ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কোরীয় জলসীমায় ঢুকছে মার্কিন স্ট্রাইক গ্রুপ

প্রকাশিত: ০০:০৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

কোরীয় জলসীমায় ঢুকছে মার্কিন স্ট্রাইক গ্রুপ

অনলাইন ডেস্ক ॥ কোরীয় উপদ্বীপে ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকা পরিস্থিতি নিয়ে এ বার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল চীনও। আমেরিকা, জাপান এবং দুই কোরিয়া-সহ সব পক্ষকে সোমবার সংযত হওয়ার পরামর্শ দিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। তবে উত্তাপ কমার কোনও লক্ষণ এখনও নেই। জাপানের নৌসেনাকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন নৌবহর ইউএসএস কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপ কোরীয় উপদ্বীপের জলসীমায় প্রবেশ করছে বলে খবর। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর ৮৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হবে। এই ধরনের দিনগুলি পালনের অঙ্গ হিসেবে উত্তর কোরিয়া একাধিক বার পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। কিন্তু এ বার তেমন কিছু হলে আচমকা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই পাঁচটি পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং-উন। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণও ঘটিয়ে চলেছেন তিনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া এই সব কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ায় একাধিক বার পিয়ংইয়ং-কে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু কিম থামেননি। তিনি ষষ্ঠ পরমাণু বিস্ফোরণটি ঘটানোর তোড়জোড় করছেন বলে জল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরীয় উপদ্বীপের দিকে যাওয়ার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। সেই নৌবহর কোরীয় জলসীমায় শীঘ্রই ঢুকছে বলে ওয়াশিংটন সূত্রে জানা গিয়েছে। মার্কিন নৌবহরটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জাপানি নৌসেনার দু’টি যুদ্ধজাহাজও। উত্তর কোরিয়াকে চাপে রাখতেই কোরীয় জলসীমার খুব কাছে জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে মার্কিন নৌসেনা। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছেন, তাদের নৌসেনাও এই মহড়ায় অংশ নেওয়ার কথা ভাবছে। উত্তর কোরিয়ার শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির মুখপত্র রডং সিনমুন-এ লেখা হয়েছে, ‘‘আমেরিকার ক্ষিপ্ত হয়ে ছোটাছুটি করা উচিত নয় এবং খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত তাদের সেনা নির্বোধের মতো কার্যকলাপ চালিয়ে গেলে ফলাফলটা কতটা শোচনীয় হতে পারে।’’ কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরীয় উপদ্বীপের দিকে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘চরম বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে রডং সিনমুন-এ আরও লেখা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া দখল করার লক্ষ্যে পরমাণু যুদ্ধ বাঁধানোর ছক কষা হচ্ছে। ঠিক এই পরিস্থিতির মধ্যেই মঙ্গলবার ‘কোরিয়ান পিপলস আর্মি’র ৮৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করতে চলেছে পিয়ংইয়ং। মার্কিন হুঁশিয়ারির তোয়াক্কা না করে কিম জং-উন যদি পরম্পরা অক্ষুণ্ণ রাখতে চান এবং কোনও গণবিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ মঙ্গলবার করেন, তা হলে আমেরিকা সামরিক পদক্ষেপ করতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের মত। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং এই পরিস্থিতিতেই সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রায় গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা এবং দারিদ্রের সঙ্গে যুঝতে থাকা প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া করুণ পরিণতির সম্মুখীন হতে পারে বলে বেইজিং-এর আশঙ্কা। উত্তর কোরিয়া যদি মঙ্গলবার কোনও প্ররোচনামূলক কার্যকলাপ করে এবং আমেরিকা যদি তার জবাবে সামরিক পদক্ষেপ করে, তা হলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলে চিনের আশঙ্কা। তাই প্রেসিডেন্ট চিনফিং-এর বার্তা— চিনের আশা, সব পক্ষই সংযম দেখাবে এবং এমন কোনও কাজ করবে না যাতে কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
×