ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি আবার আসিব ফিরে-জীবনানন্দ দাশ

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ৪ মে ২০১৭

জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি আবার আসিব ফিরে-জীবনানন্দ দাশ

মোঃ সেলিম আদ্-দীন পরিচালক শিকড় একাডেমি (একাডেমিক কেয়ার), ১২২, মনেশ্বর রোড, ঝিগাতলা, ঢাকা। মোবাইল: ০১৯১৪২০৪২৯৩ প্রিয় শিক্ষার্থী, শিকড় একাডেমির পক্ষ থেকে তোমাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজ তোমাদের জন্য দেওয়া হল “আবার আসিব ফিরে” কবিতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও তার উত্তর, যা তোমাদের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিরাট সহায়ক হবে। বাংলার হাওয়া বাংলার জল হৃদয় আমার করে সুশীতল এত সুখ শান্তি এত পরিমল কোথা পাব আর বাংলা ছাড়া। ক. ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতাটি কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে? খ. ‘আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে’ - বলতে কী বোঝানো হয়েছে? গ. উদ্দীপক অবলম্বনে ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দাও। ঘ. ‘কোথা পাব আর বাংলা ছাড়া’- কথাটির সঙ্গে কবি জীবনানন্দ দাশের বাংলায় ফিরে আসার আকাক্সক্ষা কীভাবে সম্পর্কিত- আলোচনা কর। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর ক. ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতাটি ‘রূপসী বাংলা’ কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। খ. ‘আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে’- এই উক্তি দ্বারা কবি বুঝাতে চেয়েছেন যে মৃত্যুর পরও বাংলার প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গে কবির উপস্থিতি থাকবে। কবি এদেশের প্রকৃতি ও জীবনধারাকে এত ভালোবেসেছেন যে, তাঁর বিশ্বাস মৃত্যুর পরও এই সম্পর্ক অটুট থাকবে। মৃত্যুর পর কবি অন্যরূপে শঙ্খচিল, শালিক বা লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে এই বাংলার প্রকৃতির কাছাকাছি বসবাস করবেন। বাংলার প্রকৃতির এই সব সত্তার মধ্যেও কবিকে খুঁজে পাওয়া যাবে। গ. উদ্দীপকের কবিতাংশ এবং ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা করা হয়েছে। বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। যুগের পর যুগ কবিরা এদেশের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে কাব্য রচনা করেছেন। প্রকৃতির সৌন্দর্যের নানা দিক বাণীরূপ দিয়েছেন তাঁদের কবিতায়। উদ্দীপকে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলতে গিয়ে কবি বলেন, বাংলার বাতাস কবির হৃদয় সুশীতল করে। কবির হৃদয়ে প্রশান্তির ছোঁয়া বুলিয়ে দেয়। এছাড়া বাংলার জলে তৃপ্ত হয় তৃষ্ণার্ত আত্মা। এত সুখ এ বাংলা ছাড়া আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। কবিতাটিতেও বাংলার অপরূপ এ রূপের বা সৌন্দর্যের প্রকাশ দেখা যায়। কবি বলেছেন- ‘কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল ছায়ায়, হয়তো বা হাঁস হব- কিশোরীর ঘুঙুর রহিবে লাল পায়।’ ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায়ও কবি বাংলার প্রকৃতির বিভিন্ন দিককে তাঁর কবিতায় তুলে ধরেছেন। এদেশের নদী, পাখি, মাঠ-ঘাট সবকিছুর মধ্যেই তিনি নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। বাংলার ভোরের কাক থেকে শুরু করে শালিক, শঙ্খচিল, এমনকি সন্ধ্যার আকাশে উড়ন্ত সুদর্শনও কবিকে মুগ্ধ করেছে। বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ কবি প্রকৃতির মধ্যেই মিলেমিশে একাকার হয়েছেন। উভয় কবির অনুভবেই বাংলার প্রকৃতির তুলনা প্রকাশ পেয়েছে। ঘ. উদ্দীপকের ‘কোথা পাব আর বাংলা ছাড়া’ কথাটি কবি জীবনানন্দ দাশের প্রকৃতির অনুষঙ্গ হয়ে আবার বাংলায় ফিরে আসার আকাক্সক্ষার সাথে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। যুগের পর যুগ কবিরা এদেশের প্রেমে মুগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের কাছে মনে হয়েছে এত সুন্দর দেশ আর কোথাও নেই। বাংলার নদী, মাঠ, ক্ষেত, সকালের কুয়াশা, কলমির গন্ধভরা জল, সাদা বক হয়ে মেঘের কোলে ঘুরে বেড়ানো সবই কবিকে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নেশায় মাতাল করেছে। কবি বাংলার এই অপরূপ রূপ কখনো ভুলতে পারবেন না। তাই কবি জীবনানন্দ দাশ মৃত্যুর পরও আবার বাংলায়ই ফিরে আসতে চান। মানুষ না হয়ে শালিক, শঙ্খচিল বা কাক হয়ে বাংলায় ফিরে আসতে পারলেও কবি খুশি। তেমনি উদ্দীপকের কবিও বাংলার রূপে মুগ্ধ। বাংলার জল, হাওয়া কবির হৃদয়কে সুশীতল করে। কবির দেহ ও মনে ছড়িয়ে দেয় প্রশান্তির অনুভূতি। বাংলা ছাড়া আর কোথাও এমন সুখ-শান্তি পাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তাই এ কথা বলা যায় যে, গভীর দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি অপরিসীম আবেগের দিক দিয়ে ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতার কবি এবং উদ্দীপকের কবির আকাক্সক্ষা ও অনুরাগ সাদৃশ্যপূর্ণ।
×