অনলাইন ডেস্ক ॥ আরও একটি পরাজয়। আরও এক বার একশো রানের কমে অলআউট হয়ে যাওয়ার লজ্জা। আরও এক বার ম্যাচ হেরে পুরস্কার বিতরণীতে আসার হতাশা। আরও এক বার ব্যাখ্যাহীন ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটে ৬১ রানে হার।
ক্যাপ্টেন কোহালি যেন ফুঁসছিলেন পুরস্কার বিতরণীতে এসে। বলে দিলেন, ‘‘কী আর বলার থাকতে পারে! সবাই তো দেখছে। আমরা আবার হারলাম। এক জন অধিনায়কের পক্ষে এ রকম পারফরম্যান্সের পরে এখানে এসে দাঁড়ানোটাই কঠিন।’’ চূড়ান্ত হতাশ দেখায় তাঁকে। চোখমুখ শুকনো। বলে ফেললেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেও কিছু করে উঠতে পারছি না। আজ ওরা যতটা না জিতল, তার চেয়ে আমরা বেশি হারলাম। আমাদের খেলায় কোনও তীব্রতাই নেই। ছেলেরা সবাই ব্যর্থতার ভয়ে গুটিয়ে রয়েছে। এটা ভাল কোনও অনুভূতি নয়।’’
শনিবার প্রতিপক্ষ অধিনায়কের নাম যে ছিল স্টিভ স্মিথ। যাঁর সঙ্গে টেস্ট সিরিজে নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। এই সম্মানের যুদ্ধটাও হারলেন। এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচে হার। ইডেনে কেকেআরের বিরুদ্ধে ৪৯ অলআউট দিয়ে শুরু হয়েছিল। খারাপ সময় যেন কাটতেই চাইছে না। এখন যা পরিস্থিতি, আইপিএল থেকে কার্যত ছিটকেই গেলেন তাঁরা। কাগজেকলমে এখনও হয়তো প্লে-অফে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু সেই আশা খুবই ক্ষীণ। শুধু নিজেরা বাকি সব ম্যাচ জিতলেই হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদের ব্যর্থতার দিকেও। গত দু’আড়াই বছরে যিনি দুরন্ত ফর্মে ব্যাট করে গিয়েছেন, অসম্ভবকে বহু বার সম্ভব করেছেন, অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন, তাঁর জীবনে এ এক বিরল অন্ধকার চলছে।
কোহালি নিশ্চয়ই এ ভাবে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন না। এ দিন একের পর এক উইকেট যখন পড়ছিল অন্যদিক থেকে, তিনি শূন্য দৃষ্টিতে কখনও আকাশের দিকে চেয়ে থাকলেন। কখনও মাথা নীচু করে হাঁটুতে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। কোহালি বলতে যে আগ্রাসী যুবকের গর্জন দেখতে অভ্যস্ত ক্রিকেটভক্তরা, সেই ছবিটাই এ বারে আইপিএলে দেখা যাচ্ছে না। আরও করুণ হয়ে বাজে পুরস্কার মঞ্চে পুরস্কারহীন দাঁড়িয়ে থেকে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘এই ফলাফল মেনে নেওয়া কঠিন। তবু চলার পথে যা আমার দিকে এসেছে, সেটাকেই জড়িয়ে ধরতে হবে। আবার এগিয়ে চলতে হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। এই ধরনের দিনগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’’ ক্রিস গেল-কে এ দিন বসিয়ে দেয় আরসিবি। তাঁর জায়গায় খেলানো হল ট্রাভিস হেড-কে। তাতেও ভাগ্য বদলায়নি। পুণে প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ১৫১-৩। স্টিভ স্মিথ করলেন ৩২ বলে ৪৫। মনোজ তিওয়ারি তাঁর ভাল ফর্ম অব্যাহত রেখে করলেন ৩৫ বলে ৪৪। ধোনি করলেন ১৭ বলে ২১। কখনও মনে হয়নি পুণের রান খুব বিশাল কিছু। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অহরহ এমন রান তাড়া করে জিতেছে অনেক দল। কোহালিদের সেখানে আইপিএলের সেরা ব্যাটিং লাইন-আপ। না হওয়ার কোনও কারণই নেই। কে জানত, সেরা ব্যাটিং টিমেই এখন শনির দশা চলছে। অধিনায়ক কোহালি (৪৮ বলে ৫৫) ছাড়া কেউ দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারলেন না এ দিনও। ফের আরসিবি ব্যাটসম্যানদের রান টেলিফোন নম্বরের মতো দেখাল। কুড়ি ওভার শেষে আরসিবি ৯৬-৯।
কাগজে-কলমে প্লে-অফে যাওয়ার আশা টিমটিম করে বেঁচে থাকলেও কোহালিকে খুব ইতিবাচক শোনাচ্ছে না। ‘‘আমরা প্রায় ছিটকেই গিয়েছি প্লে-অফের দৌড় থেকে। বাকি চারটে ম্যাচে নিজেদের ক্রিকেটকে শুধু উপভোগ করতে পারি,’’ বলছেন কোহালি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: