নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, ৩০ এপ্রিল ॥ স্বামীহারা বয়োবৃদ্ধ নুরজাহান বেগম ৫ ছেলে ও এক মেয়ের জননী। সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দের খোঁজে তিন ছেলেকে প্রবাসে পাঠিয়েছিলেন। তার তিন ছেলেই আফ্রিকার মোজাম্বিক প্রবাসী। মোজাম্বিকে বাঁশখালী উপজেলার একাধিক লোকের বসবাস। সেই সূত্রে নুরজাহান বেগমের তৃতীয় পুত্র মোক্তার হোসেন অন্যান্য বাঙালীদের মতো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে মোজাম্বিকে। ব্যস্ততার ফাঁকে সাংসারিক নজর আছে বিধায় গত রমজান মাসে তার স্ত্রী হামিদা আক্তারকেও মোজাম্বিকে নিয়ে যান তিনি। মোক্তার হোসেনের ব্যবসায়িক অগ্রগতিতে কু-নজর লাগে একই এলাকার কতিপয় ব্যক্তির।
এরই জের ধরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকার মোজাম্বিক হতে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বাংলাদেশী কতিপয় যুবক। অপহরণের পর মোক্তার হোসেনের স্ত্রীর কাছে মুঠোফোনে ৫০ হাজার ইউএস ডলার মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। অপহরণকারীর দাবি অনুযায়ী আফ্রিকার মোজাম্বিকে ২৮ ফেব্রুয়ারি তার ভাই জসিম উদ্দিন মোজাম্বিকের মিলিনিয়াম ব্যাংকে ৫ লাখ টাকা ও বাংলাদেশের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল গ্রামের মোক্তার হোসেনের পরিবারের কাছ থেকে হোসেন মেম্বার, কফিল উদ্দিন ও শহিদুল্লাহ গত ৩ মার্চ ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণের টাকা হিসেবে গ্রহণ করে। মুক্তিপণের টাকা প্রদানের পরও এখনও পর্যন্ত মোক্তার হোসেনকে ছেড়ে দেয়নি অপহরণকারীরা। নিরুপায় হয়ে অপহৃতর পরিবার ২০ এপ্রিল বাঁশখালী থানায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপজেলা সদর হতে অপহরণকারী দলের শহিদুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত শেষে রবিবার পুলিশ ওই অপহরণকারীকে আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে। এদিকে মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত অপহরণকারী দলের অন্যান্য সদস্যরা অপহৃতের পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া ছেলেকে হারিয়ে মা নুরজাহান বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অপহৃতের ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হামিদা আক্তারের আর্তনাদে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: