ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রেক্সিটপরবর্তী ব্রিটেন-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন আবে

ব্রেক্সিট ॥ প্রস্তুতি নিচ্ছে জাপানও

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ১ মে ২০১৭

ব্রেক্সিট ॥ প্রস্তুতি নিচ্ছে জাপানও

ব্রেক্সিট বা ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কঠিন সমস্যার মধ্যে না পড়ে সেজন্য আগে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তার ব্রিটিশ প্রতিপক্ষ টেরেসা মে’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্পষ্টতই বেক্সিটপরবর্তী ব্রিটেন-জাপান অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন আবে। কারণ ব্রেক্সিটের ব্যবসা-বাণিজ্যেও নিয়ম-কানুনও রাতারাতি বদলে যাবে। খবর টেলিগ্রাফ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি জাপান। দেশটির সরকারপ্রধান হিসেবে শিনজো আবে মে’র সঙ্গে লন্ডনের বাইরে তার বাসভবনে বৈঠকের একদিন পর ব্রেক্সিটের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাজ্যকে দেয়া তার দীর্ঘমেয়াদের প্রতিশ্রুতির প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। গাড়ি উৎপাদন প্রতিষ্ঠান নিশান ও শিল্পগোষ্ঠী হিটাচিসহ জাপানী কোম্পানিগুলো এখানে বিনিয়োগ করে চার হাজার কোটি পাউন্ডের (পাঁচ হাজার ২শ’ কোটি মার্কিন ডলার) বেশি। জাপানী কোম্পানিগুলো দেশটিতে নিয়োগ দিয়েছে মোট এক লাখ ৪০ হাজার লোককে। আবে লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাজ্য ইইউ যখন ত্যাগ করবে তখন বিধিগুলোর রাতারাতি পরিবর্তন করা হলে সম্ভাব্য গোলমেলে পরিস্থিতি দেখা দেয়ার ব্যাপারে উদ্বেগের সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, একটি উত্তরণকাল প্রতিষ্ঠাসহ সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যের অগ্রাধিকার চান তিনি। ব্রেক্সিট আলোচনার ওপর পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ব্রিটেনের ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন অর্থনীতির ভবিষ্যত নির্ভর করে এবং বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দুই অর্থনৈতিক কেন্দ্রের একটি হিসাবে লন্ডনের অবস্থান অটুট রাখতে পারবে কি-না তাও নির্ভর করে এ আলোচনার ওপর। জাপান ২৩ জুনের ব্রেক্সিট ভোটের পর থেকে যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিটের প্রভাবের ব্যাপারে অস্বাভাবিক রকম তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে প্রকাশ্যে। জাপানী বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পর যুক্তরাজ্য হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় দেশ। মে বলেছেন, ব্রেক্সিটের জন্য তিনি চান তার ভাষায় এক পর্যায়ক্রমিক বাস্তবায়ন, যদিও ব্রেক্সিট কিভাবে কার্যকর হবে এ ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য ২৭ রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় রয়েছে তার হাতে দু’বছর। অন্যদিকে, অনেক কূটনীতিক ও প্রধান নির্বাহী বলেছেন, তাদের প্রত্যাশা ব্রেক্সিট ত্যাগ চুক্তিতে হাজার হাজার জটিল বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিধিসংক্রান্ত বিষয়ে স্পষ্ট হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। নিশ্চয়তার প্রয়োজন রয়েছে যে, যুক্তরাজ্য ২০১৯ সালে মার্চের শেষ নাগাদ যখন সংস্থা ত্যাগ করবে তখন বাণিজ্যে কোন ধরনের বাধার সৃষ্টি হবে না। যদিও নেতৃবৃন্দ বারবার বলে এসেছেন, চুক্তি হবে যুক্তরাজ্য ও ইইউ দু’পক্ষেরই অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তার স্বার্থে। আবে বলেছেন, জাপান শক্তিশালী যুক্তরাজ্য ও এক শক্তিশালী ইউরোপের পক্ষপাতি। তিনি বলেন, এটা প্রয়োজনীয় যে, সুষ্ঠু ও সফল ব্রেক্সিট হলে মোটের ওপর ইউরোপের দৃঢ় সংহতি বজায় থাকবে। মে শুক্রবার আবের সঙ্গে বৈঠকের পর বলেছেন, ব্যবসা চালনা ও এর প্রসারে ইউরোপে সর্বশ্রেষ্ঠ অবস্থানে থাকবে যুক্তরাজ্য। তিনি বলেন, তিনি এমন একটি ব্রেক্সিট চুক্তি চান যাতে নিশান ও অন্যান্য মোটর উৎপাদন ব্যবসা ব্রিটেনে সমৃদ্ধ হয়।
×