ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে উচ্ছেদের কবলে আদিবাসী ১৫ পরিবার

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৪ মে ২০১৭

নাটোরে উচ্ছেদের কবলে আদিবাসী ১৫ পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৩মে ॥ নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগরে বজলুর রশিদ খাসজমি দখল নিতে পুলিশের সহায়তায় আদিবাসী সিং সম্প্রদায়ের ১৫টি পরিবারকে উচ্ছেদ করেছে। বাধা দিতে গেলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে বেশ কয়েক আদিবাসীকে নির্যাতন করেছে পুলিশ। পূর্ব মাধনগর গ্রামে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। সহায়সম্বল হারিয়ে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে উচ্ছেদ আদিবাসী পরিবারগুলো। এদিকে আদিবাসীদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে নাটোর প্রেসক্লাবের সামনে বুধবার দুপুরে মানববন্ধন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। বক্তারা আগামী ৩০ মের মধ্যে উচ্ছেদ আদিবাসীদের সেখানে পুনর্বাসন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ ভূমিহীন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ১৫টি পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারকাঁটা দিয়ে ওই জায়গা ঘিরে দেয়া হয়েছে। বসতবাড়ি উচ্ছেদের সময় সময়াভাবে তারা তাদের সম্পত্তি, মালামাল সরিয়ে নিতে না পারায় দুর্ভোগ চরমে দাঁড়িয়েছে। রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া সব বন্ধ রয়েছে। এক শ’ বছর ধরে বসবাসরত আদিবাসী পরিবারগুলোর বসতভিটা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়ে উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে করন সিং, বাসনা সিং, মঙ্গল সিং, পুতুল রানীসহ অসংখ্য নারী-পুরুষকে। পরিবারগুলোর অভিযোগ, কোন আগাম নোটিস না করেই তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দুপুরে খাবারও খেতে দেয়া হয়নি। এমনকি খাদ্যসামগ্রী বা মূল্যবান জিনিসপত্রও বের করতে দেয়নি বলে অভিযোগ তাদের। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, পূর্ব মাধনগর গ্রামের ডিগ্রী কলেজের পেছনে ৩০ শতক খাস জমির ওপর ১৯৪০ সাল থেকে আদিবাসী সিং সম্প্রদায়ের ৯টি পরিবার বসবাস করে আসছিল। বর্তমানে সেখানে পরিবারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫টি। পরবর্তীতে ওই ৩০ শতক খাস জমি আদিবাসীরা সরকারের কাছ থেকে পত্তন পায়। কিন্তু ১৯৬৮ সালে বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী ৩০ শতক খাস জমিসহ মোট ৫০ শতক জমি ওই গ্রামের বজলুর রশিদের বাবা ইমাজ উদ্দিনের সঙ্গে বিনিময় করেন।
×