ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির কর্মিসভায় সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৪ মে ২০১৭

বিএনপির কর্মিসভায় সংঘর্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, চট্টগ্রাম, ৩ মে ॥ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার পর এবার দক্ষিণ জেলা বিএনপির কর্র্মিসভায়ও ঘটেছে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা। এতে দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রাক্তন সহসভাপতি এনামুল হক এনামসহ আহত হয়েছেন ৩০ জন। এর মধ্যে দু’জনকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে চমেক হাসপাতালে। বুধবার বেলা ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার- আরাকান মহাসড়কের পটিয়া সদরের ইন্দ্রপোল এলাকায় একটি কনভেন সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সভাও প- হয়েছিল বিবদমান দু’গ্রুপের সংঘর্ষে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কর্মিসভায় সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- প্রাক্তন সহসভাপতি এনামুল হক এনাম, রোকন, ইয়াছিন আরাফাত, বাবু, আহমদ নবী, আবু হানিফ, মনছুর, মানিক, এরশাদ, মামুনুর রশিদ, রকি, সেলিম ও মহিউদ্দিন। এর মধ্যে মানিক ও আহমদ নবীকে প্রথমে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে আশঙ্কাজন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও পটিয়ার সাবেক এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েল এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হক এনামের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক পর্যায়ে এনামের অনুসারীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-আরকান মহাসড়কে ৫০ গাড়ি ভাংচুর করে এবং রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। বিবদমান দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মিসভার প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম সভাস্থল ছেড়ে চলে যান। ঘটনার পর পরই পুলিশ আকবর নামের (২০) এক যুবককে আটক করেছে। তিনি উপজেলার বুধপুরা গ্রামের মোতাহের উল্লাহর পুত্র। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া বিএনপি তিন গ্রুপে বিভক্ত। যে তিন নেতার নেতৃত্বে এ বিভক্তি তারা হলেন সাবেক এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েল, বিএনপির প্রাক্তন সহসভাপতি এনামুল হক এনাম এবং ইদ্রিস মিয়া। তিন গ্রুপ এতদিন পৃথক পৃথকভাবে কর্মসূচী পালন করে আসছিল। ঝিনাইদহে আহত ১৫ নিজস্ব সংবাদদাতা ঝিনাইদহ থেকে জানান, বিএনপির প্রতিনিধি সভায় হামলা, ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। বুধবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের ডাঃ কে আহম্মদ পৌর কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীনের প্রতিনিধি সভা চলছিল। সভায় কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদের সমর্থকদের সভাস্থলে ঢুকতে জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমানের সমর্থকরা বাধা দিলে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে বিএনপি নেতৃবৃন্দ পাল্টা-পাল্টি বক্তব্য দিয়েছেন। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভা শুরু হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন। এছাড়া সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত ইসলাম, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপি নেতা মনির খান, স্থানীয় বিএনপির সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব, শহিদুজ্জামান বেল্টু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শুরু হলে কমিউনিটি সেন্টারের বাইরে থেকে বিএনপির এক গ্রুপ এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের নামে সেøাগান দিয়ে প্রতিনিধি সভায় ঢোকার চেষ্টা করে। তাদের মসিউর রহমান সমর্থকরা ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। ভেতরে ঢুকতে হলে মসিউর রহমানের অনুমতি লাগবে বলে তাদের জানিয়ে দেয়। এরপর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আসাদ সমর্থিতরা হট্টগোল শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা কমিউনিটি সেন্টারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। মসিউর রহমান ও আসাদ সমর্থকদের মধ্যে বাইরে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। সমাবেশের ভেতরেও দু’গ্রুপের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও হাতা-হাতি শুরু হয়। সে সময় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলায় ইটপাটকেল ও কমিউনিটি সেন্টারের জানালার কাচ ভেঙ্গে ১৫ জন আহত হয়। আহত ৯ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দেড় ঘণ্টা প্রতিনিধি সভা চলে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হৈ হট্টগোলের মধ্য দিয়ে বিএনপির প্রতিনিধি সভা শেষ করে নেতৃবৃন্দ সভামঞ্চ ত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন সমাবেশে বলেন, আমাদের সভাকে বানচাল করার জন্য বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এখানে ইটপাটকেল ছুড়ে কাচ ভেঙ্গে বহু লোককে আহত করেছে। জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, এ্যাডভোকেট আসাদ শৈলকুপা থেকে লোকজন নিয়ে এসে শান্তিপূর্ণ প্রতিনিধি সভায় হট্টগোল সৃষ্টি করেছে। যারা হামলা ভাংচুর করেছে তারা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট হয়ে করেছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
×