ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে মহাগুরুত্বপূর্ণ ত্রিদেশীয় সিরিজ, এর আগে সাসেক্সে ১০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প ও দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের অভিযান শুরু বাংলাদেশ দলের

ইংল্যান্ড পৌঁছে প্রস্তুতিতে মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

ইংল্যান্ড পৌঁছে প্রস্তুতিতে মাশরাফিরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। বুধবার রাতে ঢাকা ত্যাগ করে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। সেদিনই গভীর রাতে পৌঁছে যায়। পৌঁছানোর পর বৃহস্পতিবার দুপুরেই অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ দল। সাসেক্সে অবস্থানের সময় দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। মূলত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে নিজেদের প্রস্তুত করাটাই লক্ষ্য। এ কারণে আগেভাগে ইংল্যান্ডে গিয়ে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে চায় টাইগাররা। এখানে ১ ও ৫ মে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এছাড়া প্রায় একই কন্ডিশনের আয়ারল্যান্ড সফরে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ খেলারও সুযোগ রয়েছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (আইপিএল) খেলার কারণে অবশ্য আপাতত দলের সঙ্গে নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও পেস স্তম্ভ মুস্তাফিজুর রহমান। ১২ মে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু। এর আগেই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন এ দুই ক্রিকেটার। তবে আপাতত ১০ দিনের অনুশীলন ক্যাম্প তাদের ছাড়াই চালাবে মাশরাফির দল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু হবে জুনে। এবার আয়োজক ইংল্যান্ড। দুটি আসর খেলতে পারেনি বাংলাদেশ দল র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকার কারণে। এবার বিশ্বের ৭ নম্বর ওয়ানডে দল হিসেবে ভালভাবেই এ মর্যাদার টুর্নামেন্টে ফিরেছে টাইগাররা। তবে এর আগে আয়ারল্যান্ড সফরটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ দলের জন্য। কারণ শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটি করে ম্যাচ খেলতে হবে। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের ওপরে (৩ নম্বরে) আর আয়ারল্যান্ড অনেক পিছিয়ে (১২ নম্বর)। সে কারণে এ আসরের ম্যাচগুলোর ফলাফল প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিংয়ে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিততে পারলে র‌্যাঙ্কিংয়ে বেশ উন্নতি হওয়ার সুযোগ থাকবে। আর আইরিশদের কাছে হেরে গেলে রেটিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। অথচ ২০১৯ বিশ্বকাপের বিষয়টি বিশেষভাবে মাথায় রাখতে হচ্ছে। কারণ সরাসরি অংশ নিতে হলে এ বছর ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ঘোষিত আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরা আটে থাকতে হবে। তাই এখন থেকে প্রতিটি টুর্নামেন্ট, সিরিজ র‌্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ বিষয়ে মাশরাফিরাও সতর্ক। তিনি দেশ ছাড়ার আগে বলেছেন, ‘চারটা ম্যাচ আছে। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলতে হবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির জন্য এই সিরিজ খুব গুরুত্বপূর্ণ। র‌্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আন্তর্জাতিক ম্যাচ, জিতলে আত্মবিশ্বাস ভাল থাকবে। কিন্তু হারলে আমরা কিছুটা চাপে থাকব।’ ১১৩ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৯২ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ৪২ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বাদশ স্থানে। ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে র‌্যাঙ্কিং ঠিকঠাক রাখতে চান মাশরাফি। এই মুহূর্তে অবশ্য আয়ারল্যান্ডের পাশেই সাসেক্স কাউন্টিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আগে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো এবং বুঝে ওঠার দারুণ সুযোগ মাশরাফিবাহিনীর। এ কারণে কন্ডিশনিং ক্যাম্প রাখা হয়েছে ১০ দিনের। যদিও সাকিব, মুস্তাফিজ সেই অনুশীলন ক্যাম্প মিস করছেন। কিন্তু গত বছর মুস্তাফিজ এই কাউন্টির হয়েই খেলে গেছেন আর সাকিবের জন্য ইংল্যান্ডের পরিবেশ চেনা। তাই খুব একটা সমস্যা হবে না তাদের। বাকিদের নিয়ে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। বৃহস্পতিবারই অনুশীলন করেছেন মাশরাফিরা। ১ মে ডিউক অব নরফোকের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের আগে আরও দু’দিন অনুশীলনের সময় পাবে সফরকারীরা। আর ৫ মে সাসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচের আগেও থাকছে অনেক সময়। এ দুটি ম্যাচ খেলে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর একটা অভিজ্ঞতা অর্জন করে ফেলবেন ক্রিকেটররা। এবার দলের সঙ্গে আছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেনও। ফিরেছেন দীর্ঘদিন পর। তারজন্য পরীক্ষা নিজেকে মেলে ধরে সামর্থ্য প্রমাণ করার। এরপর আয়ারল্যান্ডে চলে যাবে দল। খেলবে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ। অবশ্য ত্রিদেশীয় সিরিজে কোন ফাইনাল নেই। তবে সেরা দল হয়েই শেষ করার প্রত্যয় জানিয়ে ঢাকা ছেড়েছেন মাশরাফি। জিততে চেয়েছেন সবগুলো ম্যাচ। সেটার কতখানি প্রতিফলন ঘটাতে পারবে দল তা বোঝা যাবে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই। ভুলত্রুটি শোধরানোর জন্য যথেষ্ট সময়ও থাকবে। এজন্য সাসেক্সে প্রস্তুতি ক্যাম্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন কোচ চান্দিকা হাতুরাসিংহে। তিনি বলেছেন, ‘সাসেক্স ক্যাম্পের পুরোটা জুড়ে শুধু কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার দিকেই প্রাধান্য থাকবে। সামর্থ্য ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের সেরা পরিকল্পনা করব। আয়ারল্যান্ডে জয়ই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই সঙ্গে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের অবস্থানের উন্নতি করতে চাই।’
×