ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁর কৃষক

হাইব্রিড ধানবীজ কিনে প্রতারিত

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৩ মে ২০১৭

হাইব্রিড ধানবীজ কিনে প্রতারিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৭ এপ্রিল ॥ আত্রাই উপজেলার দর্শন গ্রামের কৃষক প্রিন্স মাহমুদ বাজারের এক বিক্রেতার কাছ থেকে বোরো ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হয়েছেন। তিন মাস আগে ওই বীজ তিনি ১২বিঘা জমিতে রোপণ করেছিলেন। সঠিকভাবে পরিচর্যাও করেছেন তিনি। সময়মতো ধান গাছগুলোর শীষও বের হয়েছিল। কিন্তু শীষের ধানগুলোর দানা শক্ত না হয়ে আস্তে আস্তে বেশিরভাগ ধানই চিটা হয়ে যায়। এতে ওই এলাকার কৃষকরা ধানের বদলে চিটা হওয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। তারা প্রতারক কোম্পানি ও ডিলারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবির পাশাপাশি সরকারের কাছে এর ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। কৃষক প্রিন্স মাহমুদ অভিযোগ করেন, তিনি নাটোরের সিংড়া সদর বাজার থেকে মেসার্স আল-আমিন নামে একটি দোকান থেকে জিরা ধানের বীজ চেয়েছিলেন। তাকে তখন অধিক উৎপাদনের কথা বলে গাজীপুর সীড লিমিটেড কোম্পানির তাজ জিরা নামের ধান বীজ দেয়া হয়। প্রতি কেজি ৩শ’ টাকা দরে দুই কেজি ওজনের ২৭ ব্যাগ বীজ কেনেন তিনি। কিন্তু তাকে ভেজাল বীজ দেয়া হয় বলে এখন প্রতিয়মান হয়েছে। আল-আমিন নামে এক ব্যক্তি ওই দোকানের মালিক। তিনি গাজীপুর সীড লিমিটেড কোম্পানির ডিলার বলে দাবি করেন। বর্তমানে ওই ডিলার পলাতক। প্রতিদিনই ভুক্তভোগী কৃষকরা ডিলারের দোকানে গিয়ে তাকে খোঁজ করে বলে জানান স্থানীয়রা। প্রিন্স মাহমুদ বলেন, ওই বীজের চারা লাগানো ১২ বিঘা জমির প্রায় ৯৫ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে। ১২ বিঘা জমিতে প্রায় ২৫০ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও এখন ২০ মণ ধানও হবে না। এতে সেচ খরচসহ তার প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। প্রিন্স মাহমুদ একা নন। আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়নের নন্দীগ্রাম ও ইসলামপুর গ্রামের আরও অন্তত ৩০ কৃষক তার মতো প্রতারণার শিকার। অধিক উৎপাদনের লোভে বাজারে দৃষ্টিনন্দন মোড়কে হাইব্রিড জাতের ধান বীজ কিনে তা রোপণ করে এখন হতাশ ওই সমস্ত কৃষক। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বোরো ক্ষেতের প্রায় সব ধানই চিটা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সত্যব্রত সাহা জানান, সরেজমিনে আমরা কৃষকের জমির ধান পরিদর্শন করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করব।
×