ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রিমান্ড শেষে নাগরী ও সুমি জেলহাজতে, সব অস্বীকার

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

রিমান্ড শেষে নাগরী ও সুমি জেলহাজতে, সব অস্বীকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধানম-ির ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার এ মামলার আসামি সাবেক কাস্টমস কমিশনার শাহাবুদ্দিন নাগরী ও নিহত নূরুল ইসলামের স্ত্রী নূরানী আক্তার সুমির দ্বিতীয় দফার চারদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাদের জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় পর পর দু’দফায় ১০ দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তেমন কোন তথ্য আদায় করতে পারেনি নিউমার্কেট থানার পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে- থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় জামাই আদরে রাখার দরুন তাদের কাছ থেকে হত্যা সংক্রান্ত কোন তথ্যই আদায় করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি প্রথম দফা রিমান্ডে থাকার সময় যেসব তথ্য প্রদান করেছিলেন, দ্বিতীয় দফা সেই তথ্য অস্বীকার করেছেন কোটিপতি আসামি শাহাবুদ্দিন নাগরী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউমার্কেট থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আমরা বিভাগীয় আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। শুক্রবার মামলার সকল কাগজ ও আলামত ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতারকৃত শাহাবুদ্দিন নাগরী ও সুমির দ্বিতীয় দফার চারদিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। ফলে শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠনো হলে জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাহাবুদ্দিন নাগরী ও সুমি পরস্পরবিরোধী তথ্য দিচ্ছেন। আগের পাঁচ দিনের রিমান্ডে তারা যে তথ্য দিয়েছিলেন- এখন তা অস্বীকার করছেন। প্রথম দফার রিমান্ডে শাহাবুদ্দিন নাগরী ও সুমি নূরুল ইসলামকে হত্যা ও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে থাকার সময় তারা আগের দেয়া তথ্য সব অস্বীকার করে বলছেন তারা পরিস্থিতির শিকার। এখন তারা দাবি করছেন প্রেম বলতে কিছু ছিল না। এমনিতে শুধু জানাশোনা ছিল, ঘনিষ্ঠতা ছিল। সেজন্যই সুমির বাসায় গিয়ে আড্ডা চলত। গত ১৩ এপ্রিল ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামকে এলিফ্যান্ট রোডে নিজ বাসার বেড রুমের ফ্লোরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরের দিন নিহতের বোন শাহানা রহমান কাজল ভিকটিমের স্ত্রী, স্ত্রীর বন্ধু মোঃ শাহাবুদ্দিন নাগরীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত ১৭ এপ্রিল ভোরে ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকা থেকে শাহাবুদ্দিন নাগরী ও সুমিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওইদিন তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২৩ এপ্রিল তাদের দ্বিতীয় দফায় চারদিনের রিমান্ডে দেন আদালত। বহুল আলোচিত উত্তরা ষড়যন্ত্রের অন্যতম সংগঠক ছিলেন গ্রেফতারকৃত কবি, সুরকার, গায়ক ও নাট্যকার শাহাবুদ্দিন নাগরী। সরকারী চাকরিতে থাকাকালে শোবিজের নামে নারীদের সঙ্গে একান্তে সময় দেয়া, ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা আদায়, কাস্টমস কর্তৃক মামলা এবং গোপনে নানা পন্থায় বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক বনে যান তিনি। বেপরোয়া জীবনযাপনের কারণেই তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। এসব বিষয়েও তদন্ত হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউমার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, আমরা শুধু ব্যবসায়ী হত্যা মামলার তদন্ত করেছি। নাগরীর বিরুদ্ধে আর কোন অভিযোগ থাকলে তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) করবে। এজন্য মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এ ব্যাপারে কথা হয় ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার প্রধান মোঃ মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমিও শুনেছি মামলাটি ডিবিতে এসেছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর কোন অভিযোগের ভিত্তি থাকলে সেক্ষেত্রে তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
×