ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নারীরা গৃহে পুরুষের তুলনায় তিনগুণ কাজ করেন

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১ মে ২০১৭

নারীরা গৃহে পুরুষের তুলনায় তিনগুণ কাজ করেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নারীরা নিজ গৃহে পুরুষের তুলনায় তিনগুণ কাজ করলেও শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি মিলছে না এসব কাজের। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা বাসায় যে গৃহস্থালির কাজ করেন তার মূল্য দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৭৭ থেকে ৮৭ ভাগ। কিন্তু তাদের এ অবদানকে যুক্ত করা হচ্ছে না দেশের জিডিপিতে। নারীর গৃহশ্রমকে হিসাবের আওতায় আনা ও আর্থসামাজিক স্বীকৃতির দাবি বিশ্লেষকদের। তিন সন্তান আর স্বামী নিয়ে শিউলি বেগমের সংসার। সকাল থেকে রাত অবধি চলে তার সংসার নামক যন্ত্রের চাকা। সকালে পরিবারের জন্য নাস্তা বানানো, সন্তানদের পড়াশোনা করানো, স্কুলের জন্য প্রস্তুত করা সবই করতে হয় তাকে। বাচ্চাদের পড়াশোনার পাশাপাশি ঘর ও সংসারের সমস্ত বিষয়েই মাথা ঘামাতে হয় শিউলি বেগমকে। কিন্তু সমাজ বা রাষ্ট্র ব্যবস্থার চোখে তিনি কোন কাজই করেন না। নারীরা সংসারে পুরুষের চেয়ে তিনগুণ বেশি কাজ করলেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না থাকায় গৃহস্থালির কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। শিউলি বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, ‘ঘরে কাজের মূল্য নারীরা তাদের ঘর থেকেই পায় না, বাইরে আর কি পাবে। আমার মতে রাষ্ট্রেরই এটা মূল্যায়ন করা উচিত।’ শিউলি বেগমের একার নয়, রাজধানী কিংবা গ্রামাঞ্চল সবজায়গাতেই এ অবস্থা দৃশ্যমান। গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ২০১৪ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৫ বছরের ওপরের একজন নারী গড়ে প্রতিদিন পুরুষের তুলনায় তিনগুণ কাজ করেন, যা ঘণ্টা হিসেবে গড়ে প্রায় ৮ ঘণ্টা। নারীদের এসব কাজের মূল। জিডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তার বার্ষিক মূল্য হতো মোট জিডিপির প্রায় ৮৭ ভাগ সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘নারীর এই অবদানটাকে আমরা গণনার ভেতরে আনতে পারি এবং আমাদের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলোর মধ্যে এটিকে আরও ভালভাবে স্বীকৃতি দিতে পারি সেটা ভাবতে হবে।’ আর নারীবাদী সংগঠনগুলো তাদের শ্রমকে জিডিপির অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি তাদের জন্য পেনশন সুবিধাসহ বেশ কিছু দাবিও তুলে ধরেন। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের প্রধান নির্বাহী রোকেয়া কবির বলেন, ‘নারীদের পেনশনের ব্যবস্থা করা। সহনীয় মূল্যে নিরাপদ পানি এবং জ্বালানির ব্যবস্থা করা।’
×