ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ১২৪ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ১২৪ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে দ্বিগুণেরও বেশি। এক্ষেত্রে মূল প্রকল্প ব্যয় ২০৩ কোটি ৬ লাখ টাকা থেকে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেড়ে প্রকল্পটির মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যয় বেড়েছে ১২৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ বিষয়ে প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এতে বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণে ১৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা বৃদ্ধিসহ মাটির কাজ, জিও টেক্সটাইলের পরিমাণ, নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্তি ইত্যাদি কারণে এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটির নির্মাণ কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের মাধ্যমে ১৯৯৩ সালে শুরু হয়। ওই সময় সড়কটি থানা সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় ফিডার সড়ক হিসেবে নির্মাণের প্রস্তাব ছিল এবং এজন্য ১১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল। তবে সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনায় এটি আলাদা একটি প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য এর পিসিপি ২০০০ সালের জুনে ১৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে একনেক অনুমোদন দেয়। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) ও একনেকের অনুশাসন অনুযায়ী প্রকল্প যাচাই বাছাইয়ের সময় ২০০২-০৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) থেকে প্রকল্পটি বাদ দেয়া হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পটি পুনরায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। স্থানীয় সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকল্পটি ৩টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে কলাতলী হতে ইনানী, দ্বিতীয় পর্যায়ে ইনানী হতে শিল্পখালী এবং তৃতীয় পর্যায়ে শিলখালী হতে টেকনাফ পর্যন্ত। প্রথম পর্যায়ে কলাতলী হতে ইনানী সড়কটির সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ২০০৫ সালে ১২ ডিসেম্বর ৯৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একনেকে অনুমোদন পায়। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ২০০৮ সালে জুনে শেষ হয়। পরবর্তীতে ১৫৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয় যা এর মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। টেকনাফকে কক্সবাজারের সঙ্গে সংযোগ প্রদানের জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের তৃতীয় পর্যায়ে ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সড়কটি উন্নয়নের জন্য ২০৩ কোটি ৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৪ সালের জুলাই হতে ২০১৭ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য মূল প্রকল্পটি ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টম্বর একনেকে অনুমোদন লাভ করে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ প্রকল্পটির কিছু নতুন অঙ্গ অন্তর্ভুক্ত করে এবং কিছু অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি করে ৪৫৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পের ওপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে সংশোধিত প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা, যা অনুমোদিত মূল প্রকল্প হতে ২৫২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বেশি। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, ২০৩ দশমিক ২৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ১ হাজার ৮৩১ দমমিক ৭৮ বর্গমিটার অফিস, রেসিডেন্স, শেড নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ, ১৬ দশমিক ১১ লাখ ঘন মিটার সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, ৩১ দশমিক ৪০ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, ৯৫ দশমিক ৪৮ মিটার আরসিসি ব্রিজ, ৫০৬ মিটার আরসিসি বক্স কালর্ভাট, ৩ হাজার মিটার সসার ড্রেন, ৪৯ হাজার ৬০ বর্গমিটার সিসি ব্লক জিও টেক্সটাইল, ১ হাজার ৭৪০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল এবং ৪৪ হাজার ২৮০টি টেট্রা পড নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারের সঙ্গে টেকনাফের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং ওই অঞ্চলের মৎস্য ও পর্যটন শিল্প বিকাশসহ বাংলাদেশ মায়ানমারের মধ্যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।
×