ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরীগঞ্জে গণধর্ষণের পর গৃহবধূকে জবাই

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২৪ এপ্রিল ২০১৭

কিশোরীগঞ্জে গণধর্ষণের পর গৃহবধূকে জবাই

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে গৃহবধূ খালেদা বেগম গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে একই গ্রামে ফজিলা বেগম (২০) নামের আরেক গৃহবধূকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সকালে পুলিশ বাড়ীমধুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচতলার কমনরুম হতে তার লাশ উদ্ধার করে। ওই গৃহবধূ কুটিয়ালপাড়া গ্রামের দিনমজুর বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী ও একই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দিনমজুর ফজলে মাহমুদের মেয়ে। দুই বছর আগে তার বিয়ে হলেও কোন সন্তানাদি নেই। ঘটনার সময় গৃহবধূর বাবা ও স্বামী কাজের জন্য কুমিল্লায় অবস্থান করছিল। এলাকাবাসী জানায়, ফজিলা বেগমের এ ঘটনার আগে গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে একই গ্রামের আজাহারুল ইসলামের অনুপস্থিতির সুযোগে দুর্বৃত্তরা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্তা তার স্ত্রী খালেদা বেগমকে গণধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ওই মামলায় পুলিশ কূলকিনারা করতে পারেনি। এদিকে ফজিলা বেগম হত্যার ঘটনায় পুলিশ ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। তবে এলাকাবাসী অভিযোগ তুলে বলে যাকে আটক করা হয়েছে সে জড়িত নয়। যারা জড়িত তারা পালিয়ে গেছে। নিহত ফজিলার বড় বোন লতিফা বেগম জানান তিনিসহ তার ছোট বোন ফজিলা বেগম গত তিন দিন হয় স্বামীর বাড়ি হতে বাবার বাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে বেড়াতে এসে অবস্থান করছে। তার বাবা ও ফজিলার স্বামী কাজে কুমিল্লায় গেছে। তাদের বাবার ১০০ শতক জমি জোর করে দখল করে নেয় ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের খয়রাত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আনিছার রহমান ও মোখছার রহমান মোখলে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে খয়রাত হোসেনে স্ত্রী মনো বেগম এসে ফজিলাকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর হতে ফজিলাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। মনো বেগমকে, ফজিলা কোথায় জানতে চাইলে সে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানালেও ফজিলাকে সারা রাত খুঁজে পাওয়া যায়নি। রবিবার সকালে বাড়ি হতে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে স্কুলে ফজিলার লাশ পড়ে আছে খবর ছড়িয়ে পড়লে মনো বেগমসহ তার স্বামী খয়রাত হোসেন ও অন্যরা পালিয়ে যায়। স্কুল চত্বরে ফজিলার লাশ দেখতে এলাকার শত শত নারী পুরুষ ভিড় করে। এ সময় স্কুলটি ছুটি ঘোষণা করা হয়। এলাকাবাসী জানায়, ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের খয়রাত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, আনিছার রহমান ও মোখছার রহমান মোখলে সন্ত্রাসী প্রকৃতির মানুষ। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। তারা জমি দখলের নামে মানুষের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকলেও পুলিশ তাদের কোন দিন গ্রেফতার করতে পারেনি। সহকারী পুলিশ (সার্কেল) জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লাশের সুরতহাল তৈরি ও উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে অন্য কোথাও গণধর্ষণের পর হত্যা করে বাড়ীমধুপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
×