ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশে আরও কর্মী পাঠানোর জন্য নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

বিদেশে আরও কর্মী  পাঠানোর জন্য নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ বাংলাদেশের শ্রমবাজার মূলত ১১টি দেশ। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ওমান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়া। এই দেশগুলোতেই দেশের বেশি সংখ্যক কর্মী কর্মরত। যদিও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্বের ১৬২ দেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার রয়েছে। এর বাইরে আরও নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিদেশে আরও বেশি কর্মী পাঠানোর জন্য নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে। নতুন বাজারের মধ্যে রয়েছে, উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, পশ্চিম ইউরোপ, অষ্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, জাপান, ব্রাজিল, ইতালি ও সুইডেন। এই দেশগুলোতে দক্ষ কর্মী নিয়োগের জন্য চেষ্টা চলছে। বাজারগুলো তৈরি হলে দেশের বহু শিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। তবে নতুন বাজারের পাশাপাশি পুরনো বাজারগুলোর কয়েকটিতে বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। সমস্যাগুলো দূর করার জন্যও কাজ করা হচ্ছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজারে বর্তমানে বৈধ পথে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ রয়েছে। এই বাজারটি চালু করার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশটির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাজারটি খুলে যাবে। বাজারটি খুলে গেলে দেশ থেকে ২ থেকে আড়াই লাখ কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশী কর্মী কর্মরত রয়েছেন। অভিবাসন নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি সংস্থার মতে বাকি ১৬২ দেশে বাংলাদেশের নাগরিক রয়েছেন এটা ঠিক। তারা ওই সব দেশ থেকে রেমিটেন্সও পাঠাচ্ছেন। কিন্তু প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে তারা যাননি। নানা উপায়ে তারা বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ওমান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, লেবানন, জর্ডান ও লিবিয়াতে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। সরকার দাবি করছে ১৬২ দেশে বাংলাদেশের শ্রমের বাজার রয়েছে। যে বাজারগুলোতে প্রতিনিয়ত কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। এই ১৬২ দেশের মধ্যে এমনও দেশ রয়েছে, যে দেশে গত ২ বছরে একজন কর্মীও নিয়োগ হয়নি। দেশের যে ১১টি মূল শ্রমবাজার রয়েছে, ওই বাজারগুলো ঠিক থাকলে প্রতিবছরে দেশ থেকে ১০ থেকে ১২ লাখ কর্মী নিয়োগ পেতেন। পুরনো বাজারগুলোই তো ঠিক থাকছে না। মাঝে মাধ্যেই পুরনো বাজারগুলোতেও সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সম্প্রতি বলেন, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার পুনরায় চালুর মাধ্যমে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হবে। বিদেশে বেশি বেশি কর্মী পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয় নানামুখী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য সারাদেশে ৩৮টি ট্রেনিং সেন্টারে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল জাপান সফর শেষ করে গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন। তার সফর সঙ্গী ছিলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নুরুল মজিদ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, বিএমইটির ডিজি সেলিম রেজা, উপ-সচিব সাহিনা ফেরদৌস, পিএস মোঃ মোহসিন। প্রতিনিধিদল সেখানে ৯ দিন অবস্থান করেছেন। জাপানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে অধিক দক্ষ কর্মী নিয়োগের। জাপানের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী পাঠানোর বিষয়টি প্রতিনিধিদল নিশ্চিত করতেই মূলত এই সফর। বর্তমানে সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ কর্মী তৈরি এবং প্রেরণে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জাপানে নির্মাণ খাতে বাংলাদেশী কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা চায় বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে। জাপানের বাজারটি চালু হলে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
×