ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে দুই চেম্বার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়

বাজেট হবে উৎপাদনমুখী

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

বাজেট হবে উৎপাদনমুখী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দেশীয় শিল্প সংরক্ষণ, নতুন শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হবে আসন্ন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে। বাজেট হবে উৎপাদনমুখী এবং বিনিয়োগবান্ধব। এতে রফতানিতে প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে এবং কর অব্যাহতি পাবে সাধারণ মানুষের জীবন স্পর্শকারী পণ্যসমূহ। রবিবার চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় উপরোক্ত প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে ভ্যাট ও এসডি আইন বাস্তবায়ন অনলাইন ভিত্তিতে কার্যকর হবে। নগরীর আগ্রাবাদে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। এছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক কর বিষয়ে অভিমত রাখেন। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম তার বক্তব্যে ব্যক্তিগত বর্তমান করমুক্ত আয়ের সীমা দুই লাখ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকা, মহিলা এবং ৬৫ বছরের উর্ধে তিন থেকে পাঁচ লাখ এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকার পরিবর্তে চার লাখ ৫০ হাজার টাকা, পাবলিকলি ট্রেডেট কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ এবং প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির করহার ৩৫ শতাংশের পরিবর্তে ৩০ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন। তিনি রেফ্রিজারেটর এস্যাম্বলিং ইন্ডাস্ট্রির আমদানিকৃত উপকরণের শুল্ক যৌক্তিকভাবে হ্রাস করা, উৎপাদনমুখী শিল্পে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে বিনিয়োগবান্ধব এসআরও প্রণয়ন এবং চট্টগ্রামে গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার স্থাপনের আহ্বান জানান। চেম্বার সভাপতি নতুন ভ্যাট আইনে করহার ৭ হতে ১০ শতাংশ নির্ধারণ, প্রয়োজনীয় অনলাইন ইনফ্রাস্ট্রাকচার নিশ্চিত করা, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের অব্যাহতি ৫০ লাখ টাকা, টার্নওভার কর নিবন্ধনসীমা ৮০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, মূল্য সংযোজনের হার ২০ শতাংশের পরিবর্তে ১৫ শতাংশ ধরে এর করের হার ৩ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ করার সুপারিশ করেন। তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্যাকেজ ভ্যাট বিবেচনার অনুরোধ জানান। এছাড়া বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্রুততার সঙ্গে বে-টার্মিনাল বাস্তবায়ন, লালদিয়ার চরে খালি কন্টেনার ইয়ার্ড তৈরি করা, গ্যান্ট্রি ক্র্যানের বিকল্প হিসেবে মোবাইল হার্বার ক্র্যান সংগ্রহ করা, বন্দরে স্ক্যানার সংখ্যা বৃদ্ধি করা, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং কনভেয়র বেল্ট স্থাপনের পরামর্শ দেন। এছাড়া বারিক বিল্ডিং হতে বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইওভার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্মাণ, কর্ণফুলী ব্রিজ থেকে মেরিন ড্রাইভ বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত সম্প্রসারণ, চাকতাই-খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারকে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা করতে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালসমূহ সংস্কার, কালভার্ট নির্মাণ, সøুইসগেট নির্মাণে আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানান চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ চিটাগাং চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম, রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ ও এমএ মোতালেব, সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোঃ মাহফুজুল হক মনি, বিজিএমইএ’র পরিচালক কাজী মাহবুব উদ্দিন জুয়েল, বিকেএমই’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, ওম্যান চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, আইসিএবির সাবেক সভাপতি শওকত হোসেন, বাংলাদেশ আয়রন এ্যান্ড স্টিল মিলস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনামুল হক ইকবাল, দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের সালামত আলী, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, মটর পার্টস এ্যান্ড টায়ার-টিউব মার্চেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের আবু তাহের, চিটাগাং মেট্রোপলিটন শপ ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাশেম, বিএসআরএমের ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, চিটাগাং আবাসিক হোটেল মালিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাবিবুর রহমান, ফার্নিচার এ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মাকসুদুর রহমান, ফ্রেশ ফ্রুটস এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের মাহবুব রানা প্রমুখ। এছাড়া চিটাগাং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। এতে আলোচনা করেনÑ মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি আলহাজ খলিলুর রহমান, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুব চৌধুরী, সাহাব উদ্দিন আলম, আবুল বাশার চৌধুরী, মোঃ আবদুল আউয়াল, আবদুচ ছালাম, শফিক উদ্দিন, আমিনুজ্জামান ভূঁইয়া, এমএ মালেক, লিয়াকত আলী চৌধুরী, মোঃ লোকমান হাকিম প্রমুখ।
×