ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৪ মে ২০১৭

নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে গত ৮ বছরে বেশকিছু সাফল্য এলেও নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। অর্জিত হয়নি ২০১৫ সালে এ উৎস থেকে ৫ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা। সম্ভাবনা থাকার পরও জমির সীমাবদ্ধতা আর প্রকল্প স্থাপনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এগোতে পারছে না নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত। এ অবস্থায় ২০২০ সালের মধ্যে এ উৎস থেকে ১০ শতাংশ বা ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। ১৯৬২ সালে কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীর ওপর ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন জলবিদ্যুত কেন্দ্র চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির যাত্রা শুরু। আশির দশকে স্থাপনাটির উৎপাদন ক্ষমতা উন্নীত হয় ২৩০ মেগাওয়াটে। বর্তমানে দেশের একমাত্র এই জলবিদ্যুত কেন্দ্রটিই নবায়নযোগ্য জ্বালানির সবচেয়ে বড় উৎস। আর সৌরবিদ্যুত থেকে যোগান আসছে ১৯৭ মেগাওয়াটের। বিশ্বে বায়ুবিদ্যুতের উৎপাদন দিন দিন বেড়ে চললেও বাংলাদেশে তা এখনও পাইলট প্রকল্পেই সীমাবদ্ধ। ২০১৫ সালেই নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৫ শতাংশ বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখনও তা রয়ে গেছে ৩ শতাংশের নিচে। দেশে বিদ্যুতের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৫৫১ মেগাওয়াট। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ৪৩১ মেগাওয়াট। আর বিদ্যুত খাতে নবায়নযোগ্য শক্তির অবদান ২.৭৭ শতাংশ। সৌরবিদ্যুত প্রকল্প স্থাপনে বিশাল আয়তন জমির প্রয়োজন। কিন্তু দেশে জমির দুষ্প্রাপ্যতা প্রকট। তার ওপরে আছে প্রকল্প স্থাপনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এসব কাটানো গেলে এ খাতে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুত আমদানির কথা বলা হলেও নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি। এ অবস্থায় ২০২০ সালে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুত সংস্থানের পরিকল্পনা শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক এসএম ফরমানুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু সোলার নির্ভর করে এইটা অর্জন করা সম্ভব হবে না। একটা পাওয়ার প্ল্যান্ট করতে হলে এসিল্যান্ডের কাছে যেতে হচ্ছে ডিসির কাছে যেতে হচ্ছে। একটা কিছু করার জন্য প্রতি ঘাটে ঘাটে যদি এমন কষ্ট করতে হয় তাহলে সমস্যা।’ তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, চ্যালেঞ্জিং হলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব নয়। আর বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার ওপর। টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, আমাদের এই টার্গেটটা খুব একটা কঠিন হবে না তবে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট সরকার স্বাক্ষর করেছে। তাতে বড় সোলার প্ল্যান্ট আসছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সাইফুল হক বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠানে যারা আছে তাদের আরও নিষ্ঠাবান হতে হবে বিদেশী বিনিয়োগ করার জন্য বসে আছে। শুধু আমাদের ঠিকমতো পলিসি এবং টারিফ নির্ধারণ করে দিতে হবে।
×