ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ১৬ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ৩০ এপ্রিল ২০১৭

চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ১৬ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৯ মেট্রিক টন কার্গো এবং ২০ লাখ ২৪ হাজার ২০৭ টিউইএস কন্টেনার হ্যান্ডেলিং হয়েছিল। ২০১৬ সালে ৭ কোটি ৭২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩১ মেট্রিক টন কার্গো ও ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ৯০৯ টিউইএস কন্টেনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে এই বন্দর দিয়ে কন্টেনার হ্যান্ডেলিং ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ এবং কার্গো হ্যান্ডেলিং ১৭ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। পরিসংখ্যানে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৭০৯টি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল; ২০১৬ সালে এসেছে ৩ হাজার ১৪টি জাহাজ। বন্দর কর্তৃপক্ষের নানামুখী পদক্ষেপের জাহাজ, কার্গো এবং কন্টেনার হ্যান্ডেলিং সক্ষমতা বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম. খালেদ ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে। বন্দরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয়ে প্রতি বছরে বন্দরের কন্টেনার ও কার্গো হ্যান্ডেলিং ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের ৭৬তম বড় সমুদ্র বন্দর। বন্দরের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে বিশ্বের ৩০টি শীর্ষ বন্দরের মধ্যে উঠবে এ বন্দর। তিনি জানান, বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালের নির্মাণ কাজ ২০০৭ সালে শেষ হলেও গত ৯ বছরে এই টার্মিনালের জন্য কোন ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হয়নি। ফলে ওই টার্মিনাল এখনও চালু করা যায়নি। তবে গত কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় ১১টি আরটিজি সংগ্রহের বিষয় চূড়ান্ত করেছি। এছাড়া ৪টি স্ট্রেডেল ক্যারিয়ার ও ৫টি কন্টেইনার মুভার সংগ্রহের জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি হয়েছে। একটি রেল মাউন্ট গান্ট্রি ক্রেন সংগ্রহের জন্যও আলোচনা চলছে। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ৯০৭ একর জমি নির্বাচন করেছি; এর বাজারমূল্য ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। এত টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষ থেকে জমি কিনে বে-টার্মিনাল নির্মাণ সম্ভব না। জমিগুলো দেশের অর্থনীতির স্বার্থে প্রতীকী মূল্যে দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি। ওই জমিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণ হলে বড় ও গভীরতা সম্পন্ন জাহাজ সরাসরি এখানে আসতে পারবে। আগামী মাসের মধ্যে ওই টার্মিনালের সম্ভাব্য সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাবো। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সেখানে কাজ শুরু করবো। নিরাপত্তার প্রসঙ্গে রিয়ার এডমিরাল এম. খালেদ ইকবাল জানান, ২০১৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় কোন পাইরেসিব বা দস্যুতার ঘটনা ঘটেনি। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের আন্তর্জাতিক সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্দরের ১৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলছে। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শীর্ষক প্রকল্পে ব্যাংক নিশ্চয়তা ও জেটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হলেও ড্রেজিং কার্যক্রম শেষ হয়নি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করায় আদালতে মামলা করেছে ঠিকাদার। অন্যদিকে সদরঘাট থেকে বাকলিয়া পর্যন্ত ড্রেজিং কার্যক্রম দ্রুত শুরুর জন্য অনুমতি চেয়ে সরকারের নির্দেশনা চেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের কন্টেনার ও কার্গো পরিবহন বাড়ায় পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। এ বিষয়ে বন্দর সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম জানান, সরকারের অনুমোদন পেলে ২০১৯ সালের মধ্যে পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এ টার্মিনাল নির্মাণে ঋণের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
×