ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু হত্যা ॥ মামার দায় স্বীকার

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ৩ মে ২০১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু হত্যা ॥ মামার দায় স্বীকার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২ মে ॥ রানীশংকৈল উপজেলার মুনিষগাঁও গ্রামে আব্দুল কাফি তুষার (৩) নামের এক শিশুকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছে শিশুর মামাসহ অন্য আসামিরা। তুষারকে গলা কেটে হত্যার সময় ৪ জন সরাসরি জড়িত ছিল বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে তুষারের মামা সেতু। মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিশু তুষার হত্যার ঘটনা ও ৯ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ ও রানীশংকৈল থানার সার্কেল এসপি হাসিব আটক আসামিদের আদালতে প্রদানকৃত জবানবন্দীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, মুনিষগাঁও গ্রামের আল রাজি মোস্তাকিম রাজু দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় জড়িত ছিল। গত কিছুদিন থেকে ওই নারী রাজুকে বিয়ের জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ বিয়ে করতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। এছাড়া অনেক টাকা ঋণ করেছিল রাজু। তাই মোটা অঙ্কের টাকা কিভাবে পাওয়া যাবে- সে জন্য পরিকল্পনা শুরু করে রাজু। সেই অনুযায়ী প্রতিবেশী মাসুদ রানার ছেলে আব্দুল কাফি তুষারকে (৩) অপহরণ করে মুক্তিপণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে রাজু। কিন্তু রাজুর পক্ষে একাই শিশু অপহরণ করা সম্ভব হবে না ভেবে পারিবারিক কোলহের জেরকে কাজে লাগিয়ে ও মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে তুষারের মামা সেতু, চাচাত ভাই শান্তকে ম্যানেজ করে রাজু। রাজুর পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৬ এপ্রিল মাসুদ রানার ছেলে তুষারকে অপহরণ করা হয়। সেই অপহরণের বিষয়টি প্রতিবেশী চাচা সিরাজুল ইসলাম টের পেলে রাজুর কাজে ফায়দা নেয়ার জন্য তুষারকে জিনে নিয়ে গেছে বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালায়। দুই দিনের মধ্যে তুষার বাড়িতে ফেরত আসবে বলে তুষারের বাবা মাসুদ রানাকে জানায় সিরাজুল। অপহরণের আগে শিশু তুষারের মামা তার মায়ের মোবাইল চুরি করে মুক্তিপণ দাবির জন্য। অপহরণের দিন সকালে প্রতিবেশী চাচা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়েছিল তুষার। ওই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তুষারকে সিরাজুল ইসলামের ছেলে শান্তর (১৫) কোলে দেখা যায়। সেদিনই তুষারকে অপহরণ করা হয়। নিখোঁজের ঘণ্টা ছয়েক পর ওই চুরি হওয়া মুঠোফোন দিয়ে তুষারের বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে রাজু। বিষয়টি টের পেয়ে অপহৃতরা শিশু তুষারকে চেতনানাশক দিয়ে একটি বস্তায় ভরে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যস্থানে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে রাজু, সেতু, শান্ত ও রিপনসহ গলা ও হাতের রগ কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে শিশু তুষারকে। শুক্রবার একটি খড়ের গাদা থেকে পুলিশ অর্ধগলিত গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে মূল হোতাসহ ৯ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালালে এ হত্যা রহস্য প্রকাশ পায়।
×