ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাম দেবেন প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীদের নয়া সংগঠনের আত্মপ্রকাশ শীঘ্রই

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১ মে ২০১৭

 আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীদের নয়া সংগঠনের আত্মপ্রকাশ শীঘ্রই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কোন্দল-দ্বন্দ্বের কারণে বিলুপ্ত ঘোষিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের দুটি সংগঠনের সমন্বয়ে এক প্লাটফরমে একক নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটছে। শীঘ্রই সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব গঠন করা হবে। আর আইনজীবীদের একক এই নতুন সংগঠনের নামকরণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। রবিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিলুপ্ত ঘোষিত দুটি আইনজীবী সংগঠনের প্রায় ২৫ সিনিয়র আইনজীবী নেতার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে খুব দ্রুতই সম্মেলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়। শুধু অভ্যন্তরীণ কোন্দল-দ্বন্দ্ব ও বিভেদের কারণে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবি ঘটে। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। যার রেশ ধরে গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সর্বসম্মতক্রমে বিবাদমান আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের দুটি সংগঠন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের কোন সংগঠন বিদ্যমান নেই। সূত্র জানায়, দুটি সংগঠন বিলুপ্ত ঘোষণার পর দল সমর্থিত আইনজীবীদের এক প্লাটফরমে আনতেই সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিভেদ নিরসন নিয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সূত্র জানায়, বৈঠকে ঢাকার বৃহৎ দুই আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পরাজয়ে ত্যাগী আইনজীবীরা দল সমর্থিত সিনিয়র কয়েক আইনজীবীর মধ্যে বিভেদ-দ্বন্দ্বকেই দায়ী করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় বিলুপ্ত দুই আইনজীবী সংগঠনের নেতাদের সমন্বয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে একটি একক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করা হবে। নতুন সংগঠনের নামকরণের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। ঢাকায় অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনেই নতুন সংগঠনের নাম ঘোষণা এবং একক নতুন নেতৃত্ব গঠন করা হবে। বৈঠকে দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিবাদ দূর করতে সিনিয়রদের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে কয়েক সিনিয়র আইনজীবী বলেন, নিজেদের মধ্যে অনৈক্যের কারণেই ঢাকা আইনজীবী সমিতি এবং সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি আওয়ামী লীগের হাত ছাড়া হয়েছে। সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয় কেউ-ই ঠেকাতে পারত না। দুটি আইনজীবী সমিতি বিলুপ্ত করে নতুন একক সংগঠন গঠনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বৈঠকে অনেক আইনজীবীই এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার শফিক আহমদসহ অন্যদের অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। বৈঠক সূত্র জানায়, দেশ ও দলের বৃহত্তর স্বার্থে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সকল আইনজীবীদের এক প্লাটফরমে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও অনৈক্যের কারণে আমাদের দুটি আইনজীবী সমিতির নেতৃত্ব হারাতে হয়েছে। এভাবে চলতে পারে না। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে শুধু আইনজীবীই নয়, সকল পেশাজীবী ও সমমনা সংগঠনগুলোর মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য নিশ্চিত করতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন যে একক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটবে, তাতে দল সমর্থিত সব আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রবীণ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার, সৈয়দ রেজাউর রহমান, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আবদুল্লাহ আবু, লায়েকুজ্জামান, মমতাজ উদ্দিন মেহেদী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আরও উপস্থিত ছিলেন এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, নজীবুল্লাহ হীরু, আমিন উদ্দিন, বশির আহমেদসহ প্রায় ২৫ আইনজীবী। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।
×