ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বৃদ্ধের সঙ্গে মেয়ের বিয়েতে রাজি না হওয়ায় জঘন্য অপবাদ

ভণ্ড ফকিরের চক্রান্তের শিকার জেলে পরিবার

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৩০ এপ্রিল ২০১৭

ভণ্ড ফকিরের চক্রান্তের  শিকার জেলে পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৯ এপ্রিল ॥ ঝাঁড়ফুক দেয়া ভ- ইউনুচ ফকিরের চক্রান্তে স্বামীর সংসার বিয়ের দুই মাসও টিকেনি অষ্টাদশী শারমিনের। দুই মাস আগে স্বামীর সঙ্গে তালাক হয়ে গেছে। এখন ৭০ বছর বয়সী আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে শারমিনকে মোটা অঙ্কের লোভে বিয়ে দেয়ার ধান্ধাবাজি চালায় ভ- ইউনুচ। তাতেও সফল হয়নি। তার কথা না শোনায় সর্বশেষ শুক্রবার সকালে দরিদ্র এ পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী স্টাইলে ইউনুচ ফকির বিয়ে পাগলা বয়োবৃদ্ধ আব্দুল হাইকেসহ ইউনুচের দ্বিতীয় বউয়ের ছেলে জয়নাল, জাকারিয়া, ভায়রা সালাম তার ছেলে আবু সালেহসহ সাত-আটজনে বেধড়ক মারধর করে শারমিনকে। তাও শারমিনদের ঘরে ঢুকে। শারমিন জানায়, একটি লাঠি তার পিঠে ভেঙ্গে ফেলেছে পেটাতে পেটাতে। মেয়েকে রক্ষায় এগিয়ে আসায় বাবা মিলন বয়াতির ওপরও হামলা চালায়। রক্ষা পায়নি শারমিনের ফুফু সাফিয়া, ভাবি মাসুমা। এদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতগুলোর কালো ছোপ ছোপ দাগ ফুটে আছে। এমনকি শারমিনের চরিত্র খারাপ রটিয়ে ভ- ইউনুচ অপপ্রচার চালায়। বলে বেড়ায় সে অন্তঃসত্ত্বা। মেয়ের ওপর এমন অপবাদ সইতে না পেরে বাবা মিলন বয়াতি আত্মহননের চেষ্টা চালায়। বর্তমানে এ জেলে পরিবারটিকে এলাকা ছাড়া করতে ভ- ফকির ইউনুচ ও তার সহযোগীরা উঠেপড়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আহত শারমিন ও তার ফুফু সাফিয়া কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শুধু নিজের ইচ্ছামতো শারমিনকে এক বয়োবৃদ্ধের কাছে বিয়ে দিতে না পেরে চারিত্রিক কলঙ্কের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে চার সন্তানসহ জেলে দম্পতি শাহিনুর বেগম এবং মিলন বয়াতিকে এলাকা ছাড়ার কঠিন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে ইউনুচ ফকির। এসবের অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণে দরিদ্র মিলন বয়াতি ও শাহিনুর দম্পতি ডাক্তারের পরামর্শে মেয়ে শারমিনের আলট্রাসনোগ্রাফি করিয়েছেন। রিপোর্টে অন্তঃসত্ত্বার কোন অস্তিত্ব মেলেনি। এসব রিপোর্ট নিয়ে ঘুরছেন গণমাধ্যমকমৃীদের দ্বারে দ্বারে। এ পরিবারের দুই সন্তান ৫ম শ্রেণীর শিরিনা এবং দ্বিতীয় শ্রেণীপড়ুয়া জায়েদার স্কুলে যাওয়াও বন্ধের উপক্রম হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামের এ জেলে পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন। শারমিনের চরিত্র হননের প্রচারে সহজ-সরল বাবা মিলন বয়াতি এখন সাগরেও মাছ শিকারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে এ পরিবারটি চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে দরিদ্র জেলে মিলন বয়াতি কোথায় দাঁড়াবেন তা ভেবে অস্থির। তার স্ত্রী শাহিনুর বেগমও মানসিকভাবে খুব বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। আর হতভাগী শারমিন শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে। অভিযুক্ত ইউনুচ ফকির বলেন, ‘বাবাজি আমি কোন মাইরধর করি নাই। ওয়া পোলাপানে হয়তো ঝগড়া অইছে। আব্দুল হাইয়ের সঙ্গে শারমিনে বিয়ের চেষ্টার কথাও অস্বীকার করেন। তিনি এও বলেন, ‘খালি খালি শারমিনের বাপ-মায়ের এইগুলা ধ্যান-ধারণা।’
×