ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুরস্কারের অর্থও দান গম্ভীরের

প্রকাশিত: ১৯:১২, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

পুরস্কারের অর্থও দান গম্ভীরের

অনলাইন ডেস্ক ॥ সুকমায় মাওবাদী হামলায় শহিদ জওয়ানদের সন্তানরা পড়াশোনা চালাবে তাঁর ফাউন্ডেশনের সহায়তায়। সাত সকালেই গোটা ভারত জেনে গিয়েছিল কেকেআর অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের এই মহৎ দায়িত্বের ব্যাপারে। আর সন্ধ্যায় কেকেআর-এর দিল্লিওয়ালা অধিনায়ক গম্ভীর দায়িত্ব নিলেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলস-এর বিরুদ্ধে কলকাতার সপ্তম জয় আনতে। যেখানে মারমুখী মেজাজে ৫২ বলে অপরাজিত ৭১ রান কেকেআর অধিনায়কের। যার মধ্যে রইল ১১টি চার। বাইশ বল বাকি থাকতে সাত উইকেটে ম্যাচ জেতার সঙ্গে ইডেনের হৃদয়ও এ দিন জিতে নিলেন মানবিক কলকাতা অধিনায়ক। ম্যাচ সেরার চেক হাতে বলে গেলেন, ‘‘আইপিএল-এ পাওয়া পুরস্কার অর্থের পুরোটাই দিয়ে দেব সিআরপিএফ জওয়ানদের।’’ পাঁচটা চার ও চারটি ছক্কা সহযোগে গম্ভীরকে এ দিন যোগ্য সঙ্গত করলেন রবিন উথাপ্পাও (৩৩ বলে ৫৯ রান)। এই দুই ব্যাটসম্যানের সৌজন্যেই দিল্লিকে হারিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে চলে গেল কলকাতা। শুরুতে ব্যাট করে ২০ ওভারে দিল্লির ইনিংস শেষ হয়েছিল ১৬০-৬। যার পিছনে কেকেআর-এর নতুন তারকা নেথান কুল্টার নাইলের অবদান যথেষ্ট। জবাবে ১৬.২ ওভারে সুনীল নারাইন (৪), রবিন উথাপ্পা এবং মণীশ পাণ্ডে (৫)-র উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান তুলে খেলা শেষ করে দেয় কলকাতা। বৃহস্পতিবারই অরেঞ্জ ক্যাপের মালিক হয়ে গিয়েছিলেন সুরেশ রায়না। তা দেখে গৌতম গম্ভীর ছটফট করেছেন কি না জানার উপায় নেই। এ দিন ম্যাচ জিতে গম্ভীর সেই অরেঞ্জ ক্যাপ শুধু ছিনিয়েই নিলেন না, আইপিএল-এ পূর্ণ করে ফেললেন চার হাজার রানও। পাশাপাশি নির্বাচকদের দিযে রাখলেন অঘোষিত বার্তা— আমি এখনও ফুরিয়ে যাইনি। কেকেআর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই দিল্লির কাগিসো রাবাডা-র (২-২০) বলে সুনীল নারাইনের উইকেট হারিয়ে ঠকঠকানি যখন চেপে বসছিল, তখনই ত্রাতার ভুমিকায় অবতীর্ণ গম্ভীর-উথাপ্পা জুটি। দিল্লির ব্যাটিং-এর সময় দশম ওভারে হাঁটুতে চোট পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন উথাপ্পা। তখন কিপারের ভূমিকা পালন করলেন শেলডন জ্যাকসন। মাঝ বৈশাখের দুপুরে গরম উপেক্ষা করে মাঠে হাজির কেকেআর সমর্থকদের মেরুদণ্ড দিয়ে তখন সাময়িক শীতল স্রোত নামতে শুরু করেছিল। কিন্তু কেকেআর ইনিংস এ দিন যত এগিয়েছে ততই সেই ভীতি মিলিয়ে গিয়ে বেড়েছে গম্ভীর, উথাপ্পার নামে জয়ধ্বনি। তবে ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাসে ভাসেননি কলকাতা অধিনায়ক। বরং গম্ভীর মেজাজেই তিনি বলে গেলেন, ‘‘অনেক কিছু ঠিকঠাক হলেও আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। এই ছন্দটা হারিয়ে গেলেই মুশকিল। এখনও ফিল্ডিংটা প্রত্যাশা মতো হচ্ছে না। আরও ১০-১৫ রান বাঁচাতে হবে।’’ টসে জিতে নাইটরা ব্যাটিং নেওয়ার পরেই বোধহয় দেওয়াল-লিখনটা পড়ে ফেলেছিলেন দিল্লি অধিনায়ক জাহির খান। তখনই তিনি বলে দিয়েছিলেন, ‘‘রান তাড়া করে জেতায় কেকেআর-ই সেরা।’’ খেলা শেষে হতাশ জাহিরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘একে পনেরো রান কম করলাম। তার উপর শুরুতেই রবিন উথাপ্পার ক্যাচ ফেলার মাশুল দিতে হল।’’ ১৬০ রান পুঁজি করে কলকাতার ব্যাটিং-য়ের শুরুতেই হ্যামস্ট্রিং-এ টান ধরায় জাহির খান বাইরে চলে যাওয়ায় ম্যাচ তখনই কলকাতার দিকে চলে এসেছিল। আর বিজয়লক্ষ্মী পুরোপুরি কলকাতার দিকে চলে আসার আভাস দেন ষষ্ঠ ওভারে। যখন দশ রানে উথাপ্পার লোপ্পা ক্যাচ অমিত মিশ্র, সঞ্জু স্যামসন, ঋষভ পন্থ-এর মধ্যে কে ধরবেন তা বুঝতে না পারায় বল মাটিতে গড়াগড়ি খেল। তবে দিল্লি ইনিংসে ব্যাট হাতে বিপক্ষ শিবির-কে লড়াইটা ছুড়ে দিয়েছিলেন সঞ্জু-ই (৩৮ বলে ৬০ রান)। তাঁর দাপটেই পাঁচ ওভারে পঞ্চাশের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল দিল্লি। আসলে চড়া রোদে ইডেনের খটখটে পিচে কলকাতার শর্ট পিচ্ড বলের রণকৌশল ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল সঞ্জুর পুলের সামনে। ঠিক তখনই আবির্ভাব নেথান কুল্টার নাইলের (৩-৩৪)। তাঁর বাউন্স ও গতির হেরফের কাজে লাগিয়েই দিল্লিকে ১৬০ রানে আটকে বাজিমাত বাজিগরের দল। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×