ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চিত্র প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যালারিতে শোভা পাচ্ছে নর-নারীর মুখের অব্যায়ব, আকাশে পাখি উড়িয়ে দিচ্ছে একজন নারী, প্রজাপতি উড়িয়ে দিচ্ছে একজন পুরুষ। গ্যালারির অন্য দেয়ালে রয়েছে ফুল, নারী-পুরুষের ভালবাসার চিত্র। প্রয়াত চিত্রশিল্পী কাজী হাসান হাবিবের আঁকা এসব ছবি নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৫ নম্বর গ্যালারিতে বুধবার শুরু হয়েছে চিত্র প্রদর্শনী। বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সংগঠনটি। ‘যেখানে বাংলাভাষী সেখানেই বঙ্গীয়’ এই আহ্বানে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এদিন সন্ধ্যায় নাচ, গান আর কবিতা পাঠের মধ্যদিয়ে পালিত হয় সংগঠনের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সংগঠনের সভাপতি কথাশিল্পী সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে শুরু হয় উদ্বোধনী পর্ব। শুরুতে সম্মেলক কণ্ঠে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গানের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, কবি আসীম সাহা, কবি আজিজুর রহমান আজিজসহ অন্যান্য অতিথিরা। এরপর প্রয়াত চিত্রশিল্পী কাজী হাসান হাবিবের অপ্রদর্শিত চিত্রকর্ম নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এ সময় বক্তারা বলেন, শিল্পী কাজী হাসান হাবিব স্বাধীনতা উত্তর প্রচ্ছদ শিল্পের পথিকৃৎ। তার অপ্রদর্শিত চিত্রকর্ম এ প্রজন্মের শিল্পীদের অনুপ্রেরণার উৎস। পাভেল রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে- ফটোসাংবাদিকতা জগতে পাভেল রহমান সুপরিচিত নাম। বাংলাদেশের ইতিহাস যেন পাভেল রহমানের ক্যামেরার ফ্রেমে বাঁধা পড়ে আছে। নূর হোসেনের ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’সহ অসংখ্য বিখ্যাত ছবি তুলেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর নানামাত্রার ছবি ধরা পড়েছে পাভেল রহমানের ক্যামেরায়। দেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিদেশের স্বনামধন্য পত্রিকাগুলোতেও কাজ করেছেন এই আলোকচিত্রী। তার ক্যামেরায় উঠে এসেছে সাধারণ মানুষের জীবন। বঙ্গবন্ধুর ছবি যখন তিনি তুলেছেন সেই ছবি ছিল ‘মানুষ বঙ্গবন্ধু’র ছবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও ছবি যখন পাভেল তোলেন তখন তা প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকে না। সেই ফ্রেমে ধরা পড়ে মানুষ শেখ হাসিনা। বুধবার ছিল এই ফটোসাংবাদিকের ৬১তম জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষে ‘পাভেল রহমানের ৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন পরিষদ’ বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজন করে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠানের। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষে পাভেল রহমানের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘সাংবাদিকতায় আমার সুখস্মৃতি’ শিরোনামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পরে ক্যামেরার ডিজাইনে বানানো কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমিমা হোসেন ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি। বক্তব্য রাখেন পাভেল রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাওলা ব্রাদার্সের প্রকাশক আহমেদ মাহমুদুল হক। মিলনায়তনের বাইরে খোলা চত্বরে আয়োজিত প্রদর্শনীতে পাভেল রহমানের দীর্ঘ কর্মজীবনের অল্পকিছু ছবি স্থান পেয়েছে। কিন্তু তার পরিচয় তুলে ধরবার জন্য তা যথেষ্ট। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন সময়ের আন্দোলনের ছবি যেমন উঠে এসেছে তেমনি উঠে এসেছে সাধারণ মানুষের ছবি। তার ছবিতে সবসময় বাংলাদেশের কথা, বাংলার মানুষের কথা উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু, তার কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ মুহূর্তের বেশ কিছু ছবি। আলোচনায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, পাভেল দীর্ঘদিন ধরে ছবি তুলছেন। এখন নিজেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন। তার ছবি বাংলাদেশের ইতিহাসকে ধরে রেখেছে। পাভেল সবসময় ছবিতে মানুষের কথা বলেছেন। তাসমিমা হোসেন বলেন, যতদিন বাংলাদেশ, যতদিন বঙ্গবন্ধু, যতদিন শেখ হাসিনা ততদিন পাভেল রহমানের ছবি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে। আমরা সবসময় বলি ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্র এখনও হচ্ছে, সেসব ষড়যন্ত্র সবচেয়ে বেশি হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সঙ্গে। পাভেলের ছবিতে সেইসব ইতিহাস ধরা রয়েছে। ছবিতে যেমন ইতিহাস ধরা রয়েছে তেমনি ছবির মানুষগুলোর ইতিহাসও ধরা রয়েছে সেই আলোকচিত্রীর মনে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। পাভেল একজন ‘মানুষ বঙ্গবন্ধু’র মানবিক দিকটি তুলে ধরেছেন ছবিতে, লেখায়। নাট্যোৎসবের তৃতীয় দিনে মঞ্চস্থ দুই নাটক শিল্পকলা একাডেমি কর্মচারী ইউনিয়নের ৩৭ বছর পূর্তি এ বছর। এ উপলক্ষে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ‘শিল্প-সংস্কৃতি-সৃজনশীলতা, জয় জয় জয় মানবতা’ শিরোনামে নাট্যোৎসব। বুধবার ছিল এই নাট্যোৎসবের তৃতীয় দিন। এদিন মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাটক ‘কোর্ট মার্শাল’ এবং পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় সুবচন নাট্য সংসদের নাটক ‘মহাজনের নাও’। এর মধ্যে স্বদেশ দীপকের গল্প অবলম্বনে সলিল চৌধুরী অনুদিত ‘কোর্ট মার্শাল’ এর নির্দেশনায় ছিলেন এ এম সোলায়মান। পৃথিবীর ইতিহাসই মানুষের সভ্যতার ইতিহাস। আর সভ্যতার ইতিহাস, সত্য আবিষ্কারের ইতিহাস। সত্য-মিথ্যার দ্বন্দ্ব থেকেই সত্যের স্ফুলিঙ্গ নির্মাণ করেছে সভ্যতা। আর তাই সত্য কী তা প্রায়শই নির্ণয় করে ভবিষ্যত। সেই মহান সত্য কখনও কখনও হয়ে ওঠে মানুষের প্রাণের চেয়েও মূল্যবান বস্তু, যা মানব আত্মার মুক্তির জন্য অনিবার্য প্রয়োজন। আত্মার মুক্তিই যদি কল্যাণের সাধনা হয়, সুন্দরের আরাধ্য হয়, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হয়, তবে নিশ্চিত সত্যের সন্ধানেই আত্মার মুক্তি। এভাবেই বিন্যাস্ত হয়েছে নাটকটির কাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, সাথী রঞ্জন দে, চন্দন রেজা, রিয়াজ হোসেন, ফৌজিয়া করিম অনু, প্রশান্ত হালদার, সেলিম মাহবুব প্রমুখ। অন্যদিকে একইসময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ শাকুর মজিদ রচিত ‘মহাজনের নাও’। এর নির্দেশনায় ছিলেন সুদীপ চক্রবর্তী। বাউল সম্প্রদায়ের একটা অংশ গান রচনা করেন দেহতত্ত্ব নিয়ে। নিজেকে জানার, নিজেকে আবিষ্কার করার এবং সৃষ্টিকর্তাকে খোঁজার চেষ্টায় তারা জীবনভর সাধনা করেন। এ সাধনার অংশ হিসেবে তারা কেউ কেউ গান রচনা করেন এবং নিজেও গান। বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিমের সারা জীবনের সাধনা ছিল নিজেকে জানা এবং সৃষ্টিকর্তার রহস্য উদঘাটন করা। এ ক্ষেত্রে দেহতত্ত্বকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি অনেক গান লিখেছেন। যেহেতু শাহ আব্দুল করিম সুনামগঞ্জের ভাটি অঞ্চলের মানুষ ছিলেন, তার গানে তিনি নৌকাকে বেশি ব্যবহার করেছিলেন; নিজের দেহের রূপক হিসেবে। পতিসরে রবীন্দ্র কাচারিবাড়ি পরিদর্শনে সংস্কৃতিমন্ত্রী নওগাঁ থেকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কবির স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁর আত্রাইয়ের পতিসরে চলছে সাজসাজ রব। আগামী ২৫ বৈশাখ (৮ মে) পতিসরে কবির জন্মানুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ। তার আগমনকে কেন্দ্র করে বুধবার পতিসর পরিদর্শনে এসেছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বেলা ১১টায় হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা থেকে পতিসরে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ ইব্রাহিম হোসেন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের পরিচালক আলতাফ হোসেন।
×