ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রিডে বড় বিপর্যয়

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৩ মে ২০১৭

গ্রিডে বড় বিপর্যয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আকস্মিক গ্রিড বিপর্যয়ে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমের জনপদের ৩২ জেলা মঙ্গলবার কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন ছিল। আকস্মিক বিপর্যয় এ দিন সন্ধ্যার আগেই শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ-পিজিসিবি। রাজশাহী-রংপুর এবং খুলনা-বরিশাল থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, দিনের শেষভাগে এসে বিদ্যুতের সরবরাহ পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে এই এলাকার ২৭ বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি ভারত থেকে আমদানি করা ৫০০ মেগাওয়াট কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল। ২০১৪ সালের ১ নবেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সঞ্চালন লাইনের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাতে এ ধরনের বিপর্যয়ের কারণে সারাদেশ বিদ্যুতহীন হয়ে পড়ে। এরপর দেশে বড় রকমের বিদ্যুত বিপর্যয় ঘটল মঙ্গলবার। বিদ্যুত জ¦ালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ঝড়ের কারণে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশি সময় প্রয়োজন হবে না। জানতে চাইলে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী মঙ্গলবার বলেন, ঝড়ের কারণে একটি টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ে। এতে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের একটি সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে দেশের এ অঞ্চলে আরেকটি সঞ্চালন লাইন দিয়ে বিদ্যুত বিতরণ চলছিল। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারটি মেরামতের কাজ চলছিল। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় সঞ্চালন লাইনটি অতিরিক্ত লোড সহ্য করতে না পেরে ট্রিপ করে। এতে সাময়িকভাবে বিদ্যুতহীন হয়ে পড়লেও পরিস্থিতি বিকেল থেকে স্বাভাবিক হয়ে গেছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের জাতীয় গ্রিডের বিপর্যয়ের কারণ উদ্ঘাটনে পিজিসিবির প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন) কামরুল হাসানকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী পাঁচদিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহ করার জন্য ২৩০ কিলো ভোল্টের (কেভি) দুটি সঞ্চালন লাইন রয়েছে। এ দুটি হলোÑ আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে ও ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদী। সোমবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার কালিপুরে একটি বিদ্যুতের টাওয়ার ভেঙ্গে পড়লে আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জ সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহ ঠিক রাখতে ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইনটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। এ সঞ্চালনটিতে এককভাবে পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুত সরবরাহ করতে গিয়ে অতিরিক্ত বিদ্যুত সরবরাহের চাপে বা লোডের মধ্যে পড়ে। এই বাড়তি চাপ সহ্য করতে না পেরে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইনটি ‘ট্রিপ’ করে বা বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের ৩২ জেলা বিদ্যুতহীন হয়ে পড়ে। পিজিসিবি দাবি করছে মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলের দুটি সঞ্চালন লাইন আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে ও ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদীতে পুনরায় বিদ্যুত সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে উত্তর ও পশ্চিমের ৩২ জেলায় বিদ্যুত পরিস্থিতি সাভাবিক হতে শুরু করে। পিজিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে গ্রিড দুটি চালু করতে সক্ষম হয় পিজিসিবি। এরপর ধীরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ করা শুরু হয়। সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী এলাকার অধিকাংশ বিদ্যুতকেন্দ্র চালু হয়। তবে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়াসহ কয়েকটি বড় কেন্দ্র চালু হতে একটু সময় লাগবে বলে জানিয়েছে পিডিবি। তবে রাতের মধ্যে পুরো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানা গেছে। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডে-পিডিবি তথ্যানুযায়ী, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে দুই হাজার ২৪৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার মোট ২৭টি বিদ্যুত কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া আন্তঃদেশীয় গ্রিড লাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আসে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হয়ে। পিজিসিবির ওই চার জোনে মোট ৩২টি জেলা রয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালের ১ নবেম্বর বাংলাদেশ-ভারত সঞ্চালন লাইনের কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাতে এ ধরনের বিপর্যয়ে কারণে সারাদেশ বিদ্যুতহীন হয়ে পড়ে। এ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সময় লেগেছিল ওই সময়। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয় যাতে না ঘটে তা খতিয়ে দেখতে একটি ভারতীয় কোম্পানিকে গ্রিডের সমস্যা খতিয়ে দেখতে একটি পরামর্শক নিয়োগ করেছিল সরকার। ওই প্রতিষ্ঠান গত বছর তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডের নিরাপত্তা খুবই নাজুক। এর আধুনিকায়ন না ঘটালে, কোম্পানিটির ভাষায় স্মাট গ্রিড না করলে আবারও বড় ধরনের বিপর্যয়ের কবলে পড়বে। এমনকি ওই সময় গ্রিড বিপর্যয়ের পর সরকারী কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছিল তার অনেক সুপারিশ মানা হয়নি। স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস থেকে জানান, বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) আওতানাধীন খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ২১ জেলার বেশিরভাগ এলাকা মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুতবিহীন ছিল। বিদ্যুত না থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। কলকারখানার উৎপাদন, পানি সরবরাহসহ বিদ্যুতনির্ভর সকল কাজকর্ম বিঘিœত হয়। ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে খুলনা বিভাগের ১০, বরিশাল বিভাগের ৬ ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলাসহ মোট ২১ জেলা বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়ে। খুলনার কয়েকটি ফিডারে দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হতে থাকে। ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী হাসান আলী তালুকদার জানান, বেলা ৪টার মধ্যে এ অঞ্চলের ২১ জেলার অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহীতে কালবৈশাখীর তা-বের পর রবিবার থেকে বিদ্যুতের ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। কার্যত ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুত ব্যবস্থা। দুই-তিন ধরে বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। রাজশাহী অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকা মঙ্গলবার পর্যন্ত রয়েছে অন্ধকারে। ঝড়ের পর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও বিদ্যুত ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়ায় বিক্ষোভ করেছে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নগরসহ জেলার বেশিরভাগ উপজেলা রয়েছে বিদ্যুতহীন। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, কালবৈশাখাী ঝড়ের কারণে অনেক এলাকায় গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুতের তার পরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। তারপরেই রাতদিন চেষ্টা করে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের কাজ চলছে। কোথাও সংযোগ দেয়া হয়েছে আবার কোথাও সংযোগ দেয়ার কাজ চলছে। তবে কিছু অঞ্চলে লোড ম্যানেজমেন্ট করে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হচ্ছে। জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা রাজশাহীর ওপর দিয়ে কালবৈশাখী হানা দেয়। এ ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার। এতে ল-ভ- হয়ে যায় রাজশাহী অঞ্চলের বিদ্যুত ব্যবস্থা। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে সঞ্চালন বিছিন্ন হয়ে পড়ে রাজশাহী অঞ্চল। জেলার চারঘাট, বাঘা, গোদাগাড়ী, বাগমারা, পুঠিয়া, তানোর, মোহনপুর, পবা ও মোহনপুরের গ্রামাঞ্চলে তিনদিনেও বিদ্যুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কালবৈশাখীর তা-বে টানা ৩০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত অন্ধাকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে পানি ও খাবার সঙ্কটে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী। এছাড়া ল-ভ- হয়ে যায় ক্যাম্পাসের গাছপালা ও বিদ্যুত লাইনের খুঁটি। এতে মঙ্গলবার পর্যন্ত চরম দুর্ভোগে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। প্রেক্ষিতে সোমবার রাতে থালা-বাসন নিয়ে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। ধীরে ধীরে উত্তেজিত হয়ে পড়ে তারা। এই উত্তেজনা পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপর রাত ১২টার দিকে ছেলেদের হলগুলোতে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এত সময় ধরে বিদ্যুত না থাকার কারণে হলে পানিও শেষ হয়ে গেছে। রান্না করে খাওয়ারও কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ রাজশাহী নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাজশাহী নগরীর অনেক এলাকায় এখনও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুত পরিস্থিতি। রাজশাহী বিদ্যুত অফিস জানায়, অনেকটায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছিল মঙ্গলবার সকালে। তবে ঘোড়াশাল-ঈশ্বরদী সঞ্চালন লাইনে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে বিদ্যুত সরবরাহে বিভ্রাট দেখা দেয়। ফলে রাজশাহী জোনেও বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এলাকাভেদে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকে। দ্রুত বিদ্যুত সঞ্চালন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে বলে জানান রাজশাহী বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা। নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা থেকে জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিদ্যুতের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪৭ মিনিটে গ্রিড ফেল করায় জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ২টা ১০ মিনিট থেকে সীমিত আকারে বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত উপকেন্দ্র সূত্র জানায়, প্রায় দুই ঘণ্টা জাতীয় গ্রিড বন্ধ থাকার পর সোয়া ২টার দিকে বিদ্যুত সরবরাহ চালু করা হয়। তবে তা খুবই সীমিত আকারে। ২০ মেগাওয়াটের স্থলে ৫ মেগাওয়াট দিয়ে চুয়াডাঙ্গা- মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় তা মেটানো হয়। বিকেল সাড়ে ৫টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় শহরের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুত আসেনি। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখী ঝড় ও সেই সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলে বিদ্যুত চলে যায়। সারারাত অন্ধকার থাকার পর সকালের দিকে বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় দেখা যায়। স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী থেকে জানান, বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড ফেল করায় মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২৩ মিনিট থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিল। এ কারণে এসব অঞ্চলের শিল্পকারখানা, অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ও কাজকর্ম বন্ধ থাকে। ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে বিদ্যুত বিপর্যয়ের মুখে পড়ে মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়। নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ থেকে জানান, গত দুই দিনের ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতবিহীন নওগাঁ জেলা। শনিবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার দিনভর নওগাঁ অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় কোন বিদ্যুত ছিল না। এর মাঝে সোমবার বিকেলে মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের জন্য বিদ্যুত এসেছিল। এই বিদ্যুত অভাবে জেলাবাসীর স্বাভাবিক গতি থেমে গেছে। মোবাইলে চার্জ নেই, পানির ট্যাঙ্কে পানি নেই, ল্যাপটপ-কম্পিউটার বন্ধ, মিল, কল-কারখানায় বিশেষ করে চাল উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় জেলাবাসী সকল ক্ষেত্রে অচল হয়ে পড়েছে। ব্যাটারিচালিত চার্জার (টমটম) এবং রিক্সা-ভ্যানগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী ভোগান্তি বেড়েছে। নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব থেকে জানান, সোমবার রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি জাতীয় বিদ্যুত সঞ্চালনার গ্রিড লাইনের ভৈরবে কালিপুরে খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। এ সময় দেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। তবে মেরামত কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক টাওয়ার মোরামতে ঢাকা থেকে প্রধান প্রকৌশলীসহ ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভৈরবে কাজ শুরু করেছে। মেরামত কখন নাগাদ শেষ হবে তা জানা যায়নি।
×