ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মেট্রোরেলের ডিপোর পূর্ত কাজ ও স্টেশন নির্মাণে ৩ চুক্তি সই

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ৪ মে ২০১৭

মেট্রোরেলের ডিপোর পূর্ত কাজ ও স্টেশন নির্মাণে ৩ চুক্তি সই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেট্রোরেলের ডিপো এলাকার পূর্ত কাজ এবং উত্তরা (উত্তর) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভায়াডাক্ট ও নয়টি স্টেশন নির্মাণে তিনটি চুক্তি সই করেছে সরকার। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে মেট্রোরেলের প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন এবং নির্মাণকারী দুই প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তোয়াত চাই সুথি রাপা চুক্তিতে সই করেন। প্রকল্পের প্যাকেজ ২, ৩ ও ৪ এর আওতায় এসব স্থাপনা নির্মাণে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্যাকেজ-২ এর চুক্তি মূল্য প্রায় এক হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। এই প্যাকেজের আওতায় ডিপো এলাকার পূর্ত কাজ করা হবে। ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরশন লিমিটেড জেভির সঙ্গে এ চুক্তি হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে; এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দেবে জাইকা। বাকি পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা জোগাবে সরকার। গত ২৮ এপ্রিল ভূমি অধিগ্রহণের বিশেষ বিধান রেখে মেট্রোরেল সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন পায়। মেট্রোরেল প্রকল্প পরিচালক মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এই প্যাকেজের আওতায় নির্মাণ হবে স্টাবলিং ইয়ার্ড (বিরতিতে ট্রেন রাখার স্থান), ট্রেন মেরামত ও ওভারহোলের মালামালের গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপ, অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার, ট্রেন ইন্সপেকশন, জেনারেটর ও ইলেকট্রিক্যাল ভবন, ট্রেন ওয়াশ স্থাপনা, ম্যানুয়াল ট্রেন ওয়াশিং, বহুতল কার পার্কিং ও গ্রিন স্পেস। এছাড়া প্যাকেজ ৩ ও ৪ এর আওতায় উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এই দুই প্যাকেজের চুক্তিমূল্য প্রায় চার হাজার ২৩০ কোটি টাকা। এই দুই প্যাকেজের কাজের জন্য চুক্তি হয়েছে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে। চুক্তি সইয়ের পর সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প ৮টি প্যাকেজ বাস্তবায়িত হচ্ছে, প্যাকেজ ২, ৩, ৪ এর চুক্তি স্বাক্ষর হলো। ঘোষণা আগামী ২০১৯ সালে মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক পরিচালনা শুরু সম্ভব হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হলি আর্টিজান ঘটনার পর মেট্রোরেলের কাজ কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছিল। তাদের সাতজন কনসালটেন্ট নৃশংস হত্যাকা-ের শিকার হওয়ায় গতি স্থিমিত হয়ে যায়। প্রায় ছয় মাসের মতো পিছিয়ে গেছি। এখন আবার পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। এখন থেকে কাজ কোন বিঘœ ঘটবে না বলেও জানান তিনি। প্রকল্পের কাজ চলার সময় জনগণের ভোগান্তি সহনীয় মাত্রায় রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। মেট্রোরেল প্রকল্পের প্যাকেজ-১ এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে এবং ইতোমধ্যে এর ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৯ সালে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রতি চার মিনিট পরপর এক হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল; ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী। রাস্তার মাঝ বরাবর ওপর দিয়ে মোট ২৪ জোড়া মেট্রোরেল চলাচল করবে রাজধানীতে। উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই মেট্রোরেল, সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম। প্রতি মেট্রোরেলে ৬টি কোচ থাকবে। প্রতি স্কয়ার মিটারে আটজনের হিসাবে ব্যস্ততম সময়ে ১ হাজার ৮০০ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। মোট ১৬টি স্টেশন হবে মেট্রোরেলের। এগুলো হবে- উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়নি, পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ড বিএনপির আছে। কারণ তারা দুর্নীতি করে। আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করে না বলেই পালাতে হয় না। খালেদা জিয়ার দুই ছেলেও পালিয়ে গিয়েছিল। ৯ বছর ধরে প্রবাসে আছে একজন। তিন বলেন, সহায়ক সরকার বলতে পৃথিবীতে কিছু নেই। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সংবিধান অনুসারে। নির্বাচনে অংশ নেয়া খালেদা বা বিএনপির অধিকার। কারও করুণা নয়। তারা নির্বাচনে আসলে হেরে যাবে বলেই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, খালেদা জিয়ার এক ছেলে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছে। আরেক ছেলে পালিয়ে গিয়েই মৃত্যুবরণ করছে। বিএনপি পালিয়েই যায়। এ রেকর্ড তাদের রয়েছে। তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপির ষড়যন্ত্রের কারণে হরে যায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় এসে আহসানউল্লাহ মাস্টার, কিবরিয়াসহ আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে খুন করেছে বিএনপি।
×