ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নত দেশ হতে হলে সব শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

উন্নত দেশ হতে হলে সব শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার্থে সবকিছু করা হবে। তৈরি পোশাক খাতে দেশের ৪৫ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শিল্প কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকরা এখন উপযুক্ত বেতনে, নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কারখানায় কাজ করছে। শুক্রবার জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস-২০১৭ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক অভিযোগ করে বলেন, শ্রম আদালতে কোন শ্রমিক বিচার পায় না। দ্রুত ও সহজ বিচারের লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত আইন সংশোধন প্রয়োজন। পোশাক কারখানার পরিবেশ নিয়ে জোর আলোচনা চললেও অন্যান্য কল-কারখানার লাখ লাখ শ্রমিকের কষ্টের কথা বরাবরই আড়ালে থেকে যায়। উন্নত দেশ হতে হলে সব ধরনের শ্রমিকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ‘শোভন কর্ম পরিবেশ, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সভাপতি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ সামসুজ্জামান ভূঁইয়া, ঢাকায় নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনোইট পিয়ারি লারামি, ঢাকায় নিযুক্ত আইএলও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিভাস বি রিডি, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি সুক্কুর মাহমুদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে মেহনতী মানুষের স্বার্থ সুরক্ষা করেছেন। ১৯৭২ সালের ২২ জুন বাংলাদেশ আইএলও-এর সদস্য পদ লাভ করেছে। আজ তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করেই দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ছিল মাত্র ১৬০০ টাকা সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে ২০১৩ সালে শ্রমিকদের বেতন ২২৩ ভাগ বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকরা সরকারী চাকরিজীবীদের মতো প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পাচ্ছেন। মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের মেহনতের কারণেই আজ আমাদের দেশের অর্থনীতির এ উন্নতি হয়েছে। গতবছর আমাদের রফতানি আয় ছিল ৩৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর ৮১ ভাগই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় হতাহতের দৃশ্য দীর্ঘদিন প্রচারমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। ফলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি পোশাক ক্রেতাদের মধ্যে পড়েছে। আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে। দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো ইতোমধ্যে কমপ্লায়েন্স করা হয়েছে। পুরাতন কারখানার বদলে নতুন আধুনিক গ্রীন ফ্যাক্টরি তৈরি করা হয়েছে। শ্রমিকরা এখন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছে। শ্রমিকদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে তৈরি পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
×