ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেমিনারে জানালেন আইনমন্ত্রী;###;সেবা খাতে ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব ব্যবসায়ীদের

নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২৬ এপ্রিল ২০১৭

নতুন ভ্যাট আইনে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে করদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হবে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে ভ্যাট ও মূল্য সংযোজন কর বাস্তবায়ন বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কথা মাথায় রেখে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমানোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। আগামী জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এনবিআর। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, এনবিআরের ভ্যাট থেকে শুরু করে সকল আইন ব্যবসা, বিনিয়োগ ও শিল্পবান্ধব। এর আওতায় রাজস্ব আহরিত হবে। ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প, বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হবে। তিনি বলেন, সৎ ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছেন। দেশীয় শিল্প সুরক্ষা, রফতানিমুখী খাতকে প্রণোদনা দেয়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আমরা কাজ করছি। নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, সেবা খাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নিলে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। যেমন আইনজীবী, চিকিৎসক; তারা তো কোন পণ্য সরবরাহ করছে না। তারা মেধা ও শ্রম ব্যয় করছেন। সেজন্য এ খাতের জন্য ভ্যাট কমানোর আলাদা চিন্তা করা দরকার। মাতলুব আহমাদ বলেন, প্রথমবার আমরা দেখতে পেলাম এনবিআর ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করছেন। এখন আর কারখানার পণ্য দাম ভ্যাট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ক্লিয়ার করে আনতে হবে না। এখন ব্যবসায়ীরা তার পণ্য মূল্য ঘোষণা দেবেন। এর মাধ্যমে এনবিআর-ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা সৃষ্টি হবে। বিশ্বাস তৈরি হলেই ব্যবসায়ীরা এগিয়ে যেতে পারবে। আগে আমরা এদিক ওদিক করে থাকলেও এনবিআর যেহেতু আমাদের বিশ্বাস করছেন তার মর্যাদা দেব। তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে এনবিআর হয়রানি সরিয়ে দিচ্ছেন। আমরা বারবার বলে আসছি ১ টাকা ট্যাক্স দিতে ৩ টাকার হয়রানির শিকার হতে হয়। ভ্যাট অনলাইন চালু হলে সেখান থেকে মুক্তি পাব বলে আশা করছি। সভাপতি বলেন, ৮ লাখের মধ্যে ৩০ হাজার ব্যবসায়ী ভ্যাট দেয় এটা শুনতেও খারাপ লাগে, বলতেও লজ্জা লাগে। আমরা সবাই চায় ৮ লাখ রেজিস্ট্রেশন হলে ৮ লাখই ভ্যাট দেবে। সমস্যা কোথায়? সে সমস্যা সমাধানে ভ্যাট অনলাইন করা হয়েছে। এনবিআর থেকে বারবার বলা হচ্ছে, হয়রানি সরিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু মাঠে এ বার্তা পৌঁছাচ্ছে না। মাঠে হয়রানির বিষয়ে এনবিআরকে সতর্ক থাকতে হবে। ভ্যাট অনলাইন চালু হলে আমাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের দেখা হবে না। তিনি আরও বলেন, ভ্যাট অনলাইন সফল করতে হলে ব্যবসায়ীদের লাগবে। সেজন্য এ আইন আমাদের কাছে যত স্পষ্ট হবে তত সুবিধা হবে। এ আইনের যেসব বিষয় স্পষ্ট নয় তা স্পষ্ট করা দরকার। টার্নওভার সীমা দেড় কোটি করা দরকার। বন্দরে আমরা যে এটিভি (অগ্রিম ব্যবসায়ী ভ্যাট) দিতাম তা ফেরত পেতাম না। সেটা এ আইনে ফেরত পাব সেজন্য এনবিআরকে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে আমরা অনেক টাকা ফেরত পাব। সভাপতি বলেন, এনবিআরের কাছে ব্যবসায়ীরা আজ প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা দেনা। বছরের পর বছর এ মামলা চলছে। এটার সমাধান হওয়ার দরকার, কারণ এটা ক্যান্সারের মতো ব্যবসায়ীদের মাথার ওপর বসে আছে। কিছু যদি মওকুফ করে দেয়া যায় বা একটা নির্দিষ্ট সময় দেয়ায় যায় তবে কিছুটা হলেও তার সমাধান হবে। কারণ নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় সম্পূরক শুল্কের জায়গায় অন্য কিছু করা যায় কি-না তা নিয়ে ভাবার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, স্থানীয় শিল্প সুরক্ষা না হলে বিদেশী বিনিয়োগ এ দেশে আসবে না।
×