ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রেকর্ড টানা পঞ্চম শিরোপা বেয়ার্ন মিউনিখের

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১ মে ২০১৭

রেকর্ড টানা পঞ্চম শিরোপা বেয়ার্ন মিউনিখের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জার্মান বুন্দেসলিগার শিরোপা যেন নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে বেয়ার্ন মিউনিখ। গত চার বছরের মতো এবারও ট্রফি জিতে সে স্বাক্ষর রেখেছে বাভারিয়ানরা। শনিবার রাতে এ্যাওয়ে ম্যাচে স্বাগতিক উলফসবার্গকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ২০১৬-১৭ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেয়ার্ন মিউনিখ। এই নিয়ে রেকর্ড টানা পঞ্চমবার বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতলো মিউনিখের দলটি। সবমিলিয়ে এটি বেয়ার্নের ২৭তম বুন্দেসলিগা শিরোপা। পরশু রাতে আরেক ম্যাচে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আরবি লিপজিগ ইনগোস্টাদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করায় তিন ম্যাচ হাতে রেখেই ১০ পয়েন্ট এগিয়ে লীগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় বেয়ার্নের। বর্তমানে ৩১ ম্যাচে বেয়ার্নের পয়েন্ট ৭৩। সমান ম্যাচে ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে লিপজিগ। বাকি তিন ম্যাচ হেরে গেলেও শিরোপা উৎসবে তাই ভাটা পড়বে না ফিলিপ লাম, রবার্ট লেভানডোস্কি, আরিয়েন রোবেনদের। আগের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে লিপজিগ ও ইনগোস্টা। ফলে উলফসবার্গের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে শিরোপা জেতার জন্য বেয়ার্নের প্রয়োজন ছিল তিন পয়েন্ট। সেই কাজটি ভালমতোই করেছেন দলটির তারকা ফুটবলাররা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় বেয়ার্ন। দ্বিতীয়ার্ধে আসে আরও তিনটি গোল। বেয়ার্নের হয়ে দুটি গোল করেন পোলিশ স্ট্রাইকার লেভানডোস্কি। পোলিশ তারকা এই দুই গোলসহ মৌসুমে ২৮টি গোল করেছেন। লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এখন তিনিই শীর্ষে। এক গোল কম করে দ্বিতীয় স্থানে আছেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং। একটি করে গোল করেন টমাস মুলার, আরিয়েন রোবেন, জর্ডি এ্যালাবা ও জোসুয়া কিমিচ। ৭৮ মিনিটে অবশ্য দশজনের দলে পরিণত হয়েছিল স্বাগতিক উলফসবার্গ শিবির। দ্বিতীয়বারের মতো হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় দলটির ব্রাজিলিয়ান মিডফিফল্ডার লুইস গুস্টাভোকে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিতে উঠা হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে। আবার জার্মান কাপেও বিদায় নিতে হয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে হেরে। তবে লীগে তিন ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা জেতায় সেই কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে পেরেছে কার্লো আনচেলোত্তির দল। জার্মান কাপে হারের ফলে অভিষেকে পেপ গার্ডিওলার ডাবল শিরোপা জয়ের কৃতিত্বকে স্পর্শ করতে পারেননি বেয়ার্ন বস আনচেলোত্তি। তবে বুন্দেসলিগা জিতে তিনি ইতিহাস গড়েছেন। এই নিয়ে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচটি লীগে পাঁচটি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে টুর্নামেন্ট জিতলেন। যার মধ্যে লীগ শিরোপা চারটি। কেবল লা লিগা জেতা হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। বিশ্বফুটবলের কোন কোচ এই রেকর্ডের ধারে কাছেও নেই। জোশে মরিনহোর আছে তিনটি দেশের শিরোপা জেতার রেকর্ড। পেপ গার্ডিওলার দুই দেশের। সেখানে আনচেলোত্তি জিতেছেন ইতালির কোপা ইতালিয়া ও সিরি এ, এসি মিলানের হয়ে, ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লীগ ও এফএ কাপ, চেলসির হয়ে। ফ্রান্সের লীগ ওয়ান, পিএসজির হয়ে। স্পেনের কোপা ডেল রে, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। সর্বশেষ বেয়ার্নের হয়ে বুন্দেসলিগা। বেয়ার্ন কোচ হিসেবে এটাই আনচেলোত্তির প্রথম মৌসুম। আর অভিষেকেই ক্লাবকে লীগ শিরোপা উপহার দেয়ায় দারুণ খুশি এই ইতালিয়ান বলেন, আমি দারুন খুশি, এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে আমার অভিজ্ঞতাও দারুণ। তারকা এই কোচ আরও বলেন, এই অসাধারণ ক্লাবটিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই শিরোপাটা আমাদের প্রাপ্য ছিল। পুরো মৌসুম জুড়ে আমরা ভাল ফুটবল খেলেছি, এখন সময় এসেছে উদযাপনের। উচ্ছ্বাসে ভাসছেন দলটির চেয়ারম্যান কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগেও। তিনি বলেন, টানা পাঁচবারের শিরোপা সত্যিই অবিশ্বাস্য। এই চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ্য প্রার্থী আমরাই ছিলাম। রেকর্ড বইয়ে নাম লিখিয়ে নিয়েছেন বেয়ার্ন অধিনায়ক ফিলিপ লামও। বুন্দেসলিগায় লামের এটি অষ্টম শিরোপা। জার্মানির সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ে অলিভার কান, মেহমেট শোল ও বাস্টিয়েন শোয়েনস্টেইগারের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন জার্মানির সাবেক অধিনায়ক। এবারের শিরোপাটি লামের কাছে অন্যরকম আবেগের। কেননা শিরোপা দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করতে পারছেন তিনি। আবেগ জড়ানো কণ্ঠে তাই লাম বলেন, আমার জন্য এটা দারুণ। বুন্দেসলিগা জেতাটা সবসময়ই বিশেষ কিছু। সমর্থকদের সঙ্গে উদ্করাটা আমার জন্য ছিল বেশ আবেগের। অসাধারণ এই ক্যারিয়ারের জন্য উলফসবার্গের অনেক খেলোয়াড়ও আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
×