ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অমিত দাস

গণপরিবহনে গণদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৭ এপ্রিল ২০১৭

গণপরিবহনে গণদুর্ভোগ

‘গাড়ির চাকা ঘুরবে না দোকানপাট খুলবে না’- আন্দোলনের এই আওয়াজটি সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। গাড়ির চাকা না ঘুরলে সমাজের চাকা, সংসারের চাকা ঘোরে না। এমনকি দেশের অর্থনীতির চাকাটিও এমনি এমনি অচল হয়ে বন্ধ হয়ে যায়- এটা কে না বোঝে। ক’দিন আগেই ঘাতক চালকের সাজায় সাজা পেল সারা বাংলাদেশের জনগণ। আর দেশের আর্থিক যে ক্ষতিটা হলো তা একজন অর্থনীতিবিদই ভাল বলতে পারবেন। গণপরিবহনে না চড়ে উপায় নেই। বাংলাদেশের বাস্তবতায় ক’জন ব্যক্তিই বা প্রাইভেটকারে কর্মপ্রয়োজনে যাতায়াত করতে পারবেন। আর্থিক অবস্থা তো তা সায় দেয় না। দেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়নে আধুনিক উন্নত গতিশীল যাত্রীবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থার বিকল্প নেই। জনগণের অর্থ, শ্রম ও সময় বাঁচাতে জনদুর্ভোগ লাঘবে গণপরিবহন ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলা তথা অচলাবস্থার অবসান আশু প্রয়োজন। জনসেবা ও সহানুভূতির মনোভাব মনে পোষণ করে সামাজিক স্বার্থকে অক্ষুণ্ণ রেখে বিত্তবানদের ব্যক্তিস্বার্থকে বিসর্জন দিতে হবে। পরিবহন খাতে যত রকম অনিয়ম-দুর্নীতি-অপকর্ম রয়েছে। তা অচিরেই দূর করতে হবে। গণপরিবহন ব্যবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বাস মালিক সমিতি এবং পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্যের সমস্যা সমাধানকল্পে সমন্বয় সাধন আজ অতীব জরুরী তা না করা গেলে দেশের গণপরিবহন খাতে চলমান বিশৃঙ্খলা কাটিয়ে পুনরায় ভারসাম্য পূর্ণ অবস্থা ফিরিয়ে আনা দুরূহ হবে যা প্রকারান্তরে জনগণের কাছে সরকারের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করবে। চরম দুর্ভোগে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়বে। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামগ্রিক সমৃদ্ধির উন্নয়ন প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হবে। যা আমার মতে দেশ দরদী কোন নাগরিকেরই কাম্য নয়। মিশুক মনিরের দুর্ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত জামিরের আদালতের রায়ের পর থেকেই দেশে পরিবহন খাতে এক নিয়ন্ত্রণহীন নৈরাজ্য বিরাজ করছে। যাতে নাগরিক জীবন নাজেহাল। এর শিকার ছিল তখনকার লাখ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থী। অফিসগামী কর্মকর্তা-কর্মচারী এর থেকে মৃত্যুপথযাত্রী রোগীও রেহাই পায়নি। এই অরাজকতা থেকে জনজীবনকে মুক্ত করার উপায় কি। কেবল এর দোষ তার ঘাড়ে, তার দোষ এর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেই জনসঙ্কটের সমাধান হয় না। আর এই গণপরিবহনে গণদুর্ভোগের দায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। চাকরির সুবাদে আমিও এখন যানবাহনের একজন ডেইলি পেসেঞ্জার। গত চার বছর ধরে সপ্তাহে ছয় দিনই যানবাহনের যন্ত্রণাদায়ক দুঃসহ দুর্দশার দুর্ভোগের ভুক্তভোগী। আমার নিত্যদিনের নেত্রকোনায় যাতায়াতের নিত্যসঙ্গী ময়মনসিংহ টু নেত্রকোনায় মহুয়া গেটলক সার্ভিস নামে এ রুটে চলাচলকারী যানবাহনগুলো। বাসগুলো অধিকাংশই পুরনো সিটগুলো নোংরা তেল ছিটছিটে ছারপোকার বাসা, সিটের কাপড়ের কভারগুলো কতদিন ধরে যে সাবানের মুখ দেখে না তা প্রতœতত্ত্ববিদের গবেষণার বিষয়। গাড়িগুলোর সামনের গ্লাস ভাঙ্গা জানালার গ্লাসও আছে বা নেই। আর বর্ষার দিনে যাত্রীদের একেবারে গোসল করতে হয় বাসের ছাদ চুয়ে পড়া বৃষ্টির পানিতে। চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজ, নেত্রকোনা থেকে
×