ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলার চিত্রশালায় আন্তর্জাতিক গ্রন্থ দিবসের বইমেলা

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৮ এপ্রিল ২০১৭

শিল্পকলার চিত্রশালায় আন্তর্জাতিক গ্রন্থ দিবসের বইমেলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পের সঙ্গে সাহিত্যের সংযোগে উৎসবের রং লেগেছে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা প্লাজায়। ২৩ এপ্রিল থেকে সপ্তাহব্যাপী নৃত্যমেলার সূচনা হওয়া এ আঙ্গিনায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো তিন দিনের বইমেলা। প্রথম দিনে খুব বেশি পাঠকের সমাগম না ঘটলেও একেবারে নিষ্প্রাণ ছিল না এ বইয়ের মেলা। নৃত্যমেলায় আগতদের অনেকেই অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন গ্রন্থমেলায়। আন্তর্জাতিক গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস ২০১৭ উদ্যাপন উপলক্ষে তিন দিনের এ বইমেলার আয়োজক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র। আয়োজনে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এ মেলার উদ্বোধন করেন। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক নজরুল ইসলাম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। উদ্বোধনী কথনে এ বছরের নববর্ষের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্তকরণের প্রসঙ্গটি উঠে আসে আসাদুজ্জামান নূরের বক্তব্যে। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল পাঁচটার পর সব অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হলেও সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় ছিল। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু পাঁচটার পর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিলে সব সমস্যার সমাধান হবে না। কারণ, যেখানে সাধারণ মানুষ ঘুরছেন সেখানেও সমস্যা হতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে মূল সমস্যা নিরাপত্তা নয়, মস্তিষ্কের সমস্যা। কারও মনের পাহারা দেয়া সম্ভব নয়। এজন্য সংস্কৃতিচর্চা বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা গ্রন্থকেন্দ্র থেকে বিভিন্ন জেলায় বইমেলার আয়োজন করছি, যাতে ঢাকার বড় প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করে। ফলে সেখানে ব্যাপক পাঠকের সমাগম হয়। এক্ষেত্রে প্রকাশক যেমন লাভবান হন তেমনি কাক্সিক্ষত বই পেয়ে পাঠকরাও উপকৃত হন। এ বইমেলায় অংশগ্রহণ করছে মোট ২১টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা, বিদ্যাপ্রকাশ, জার্নিম্যান বুকস্, ভাষাচিত্র, অনিন্দ্য প্রকাশ, একুশে বাংলা প্রকাশ, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, শোভা প্রকাশ, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, শিখা প্রকাশনী, দি স্কাই পাবলিশার্স, অন্যপ্রকাশ, সময় প্রকাশন, তাম্রলিপি, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স, কাকলী প্রকাশনী, দি ইউনিভার্সেল একাডেমি, সংঘ প্রকাশন, আগামী প্রকাশনী, আহমদ পাবলিশিং হাউস ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। তিন দিনের এ মেলা চলবে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। হাওড়বাসীর সহায়তায় চিত্রশিল্পীদের তহবিল সংগ্রহ কর্মশালা বন্যার্ত হাওড়বাসীদের সহায়তায় সচল হলো চিত্রশিল্পীর ক্যানভাস। ছবি এঁকে সেই ছবি বিক্রির অর্থ ব্যয় হবে বন্যার্ত হাওড়বাসীদের কল্যাণে। এ লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারির সামনে বৃহস্পতিবার চিত্রপট রাঙিয়েছেন শিল্পীরা। এরপর সদ্য আঁকা ছবিগুলো ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে দেয়ালে। হাওড়বাসীদের সহায়তায় চিত্রশিল্পীদের তহবিল সংগ্রহে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। শুরু হয়েছে গতকাল। জয়নুল গ্যালারির সামনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ছবি এঁঁকেছেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পী, চারুকলার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বন্যার্ত হাওড়বাসীদের সহায়তায় অনন্য এ উদ্যোগ নিয়েছে চিত্রশিল্পীদের সংগঠন ‘ঢেউ’। ‘হাওড়পাড়ে বিপন্ন মানুষ : ছবি কিনুন পাশে দাঁড়ান’ সেøাগানে শুরু হয়েছে এ আয়োজন। চিত্রশিল্পী আবুল বারক আলভী বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী নিসার হোসেনসহ চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। চারুকলার শিক্ষক শিল্পী সুমন বৈদ্য জানান, এ আয়োজনে আঁকবেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পী, চারুকলার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও অনেকে বাইরে থেকে ছবি এনে বন্যার্তদের সহায়তায় জমা দেবেন। বড় শিল্পীদের আঁকা ছবি তুলনামূলক কম মূল্যে এখান থেকে কেনা যাবে। সাধারণ শিল্পীদের আঁকা ছবি বিক্রি হবে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। এসব ছবি বিক্রির অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় প্রদান করা হবে। দুপুরে এ আয়োজনের উদ্বোধনের পর বিকেলের মধ্যেই শিল্পীরা এঁকে ফেলেছেন তিরিশটিরও বেশি চিত্রকর্ম। ৬ মে পর্যন্ত চলমান এ আয়োজনে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ছবি আঁকবেন শিল্পীরা।
×