ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৭ ও ৮ মে ঢাকায় জেলা ও থানা নেতাদের তলব

কোন্দল মিটিয়ে ফেলতে তৃণমূলকে আওয়ামী লীগের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৫ এপ্রিল ২০১৭

কোন্দল মিটিয়ে ফেলতে তৃণমূলকে আওয়ামী লীগের হুঁশিয়ারি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে কোন ধরনের দ্বন্দ্ব-বিভেদ ও কোন্দল দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এমন কড়া হুঁশিয়ারির মুখে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। জেলাটির বিভিন্ন থানার সাংগঠনিক সমস্যার সমাধানে আগামী ৭ ও ৮ মে ঢাকায় জেলা ও থানা নেতাদের তলব করা হয়েছে। তৃণমূলে দলের মধ্যে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব-বিভেদ নিরসনে বিভিন্ন জেলার নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে যশোর জেলার নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। উল্লেখ্য, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রকাশ্য বিভেদ সৃষ্টি হয়। দ্বন্দ্বের রেশ ধরে গত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আলাদা কর্মসূচী পালন করে। বৈঠকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন ঘটনা যাতে আর না ঘটে এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জবাবে তারা একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা জানতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা। তখন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে শুরু করলে তাদের থামিয়ে দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা একই কর্মসূচী সভাপতি আলাদাভাবে এবং সাধারণ সম্পাদক আলাদাভাবে করার কারণ জানতে চান। জেলার শীর্ষ এই দুই নেতাই নিজ নিজ অবস্থানের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে দুজন নেতাই অঙ্গীকার করেন যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। এরপর যশোরের বিভিন্ন থানার কমিটি অপূর্ণাঙ্গ থাকা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে অনেক জায়গায় সম্মেলন না হওয়ার কারণ জানতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু থানার শীর্ষ নেতারা বৈঠকে না থাকায় তাদের কেন্দ্রে ডেকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ৭ মে ঝিকরগাছা, চৌগাছা, শার্শা ও কেশবপুর এবং ৮ মে অভয়নগর, বাঘারপাড়া, মনিরামপুর, সদর এবং পৌর কমিটিকে ডাকা হয়। এ দুটি বৈঠকে জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট থানা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্যদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে যেখানে দুটি কমিটি রয়েছে সেখানে দ্রুত বসে একক কমিটি করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে জেলার নেতারা জানান, বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাদের একটি বার্তা দিয়েছেন যে, আগামী নির্বাচন শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দেশ ও জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে। দ্বন্দ্ব-কোন্দল, ভুল বোঝাবুঝি এসব ভুলে আগামী নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানা পর্যায়ে যেখানে সম্মেলন হয়নি, সেখানে দ্রুত সম্মেলন করতে নির্দেশ দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেকসহ যশোরের অন্য ৫ এমপি উপস্থিত ছিলেন।
×