ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারপ্রধান ভুল সিদ্ধান্ত দেন, দুঃখী মানুষের কথা আমি বলি ॥ সিনহা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৪ মে ২০১৭

সরকারপ্রধান ভুল সিদ্ধান্ত দেন, দুঃখী মানুষের কথা আমি  বলি ॥ সিনহা

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট, ৩ মে ॥ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, আমার সঙ্গে রাষ্ট্রের বা সরকারের কোন বিরোধ নেই। আমি চাই আইনের শাসন। বর্তমান সরকারও তাই চায়। সংবিধানেও তাই আছে। আইনের শাসন বাধাগ্রস্ত হলে আমি কথা বলি। আর এসব বিষয় সরকার প্রধানের কাছে ভুল ব্যাখ্যা পৌঁছায়। তাই সরকার প্রধান ভুল সিদ্ধান্ত দেন। সাধারণ মানুষ অনেক দুঃখে থাকেন। বিচারপতি হিসেবে সময়কালে আমি তাদের কথা বলি। তখন আমার বক্তব্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়। মঙ্গলবার জয়পুরহাট আইনজীবী ভবনে জেলা আইনজীবী সমিতির দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ ম-ল পিপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন প্রবীণ আইনজীবী খাজা জহুরুল হক ও মোমিন আহমেদ চৌধুরী জিপি প্রমুখ। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, সরকার প্রধানকে সরকারের সঙ্গে থাকা কিছু লোক ভুল তথ্য দিয় বিভ্রান্ত করে, অন্ধকারে রাখে। ফলে সরকার প্রধান হিসাবে ভুল সিদ্ধান্ত তিনি দেন। আর তাতেই নানা বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সাধারণ মানুষের অনেক দুঃখ কষ্ট থাকে। তারা সরকার প্রধানের কাছে যেতে পারেন না নিরাপত্তা বলয় ভেঙ্গে। সেই সাধারণ মানুষের কথাগুলি বিচারপতি হিসেবে সময়কালে আমি বলি। প্রত্যেক সরকারের সময় কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করেন, যা দেশের ক্ষতি ডেকে আনে। গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন নিরীহ জনগণ নিপীড়িত হয়। সংবর্ধনা সভায় প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকলে আইনের শাসন থাকে না। আমাদের দেশে পর পর দুইবার সামরিক শাসনের ফলে গণতন্ত্রের স্তম্ভ ভেঙ্গে পড়েছিল। ফলে জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তিনি বলেন, সুপ্রীমকোর্ট শাসনতন্ত্রের অভিভাবক। আর আমি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শাসনতন্ত্রকে সংরক্ষণ করি। আমার সঙ্গে একটু আলোচনা করা হলে যে ভুল ভ্রান্তিগুলো নিয়ে সরকার, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা দূর হয়ে যেত। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আমি প্রধান বিচারপতি হিসেবে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের কিছু ত্রুটি নিয়ে কথা বলি এবং ভারতের পুলিশ বিভাগের একটি তদন্তের উদাহরণ তাদের সামনে তুলে ধরি। তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নরসহ কিছু উচ্চ পর্যায়ের সংস্থার সঙ্গে কথা বলে ন্যায়বিচারের বিষয়গুলো আলোচনা করি এবং ত্রুটিগুলি পরিবর্তন করার পরামর্শ দেই। এরপর তিনি বিকেলে দেশের অন্যতম ধর্মীয় পীঠস্থান জয়পুরহাটের বেল আমলার দ্বাদশ শিব মন্দির পরিদর্শন করেন। তিনি বিকেলে সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক আলোচনা সভায় মিলিত হন।
×