবলার আগামীতে হবে তারকা ফুটবলার। খেলবে বড় ক্লাবে, জাতীয় দলে। ফুটবল খেলে আয় করবে ঈর্ষণীয় অঙ্কের অর্থ। ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ অংশের অনুর্ধ-১৬ বয়সী ফুটবলারদের এমন স্বপ্নই দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হচ্ছে ‘ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি কর্পোরেশনের একটি যৌথ উদ্যোগ। যার নাম পাইওনিয়ার ফুটবল লীগ। দেশীয় ফুটবলের সূতিকাগার বলা হয় এটিকে। এখান থেকেই বের হয়ে আসা প্রতিভাবান ফুটবলাররা ধাপে ধাপে ওপরের স্তরে খেলার সুযোগ পান। এর আরেকটি পরিচয় আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল লীগের আসর। এই ফুটবল আসর শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার থেকে। এবারের লীগে অংশ নিচ্ছে ৭১ দল (যদিও অংশ নেয়ার কথা ছিল ৮৫টি দলের)। এর মধ্যে ঢাকা সিটির দল ৪৭ এবং ঢাকা সিটির বাইরের দল ২৪টি। মোট ৫টি জোনে খেলা হবে (কেন্দ্রীয়, উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম)। খেলার ভেন্যু পাঁচটিÑ মিরপুর গোলারটেক মাঠ, গেন্ডারিয়ার ইস্ট এ্যান্ড ক্লাব, রাজউক সংলগ্ন আউটার মাঠ, বাসাবো ক্লাব মাঠ এবং টঙ্গী শহীদ আহসানউল্লাহ্ মাস্টার স্টেডিয়াম। এর মধ্যে আউটার এবং বাসাবো মাঠের অবস্থা খারাপ- এমনটা স্বীকার করে নিয়েছেন বাফুফের সদস্য শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেন তিনি। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, সদস্য এবং পাইওনিয়ার ফুটবলের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমিত খান শুভ্র এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা আফজালুর আজম রেজা। প্রতিটি প্রেস কনফারেন্সই আধাঘণ্টা থেকে একঘণ্টা দেরিতে শুরু করাটা বদভ্যাসে বানিয়ে ফেলেছে বাফুফে। বৃহস্পতিবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। প্রেসমিট শুরু হতে দেরি হওয়ার একপর্যায়ে ধৈর্য হারিয়ে সাংবাদিকরা সভাকক্ষ ছেড়ে চলে যেতে উদ্যত হলে ভোজবাজির মতো দৃশ্যপটে উদয় হন বাফুফের ‘সুযোগ্য’ কর্মকর্তারা। তারা বরাবরের মতোই দেরি করার জন্য সাফাই গান এবং ক্ষমা চান। এইবার ক্ষমা চাওয়াটাও তাদের জন্য ‘ডালভাত’ হয়ে গেছে। যা পরিণত হয়েছে চরম বিরক্তিকর এবং হাস্যকর ব্যাপারে। এখানেই শেষ নয়, পাইওনিয়ার ফুটবলের আসরটি অনুষ্ঠিত হয় নকআউট পদ্ধতিতে অথচ এর নাম দেয়া হয়েছে পাইওনিয়ার লীগ। এই মস্ত বড় ভুলটি বাফুফে করে আসছে সেই ১৯৮০ থেকেই। এই ফুটবল আসরে ৭১ ক্লাব খেলবে দশ গ্রুপে। প্রতি গ্রুপ থেকে সুপার লীগে উঠবে ২টি করে দল (চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ)। সুপার লীগে ৪টি গ্রুপে খেলবে ২০টি ক্লাব। প্রতি গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে ২টি করে মোট আটটি দল। এখান থেকে সেমিফাইনালে যাবে চারটি দল। সেমিফাইনালিস্ট চারটি দলই পরের মৌসুম থেকে খেলবে তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লীগে। ইতোমধ্যেই খেলোয়াড়দের বয়স যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই কার্যক্রমে অংশ নেয় মোট ৪৭৫০ ফুটবলার। এদের মধ্যে থেকে উত্তীর্ণ হয় ২২৭০ ফুটবলার। শনিবার উদ্বোধনী দিনে তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আলাদা আলাদা ভেন্যুতে ম্যাচগুলো একই সময়ে (দুপুর সোয়া ২টায়) শুরু হবে। বাসাবোতে ‘ক’ গ্রুপে সানরাইজ স্পোর্টিং ক্লাব মুখোমুখি হবে নরসিংদী ফুটবল একাডেমির। গোলারটেক মাঠে নাসির ফুটবল একাডেমি মোকাবেলা করবে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের। এছাড়া ইস্ট এ্যান্ড ক্লাব মাঠে মাদারবাড়ী শোভানিয়া ক্লাব চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে ঝিলমিল ফুটবল একাডেমির। কোন কারণে খেলা বন্ধ থাকলে ওই খেলাটি বডিলি শিফট হয়ে পরেরদিন অনুষ্ঠিত হবে। একইভাবে ফিক্সচারের বাকি ম্যাচগুলোও বডিলি শিফট হবে। পাইওনিয়ার ফুটবল লীগ মূলত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের একটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা। দেশের সব থেকে বড় এই লীগ থেকে বের হয়ে আসছে আগামীদিনের তারকা ফুটবলাররা। বাফুফে সিলেট ফুটবল একাডেমির যাত্রা শুরু হয়েছিল পাইওনিয়ারের ক্ষুদে প্রতিভাবান ফুটবলারদের নিয়েই। পাইওনিয়ারের সাফল্য তাদের ফুটবলারদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশ দলটিই জিতেছিল সাফ অনুর্ধ-১৬ টুর্নামেন্ট।
×