ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হেফাজত ও ভাস্কর্য বিতর্ক

কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

 কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্বেগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নিরাপত্তার নামে পহেলা বৈশাখের কর্মসূচী সঙ্কুচিত এবং সম্প্রতি হেফাজত ও ভাস্কর্য অপসারণ নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানালেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের চার শীর্ষ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। বুধবার রাতে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে তারা এ উদ্বেগ জানান। ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, রামেন্দু মজুমদার, বর্তমান সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। এ সময় বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সুজিত রায় নন্দী, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানান, অনানুষ্ঠানিক এই বৈঠকে জোটের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে নিরাপত্তার নামে পহেলা বৈশাখের কর্মসূচী সঙ্কুচিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে বিনির্মাণ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক নেতাকর্মীরা সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে। এবার পহেলা বৈশাখ ঘটা করে পালনের জন্য সরকার থেকেও সারাদেশে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছিল। সরকার পহেলা বৈশাখ পালনে সহায়তা দিচ্ছে, বোনাস দিচ্ছে, অথচ প্রশাসন থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে কোথাও ৫টার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি, বৈশাখী মেলাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এভাবে চললে বৈশাখী অনুষ্ঠানই একদিন বন্ধ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারের পদক্ষেপ আশা করি। এছাড়া তারা কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিতে হেফাজতের সঙ্গে বৈঠক এবং সুপ্রীমকোর্টের ভাস্কর্য অপসারণ নিয়েও নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান। সূত্র জানায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের এসব বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, হেফাজতের সঙ্গে সরকার বসেনি, কোন চুক্তিও করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। আপনারা যেমন অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে লড়াই করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারও একই লড়াই করছে। তাই সাম্প্রদায়িক কোন শক্তির সঙ্গে আপোসের প্রশ্নই উঠে না। ভাস্কর্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারই দেশের জেলা ও উপজেলায় ভাস্কর্য নির্মাণ করছে। আমরা কখনই ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু সুপ্রীমকোর্টে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে সুপ্রীমকোর্টই সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবং স্বাধীনতাবিরোধী সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করতে সাংস্কৃতিকসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।
×