ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নকল পেট লাগিয়ে গর্ভবতী

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৪ মে ২০১৭

নকল পেট লাগিয়ে  গর্ভবতী

বর্তমানে ভারতে নকল পেটের চাহিদা তুঙ্গে। সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান লাভ করছেন যে দম্পতি, সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই স্ত্রী নকল পেটের সাহায্যে নিজেকে গর্ভবতী বলে পরিচয় দিচ্ছেন। ‘সিলিকন প্রেগন্যান্সি বেলি’ বা সিলিকনের পেট শরীরে বেঁধে নেয় নারীরা। এক থেকে আট মাস পর্যন্ত গর্ভাবস্থার বিভিন্ন মাপের সিলিকন পেট বাজারে পাওয়া যায়। হাত দিলেও আসল-নকল বোঝার সাধ্য নেই। কিন্তু এই লুকোচুরির দরকার হচ্ছে কেন? শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার দরুন যারা নিজের গর্ভে সন্তান ধারণ করতে পারেন না, সারোগেসি বা গর্ভদাত্রী মায়ের মাধ্যমে সন্তান পাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাদের অনেককে এই নকল পেট লাগাতে হচ্ছে সামাজিক ছুঁতমার্গের আতঙ্কে আর পারিবারিক গোঁড়ামিকে পাশ কাটাতে। পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় প্রস্থেটিস্ট সুমিত্রা অগ্রবাল জানিয়েছেন, যখন থেকে সারোগেট বা গর্ভদাত্রী মা সন্তান ধারণ শুরু করেন সেই সময় থেকে প্রকৃত মা সিলিকনের পেট নিজের শরীরে লাগিয়ে নেন। শুধু ২০১৬ সালেই সুমিত্রা দেশ-বিদেশে এমন ৫৫ জনকে নকল পেট সরবরাহ করেছেন। দাম ১২ হাজার টাকা থেকে শুরু। তার গ্রাহকের মধ্যে অবাঙালী বেশি, তবে বাঙালীও আছেন। অধিকাংশই ব্যবসায়ী পরিবারের। আছেন ডাক্তার, শিক্ষক, আমলা, ব্যাংককর্মীও। সম্প্রতি সাত-আট মাস গর্ভাবস্থার মতো ‘পেট’ চেয়েছেন বত্রিশ বছরের এক শিক্ষিকা। তার চার-পাঁচ মাসের পেট খুলে এই নতুন পেট লাগানো হবে। সল্টলেকের এক ডাক্তারের স্ত্রী বলেন, প্রতি তিন মাস অন্তর পেট বদলানোর সময় দিন দশেকের জন্য কোথাও ঘুরে আসতাম। যাতে বাড়ির লোকের মনে না হয় যে, পেটটা হঠাৎ বেশি উঁচু হয়ে গেছে। নাইজিরিয়ায় প্রবাসী এক মহিলার আবার দরকার এক মাসের পেট। সেই পেট লাগিয়ে স্কাইপে তিনি দিল্লীতে থাকা শাশুড়িকে দেখাবেন। বালিগঞ্জের এক গৃহবধূর কথায়, আমি আর আমার বাচ্চার সারোগেট মা একই সময়ে একই হাসপাতালে ভর্তি হই। ওঁর ডেলিভারি হলো, আর আমি পেটটা এমনি কাটিয়ে সেলাই করে নিলাম। বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ রোহিত ঘুটঘুটিয়ার কথায়, সমাজ পিছিয়ে, তাই আড়াল খোঁজা। আর এক বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রাণী লোধও বলেন, সমাজের মানসিকতা কিছুতেই পাল্টানো যাচ্ছে না। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
×