স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জ্যামাইকা টেস্টে নাটকীয় জয় পেয়েছে পাকিস্তান। প্রথম দু’দিন বৃষ্টির দাপট, পরের দু’দিন ব্যাটসম্যানদের, এরপরও ম্যাচ ফল দেখবে অনেকেই ভাবেননি। ইয়াসির শাহর ঘূর্ণিবলে বেসামাল ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরাই সেটা সম্ভব করেছেন। প্রথমে ২৮৬ রান করা উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ১৫২তে। ৩২ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট (১০.৫ ওভার) হারালেও ৭ উইকেটের জয়ে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। আগের ইনিংসে অতিথিদের সংগ্রহ ছিল ৪০৭। সঙ্গীর অভাবে ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি হয়নি মিসবাহ-উল হকের, ৯৯তে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক। আর প্রথম পাকিস্তানী হিসেবে ১০ হাজার রানের ইতিহাসে নাম লেখান ইউনুস খান। দুই তারকার বিদায়ী সিরিজের শুরুটা রাঙিয়ে দিলেন ইয়াসির শাহ। ২ ও ৬টি করে মোট ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা এই লেগস্পিনার। নিশ্চিত ড্র হতে যাওয়া ম্যাচে এভাবে জয় উপহার দেয়ায় সতীর্থদের বিশেষ ধন্যবাদ দিয়েছেন সেনাপতি মিসবাহ।
৪ উইকেটে ৯৩ রান নিয়ে শুরু করা ক্যারিবীয়দের মঙ্গলবার শেষদিনে দ্বিতীয় ইনিংস স্থায়িত্ব মোটে ২৪.৪ ওভার। ৫৯ রান যোগ করে স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায় ১৫২ রানে। রোস্টন চেজ অপরাজিত থাকেন ১৬ রানে। দিনের শুরুতেই ভিশাল সিংকে (৯) বোল্ড করে প্রথম সাফল্য এনে দেন মোহাম্মদ আমির। তিন বলের মধ্যে দেবেন্দ্র বিশু ও শেন ডাওরিচকে আউট করে বিপদ বাড়ান অভিষিক্ত পেসার মোহাম্মদ আব্বাস। বাজে এক শটে সিøপে ইউনুসের হাতে ধরা পড়েন নাইটওয়াচম্যান বিশু (১৮)। ইনসুইংয়ে পরাস্ত হয়ে শূন্য (০) রানে ফেরেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডাওরিচ। প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া চেজ ও জেসন হোল্ডারের ব্যাটে ছিল লড়াইয়ের আভাস। সেটাকে এবার বেশি বড় হতে দেননি ওয়াহাব রিয়াজ। তার বলে উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসবন্দী হন স্বাগতিক অধিনায়ক হোল্ডার (১৪)। এরপরই চার বলের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ দুই উইকেট তুলে নেন ম্যাচের নায়ক ইয়াসির। আলজেরি জোসেফ (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার পর তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল (০)।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার ইয়াসির। সবমিলিয়ে ৮ উইকেট শিকারে ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে এই লেগস্পিনারের হাতে। ৩২ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভাল হয়নি পাকিস্তানেরও। ৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার। পেসার গ্যাব্রিয়েলের বলে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসবন্দী হন আহমেদ শেহজাদ (৬)। জোসেফের বলে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন আজহার আলি (১)। লাঞ্চের পর বিদায় নেন ইউনুসও (৬)। বিশুর সেই ওভারেই দলকে দারুণ জয় এনে দেন মিসবাহ। প্রথম দেখে শুনে খেলে পরের দুটি বলই উড়িয়ে পাঠান সীমানার বাইরে। ছক্কা। ৩ বলে মিসবাহ অপরাজিত ১২ রানে। ‘আপনি যদি উপভোগই না করেন তাহলে খেলার কোন মানে হয় না।’ টানা দুই ছক্কায় জয় নিশ্চিতের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া মিসবাহর। পাকিস্তান অধিনায়ক আরও যোগ করেন, ‘প্রায় ড্র হতে যাওয়া ম্যাচে এমন জয় সত্যি দারুণ। এটা আসলে টিম স্পিরিটের ফসল। বিদায়ী সিরিজের শুরুতে এমন উপহারের জন্য সতীর্থদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ রবিবার ব্রিজটাউনে শুরু সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।