ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উগ্র ডানপন্থী দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এফএন) প্রধান মেরি লিপেন প্রতিপক্ষের উদ্দেশে কঠোর মন্তব্য করেছেন। প্রথম দফা ভোটে এগিয়ে থাকা প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাকরনকে ‘মৃগীরোগী, উগ্র ও ইউরোপপন্থী’ বলে অভিহিত করেছেন। লিপেনের মতে ম্যাকরন ‘জিহাদী সন্ত্রাসীদের’ প্রতি সহানুভূতিশীল। খবর গার্ডিয়ান ও এএফপির।
প্রথম দফা ভোটে দফা পিছিয়ে যাওয়ার পর লিপেন ন্যাশনাল ফ্রন্টের প্রধানের পদ থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। ফ্রেঞ্চ টিভিকে লিপেন বলেন, তার দলীয় বিবেচনার উর্ধে থাকা দরকার। একই সঙ্গে তিনি ম্যাকরনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, ম্যাকরন সীমান্ত পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেয়ার পক্ষপাতী। লিপেন বলেন, ফরাসীদের নানা দিক রয়েছে। কিন্তু ম্যাকরন কোন দিক দিয়েই তার দেশপ্রেম প্রমাণ করতে পারেননি। লিপেন সাময়িকভাবে দলীয় প্রধানের পদ ছেড়ে দিয়ে ভোটারদের কাছে এ বার্তাই দিতে চান যে তিনি ফ্রান্সের সব মানুষের পক্ষ হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে চান, পার্টি সূত্রে লা মদে সাময়িকী এ তথ্য জানিয়েছে। সোশালিস্ট ও লে রিপাবলিকানের মতো মূলধারার যেসব মধ্য ডান ও বামপন্থী দল দীর্ঘদিন ফ্রান্সে ক্ষমতায় ছিল এবারের ভোটে তারা সুবিধা করতে পারেনি। তারা এবার ম্যাকরনের পেছনে একজোট হয়েছে। লিপেনের ইইউ ও অভিবাসীবিরোধী জাতীয়তাবাদকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদ বলেছেন দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে তিনি ম্যাকরনকে ভোট দেবেন। ম্যাকরন এক সময় ওলাঁদের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ওলাঁদ বলেন, তিনি লিপেনকে ভোট দেবেন না, কারণ লিপেন একদিকে যেমন ফ্রান্সকে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবেন, তেমনি তিনি ইইউর সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্কে অবনতি ঘটাবেন। একজন উগ্র ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জনগণকে দ্বিধাবিভক্ত করে ফেলবেন। তিনি দেশকে সঙ্কটময় অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারেন বলে ঝুঁকি রয়েছে। এটি এমন ঝুঁকি যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। জবাবে ম্যাকরন টুইটারে ওলাঁদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জনমত জরিপে আভাস পাওয়া গেছে, দ্বিতীয় পর্বের ভোটেও ম্যাকরন স্পষ্ট ফেভারিট। তারপরও জয়ের ব্যাপারে আশা ছাড়তে রাজি নন লিপেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরাও জিততে পারি, আমরাই জিতব।’ ফ্রেঞ্চ টু টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, ফ্রান্স একটি ‘চূড়ান্ত মুহূর্তের’ দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি ২০১১ সালে বাবা জঁ মেরি লিপেনের কাছ থেকে এফএনের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। এর পর আঞ্চলিক নির্বাচনগুলোতে এফএন বড় ধরনের সাফল্য পায়। মেরি লিপেনের নেতৃত্বে দলটি গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের এত কাছাকাছি আসতে পারে। এদিকে প্রথম পর্বের ভোটে ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয়স্থান অর্জনকারী রিপাবলিকান প্রার্থী ফ্রাসোঁয়া ফিলোন সোমবার তার দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এর পর পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ‘বৈধতা’ তার নেই। বৃহস্পতিবার প্যারিসে পুলিশের ওপর চালানো হামলার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রবিবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ৫০ হাজার পুলিশ এবং ৭ হাজার সেনা প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: